ঢাকার বারডেম হাসপাতালের এক নার্সকে ধর্ষণের অভিযোগে বরগুনার তালতলীর কচুপাত্রা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এবিএম জাকারিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার (১০ জুন) দুপুরে তাকে ঢাকা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৪ সোপর্দ করা হলে বিচারক জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বরগুনার তালতলী উপজেলার কচুপাত্রা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এবিএম জাকারিয়া ঢাকার বারডেম হাসপাতালে এক নার্সকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে। পরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ওই নার্সের সাথে শারীরিক সম্পর্ক করেন। এতে সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে যায়। এরপর জোরপূর্বক ওষুধ খাইয়ে ওই অন্তঃসত্ত্বা নারীর ভ্রন হত্যা করে। এরপর থেকে ওই নার্সের সঙ্গে সকল যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।
এতে ক্ষুব্ধ হয়ে চলতি বছরের ১৯ মে ওই নার্স ঢাকা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৪ স্কুল শিক্ষক এবিএম জাকারিয়ার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। আদালতের বিচারক শাহরিয়ার কবির মামলাটি আমলে নিয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ওসিকে এজাহার হিসেবে গণ্য করার নির্দেশ দেন।
আদালতের আদেশ মতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ মামুনুর রশিদ মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করেন। গতকাল রবিবার রাতে কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ আমতলী থানা পুলিশের সহায়তায় অভিযান চালিয়ে শিক্ষক এবিএম জাকারিয়াকে আমতলী পৌর শহরের একে স্কুল এলাকার একটি বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ সোমবার দুপুরে পুলিশ জাকারিয়াকে ঢাকা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে প্রেরণ করেছেন। আদালতের বিচারক শাহরিয়ার কবির আসামি জাকারিয়ার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ধর্ষক এবিএম জাকারিয়া তালতলী উপজেলার কড়ইবাড়িয়া ইউনিয়নের হুলাটানা গ্রামের সেকান্দার আলী হাওলাদারের পুত্র।
ধর্ষণের শিকার হওয়া ওই নারী বলেন, এবিএম জাকারিয়া বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আমাকে বেশ কয়েকবার ধর্ষণ করেছে। এতে আমি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে যাই। পরে আমাকে জোর করে ঔষধ খাইয়ে ভ্রণ হত্যা করেছে। এরপর থেকে আমার সঙ্গে সকল যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। আমি লম্পট এবিএম জাকারিয়ার শাস্তি দাবি করছি।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার এসআই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, আমতলী থানা পুলিশের সহায়তায় একটি ধর্ষণ মামলার আসামি এবিএম জাকারিয়াকে আমতলী পৌর শহরের একটি বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ মামুনুর রশিদ বলেন, ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের একটি ধর্ষণ মামলায় স্কুল শিক্ষক এবিএম জাকারিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালতের বিচারক তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশে দেন।
তালতলী উপজেলা শিক্ষা অফিসার নজরুল ইসলাম বলেন, এবিএম জাকারিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বরগুনা জেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে প্রতিবেদন দিয়েছি। তিনিই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবেন।
বরগুনা জেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুল মুকিত মোল্লা বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। উপজেলা শিক্ষা অফিসারের প্রতিবেদন পেলেই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর