টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশের বিপক্ষে শ্বাসরুদ্ধকর এক ম্যাচে চার রানের জয় নিয়ে সুপার এইটে খেলা নিশ্চিত করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। নিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উইকেট ছিল আগের ম্যাচগুলোর মতোই, রান করা ছিল কষ্টকর এবং ব্যাটারদের সাবধানী ব্যাট করতে হয়েছে।
তবুও ১১৩ রানের লক্ষ্যটা ইনিংসের পুরোটা সময় মনে হচ্ছিল বাংলাদেশ অতিক্রম করে ফেলবে। কিন্তু শেষ চার ওভারে ম্যাচ দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে চলে যায়। নিয়ামক হিসেবে কাজ করে আম্পায়ারের বেশ কয়েকটি বিতর্কিত সিদ্ধান্ত।
১৭তম ওভারে বার্টম্যানের বল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের পায়ে লেগে ফাইন লেগ দিয়ে বাউন্ডারি পার হয়ে যায়, দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটাররা আপিল করার সাথে সাথেই আঙ্গুল তোলেন আম্পায়ার। এতে করে লেগ বাই থেকে সম্ভাব্য চার রান বাতিল হয় বাংলাদেশের। রিয়াদ সাথে সাথে রিভিউ নিলে দেখা যায় লেগ স্ট্যাম্পের অনেক বাইরে দিয়ে যেত বলটা। রিয়াদ রিভিউ নিয়ে বাঁচলেও আম্পায়ার আউট দেয়ার কারণে নিয়ম অনুযায়ী বাংলাদেশ একটা বাউন্ডারি পায়নি এবং বাংলাদেশ হেরেছে চার রানে।
ইএসপিএন ক্রিকইনফোর বিশ্লেষণে ভারতের সাবেক ক্রিকেটার ও জনপ্রিয় ধারাভাষ্যকার সঞ্জয় মাঞ্জরেকার এ নিয়ে নিজের ভাবনা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এই সব ক্ষেত্রে পুরো বলের অ্যাকশন শেষ হয়ে যাওয়ার পর আম্পায়ার নিজের রায় জানাতে পারেন, এতে করে ওই বলের রান বাতিল হবে না।
এই আলোচনায় তামিম ইকবালও একমত হন সঞ্জয়ের সাথে যদি ব্যাটার নট আউট থাকেন এবং সেটা চার হয় এটা রান দেয়া উচিৎ। তামিম ইকবাল বলেন, আইসিসি এটা নিয়ে ভাবতে পারে, এটায় বদল আনা দরকার।
বাজে আম্পায়ারিং নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে নিজের হতাশা প্রকাশ করেন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা। ম্যাশ বলেন, বাজে আম্পায়ারিং নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই, তবে আমরাও পুওর অ্যাপ্লিকেশন করেছি। এই ম্যাচকে যত দ্রুত ব্রেইন থেকে ডিলিট করা যায়, ততোই ভালো হবে সামনের দু’টা ম্যাচের জন্য।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ (সাবেক টুইটার) নিজের মতামত জানান সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার ওয়াসিম জাফর। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সমর্থকদের জন্য খারাপ লাগছে। রিয়াদের লেগ বিফোরটি আউট ছিল না, সেটি থেকে আসা চার রানও বাতিল হয়ে গেল এমন এক সিদ্ধান্তে।
বাংলাদেশ এবং দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচের পর ক্রিকবাজের আলোচনায় নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন ক্রিকেট বিশ্লেষক এবং ধারাভাষ্যকার সাইমন ডুল। এই কিউই বলেন, আমি বলতে চাইছি, যেভাবে এই পদ্ধতি কাজ করছে, সেখানে কিছু একটা পরিবর্তন অবশ্যই আনতে হবে। কারণ এটা বিশ্রি একটা ভুল। একেবারেই বাজে সিদ্ধান্ত। কোনোভাবেই বলটা স্ট্যাম্পে আঘাত করতো না। একেবারে বন্দুকধারীর মত দ্রুতগতিতে আম্পায়ার হাত তুলেছে। এটা বাজে সিদ্ধান্ত ছিল। তারচেয়ে বড় কথা, লেগবাইয়ে চার রান হওয়া দরকার ছিল।
পুরো ম্যাচ জুড়েই বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত ছিলো প্রশ্নবিদ্ধ। দু’টি নিশ্চিত ওয়াইডের পাশাপাশি সব মিলিয়ে ৬ রান বঞ্চিত হয় বাংলাদেশ।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর