আর মাত্র এক সপ্তাহ পর ঈদুল আজহা। আর ঈদে মাংস সংরক্ষণের কাজটাকে খুব সহজ করে দিয়েছে ফ্রিজ বা রেফ্রিজারেটর। তবে অনেক বাসাতেই ফ্রিজ নেই। আবার যান্ত্রিক ত্রুটি কিংবা বিদ্যুৎ–বিভ্রাটে ফ্রিজ যদি অচল থাকে তখন মাংস নিয়ে অনেকেই বিপাকে পরেন। তবে এর সমাধান আছে। সঠিক নিয়মে মাংস সংরক্ষণ করলে ফ্রিজ ছাড়াই মাংস রাখতে পারবেন কয়েক মাস।
মাংস সংরক্ষণ করার উপায় এবং কতদিন সেই মাংস খাওয়া যাবে সে বিষয়ে বিবিসি বাংলাতে কথা বলেছেন পুষ্টিবিদ চৌধুরী তাসনিম। তিনি বলেন, মাংস উচ্চ তাপমাত্রায় জ্বাল দিয়ে সংরক্ষণ করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে ছয় ঘণ্টা পর পর মাংসটি জ্বাল দিতে হবে, নাহলে জীবাণু সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে। এছাড়াও আরও কিছু উপায়ে মাংস সংরক্ষণ করা যায় জানান এই পুষ্টিবিদ।
লেবু ও লবণের সাহায্যে মাংস সংরক্ষণ:
এজন্য মাংসগুলো মাঝারি আকারে কেটে হালকাভাবে ছেঁচে নিতে হবে। এরপর লবণ ও লেবুর রসে ঘণ্টা-খানেক ডুবিয়ে রাখার পালা, যেন মাংসের ভেতরে ভেতরে সেটা পৌঁছায়। এভাবে মাংস কয়েকদিন পর্যন্ত ভাল রাখা যায়।
মাংস ভেজেও সংরক্ষণ:
মাংস কেটে পরিষ্কার করে আদা বাটা, রসুন বাটা পেঁয়াজ বাটা দিয়ে মাংসটি কিছুক্ষণ ম্যারিনেট করে নিন। এরপর গরম ডুবো তেলে মসলাসহ মাংসগুলো ভেজে এবং তেল ছেঁকে নিয়ে তা সংরক্ষণ করতে হবে। এর পর একদিন অন্তত অন্তত মাংসগুলো উচ্চতাপে গরম করতে হবে। এভাবে মাংস ১৫ থেকে ২০ দিন পর্যন্ত ভাল থাকে।
তিন-চার মাস মাংস সংরক্ষণ:
এছাড়া আরও একটি উপায় আছে যাতে ফ্রিজ ছাড়াই মাংস তিন থেকে চার মাস রাখা সম্ভব। এর জন্য মাংস চর্বিসহ বড় টুকরা করতে হবে। অল্প পানি, সামান্য তেল, লবণ আর হলুদ মাংসসহ হাঁড়িতে দিতে হবে দ্বিতীয় ধাপে সঙ্গে সামান্য আদাকুচি, দুই-তিন টুকরা করে তেজপাতা ও দারুচিনি এবং দুই-তিনটি করে এলাচি ও লবঙ্গ দিন। অল্প আঁচে জ্বাল দিতে হবে। মাংস সব দিকে সমান জ্বাল হচ্ছে কিনা সে দিকে নজর দিতে হবে। ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিন। মাঝেমধ্যে নেড়েচেড়ে উল্টেপাল্টে দিলে ভালো হবে।
প্রথম ৮-১০ দিন তিন বেলা করে জ্বাল দিতে হবে। পরের ৮-১০ দিন দুই বেলা করে জ্বাল দিলেই হবে। এরপর থেকে রোজ একবার করে জ্বাল দিতে হবে। জ্বাল দিন মৃদু মাঝারি আঁচে, ঢেকে নিয়ে। একইভাবে মাঝেমধ্যে উল্টেপাল্টেও দিন। ফ্রিজ ঠিক হয়ে গেলে চাইলে এই অবস্থাতেই ডিপ ফ্রিজে তুলে রাখা যাবে। তবে এই মাংস ডিপ ফ্রিজে তুলে রাখার দুই-তিন মাসের মধ্যেই খেয়ে নেওয়া ভালো বলে জানান পুষ্টিবিদ।
বিভিন্ন পদ্ধতি ভেদে মাংস বিভিন্ন সময় সংরক্ষণ করা যায়। ফ্রিজ হোক কিংবা ফ্রিজ ছাড়া মাংস রান্না করার পর সেটা তাড়াতাড়ি খাওয়ার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদ।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর