কক্সবাজারের রামু উপজেলার কলঘর বাজারে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মো. শোয়াইব (১৫) নামের এক কিশোরকে অপহরণের চেষ্টা চালিয়েছে একদল দুর্বৃত্ত। এসময় প্রাণ বাঁচাতে চিৎকার চেঁচামেচি করায় তাকে বেধড়ক পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে অস্ত্রধারীরা।
গত ০৮ জুন রাত সাড়ে ৯ টার দিকে চাকমারকুল ইউনিয়ন পরিষদের প্রবেশ মুখে কলঘর বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী কিশোর উপজেলার কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের পশ্চিম পাড়া গ্রামের আবুল কালাম ও জুহুরা খাতুন দম্পতির ছেলে। ওই কিশোর চাকমারকুল ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন তার খালার বাড়িতে বেড়াতে এলে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে অপহরণের চেষ্টা চালায় অস্ত্রধারীরা।
এই ঘটনায় তার মা জুহুরা খাতুন বাদী হয়ে মিজান (২৭) নামের এক যুবককে প্রধান আসামি করে চারজনের নাম উল্লেখ করে রামু থানায় একটি এজাহার জমা দিয়েছেন।
ভুক্তভোগী কিশোরের মা জুহুরা খাতুন বলেন, গত ৮ জুন আমি ও আমার ছেলে শোয়াইব চাকমারকুল ইউনিয়নের কলঘর বাজার এলাকাস্থ ছালেহ আহমদ পাড়ায় আমার ছোট বোন তফুরা বেগমের বাড়িতে বেড়াতে যাই। সন্ত্রাসীরা আগে থেকেই জায়গা-জমি সংক্রান্ত বিষয়ে আমার বোনের পরিবারের লোকজনদের সাথে শত্রুতা করে আসছিল। একইদিন রাতে আমার ছেলে শোয়াইবকে কিছু বাজার করার জন্য পার্শ্ববর্তী কলঘর বাজারে পাঠালে ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের সামনে রাস্তার উপর স্থানীয় আবু তালেব ও তার ছেলে মিজানের নেতৃত্বে সালাহ উদ্দিন, জসিম উদ্দিনসহ একদল অস্ত্রধারী আমার ছেলেকে টানা হেঁচড়া করে একটি টমটম গাড়িতে তুলে জোরপূর্বক অপহরণের চেষ্টা চালায়। এসময় আমার ছেলে প্রাণ বাঁচাতে চিৎকার চেঁচামেচি করলে বেধড়ক পিটিয়ে সজোরে গলা টিপে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে। এসময় তার চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে তাকে মাটিতে ফেলে চলে যায়। এসময় তার কাছে থাকা টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। খবর পেয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
কাশেম, নাজিম উদ্দিন, মোবারকসহ একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ছেলেটিকে হঠাৎ একদল লোক দা, ছুরি, লোহার রডসহ ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি পেটাতে পেটাতে তাকে একটি টমটমে তুলে নিয়ে যেতে চেষ্টা করে। এসময় তার চিৎকার শুনে আমরা এগিয়ে এলে অস্ত্রধারীরা পালিয়ে যায়।
স্থানীয়রা জানান, কলঘর বাজারে চিহ্নিত এইসব সন্ত্রাসীরা নতুন আতঙ্কের নাম হয়ে দাড়িয়েছে। তাদের নেতৃত্বে নতুন করে এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু হয়েছে। তারা প্রকাশ্যে অস্ত্রবাজি করলেও স্থানীয় প্রশাসন রহস্যজনক কারণে চুপ রয়েছে। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক আরও বাড়ছে। এই সন্ত্রাসী বাহিনীর কারণে একের পর এক অঘটন ঘটছে। মানুষ সবসময় আতঙ্কে থাকে কখন তাদের ওপর হামলা হয় বা তুলে নিয়ে নির্যাতনের শিকার হতে হয়।
তাদের মতে, অবৈধ অস্ত্রধারী বাহিনীটি দীর্ঘদিন থেকে এলাকায় প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালিয়ে আসছে। এরই অংশ হিসেবে সম্প্রতি গভীর রাতে তফুরা নামের এক নিরীহ নারীর বাড়িতে হামলা চালানোর ঘোষণা দেয়। ওইদিন রাতে এইসব সন্ত্রাসীরা আগ্নেয়াস্ত্র, টেঁটা, বল্লম, রামদা, চাপাতি, চায়নিজ কুড়ালসহ বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে ওই নারীর বাড়িতে হামলা করে। পরে র্যাব পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্তদের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি।
জানতে চাইলে রামু থানার ওসি আবু তাহের দেওয়ান বলেন, এই ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগটি তদন্ত করে আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর