হাইকোর্টের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের রায়ের প্রতিবাদে ফের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
রোববার (৯ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে কলাভবন, মলচত্বর, ভিসি চত্বর, টিএসসি হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সমাবেশে মিলিত হয়।
ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ফাহিম বলেন, “২০১৮ সালে আমরা কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলন করে জয়ী হয়েছিলাম। প্রধানমন্ত্রী প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির কোটা সংসদে বাতিল করেছিলেন। কিন্তু হাইকোর্টের নেওয়া এই সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীদের স্বপ্নকে ভেঙে দিয়েছে। মেধার ভিত্তিতে দেশ গড়ার স্বপ্নকে ধূলিসাৎ করেছে। সাম্য ও সামাজিক ন্যায়বিচার ভঙ্গ করেছে। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যে সাম্য গড়েছিল তা ভেঙে দিয়েছে।”
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী রিফাত রসিদ বলেন, “আমাদের সংবিধানে সরকারি চাকরিতে সমতা নিশ্চিতের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু আজকে কোটার মাধ্যমে মেধাবীদের অবহেলা করা হচ্ছে। এই ছাত্রসমাজ কোনো দাবি আদায়ে যতবারই রাস্তায় নেমেছে সেই দাবি আদায় করে রাজপথ ছেড়েছে। আজকেও আমরা কোটা পুনর্বহালের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছি। যদি এই বৈষম্যমূলক কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত বাতিল করা না হয় তাহলে শিক্ষার্থীরা এই রাজপথ ছাড়বে না। প্রয়োজনে রক্ত ঝরবে, রাজপথে লাশ পড়বে তবুও আমরা এই দাবি আদায় করে ছাড়ব ইনশাআল্লাহ।”
ঢাবি শিক্ষার্থী তামান্না আক্তার বলেন, “যেখানে প্রধানমন্ত্রী সংসদে কোটার বিরুদ্ধে কথা বলেছিলেন, কোটা প্রথা বাতিলের কথা জানিয়েছিলেন, সেখানে হাইকোর্ট আমাদের মেধাকে অবমাননা করে পায়ের নিচে পিষ্ট করেছে। আমি নারী হয়ে বলছি, আমি কোনো কোটা চাই না। আমরা মেধার মাধ্যমে স্মার্ট দেশ গড়তে চাই। আপনারা মেধাবীদের হাতে দেশ তুলে দিন, এই মেধাবীরাই দেশকে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলবে।”
বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে শিক্ষার্থীদের একটি দল সুপ্রিম কোর্টের অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে লিখিত অভিযোগ দিতে যান। এসময় শিক্ষার্থীরা ৩০ জুনের মধ্যে দাবি মেনে না নিলে লাগাতার আন্দোলনের ঘোষণা দেন।
এসময় শিক্ষার্থীরা ‘সংবিধানের/মুক্তিযুদ্ধের মূলকথা, সুযোগের সমতা’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘কোটা প্রথা, বাতিল চাই বাতিল চাই’, ‘কোটা প্রথার বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’- ইত্যাদি স্লোগান দেন।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর