বাঘাইছড়ির বাঘাইহাট এলাকায় সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলিতে শান্তি এক্সপ্রেসের এক সুপারভাইজার নিহত হয়েছেন। নিহত সুপারভাইজারের নাম মো. না ইম (৩৫)। সে খাগড়াছড়ির লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার জুর্গাছড়ি গ্রামের মৃত নজরুল ইসলামের সন্তান। এ ঘটনায় দুজন আহত হয়েছে। তারা হলেন চিক্কোমনি চাকমা (৩০) ও সোনামনি চাকমা (২৮)।
মঙ্গলবার (১৮ জুন) বিকালে বাঘাইহাট এলাকায় সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলিতে না ইম আহত হলে দীঘিনালা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পথে সে মারা যায়।
নিহত মো. না ইম ৭ বোনের একমাত্র ভাই। সে ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট। এক বছর আগে বিয়ে করেন নাই ম। তার স্ত্রী ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বলে জানা গেছে। তিনি ৬-৭ বছর ধরে শান্তি এক্সপ্রেসের সুপারভাইজার হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। কয়েক বছর আগে তার বাবাও মারা যায়। নাই মের মৃত্যুতে বার বার মূর্ছা যাচ্ছে মা। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তির মৃত্যুতে পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
নিহত নাই মের খালাত ভাই মো. জাহিদ ড্রাইভার বলেন, 'আমার নিরপরাধ ভাইটা সন্ত্রাসীদের গুলিতে মারা গেল। সে আমার খালার একমাত্র ছেলে। নাই মের বাবা মারা গেছে অনেক আগে। তার স্ত্রীও অন্তঃসত্ত্বা। সে ছিল পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। এ অবস্থায় পুরো পরিবার অনিশ্চয়তায় পড়ে গেছে। নাই মের মৃত্যুতে আমার খালা বার বার বেহুঁশ হয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয়রা জানায়, গত ৯ জুন বাঘাইছড়ি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জেএসএস এমএন লারমা ও ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক এর সদস্যরা বাঘাইহাট বাজারে অবস্থান নিলে উত্তেজনা দেখা দেয়। এ পরিস্থিতি পরবর্তীতে এলাকায় অসন্তোষ সৃষ্টি করে। এক পর্যায়ে কয়েকশত এলাকাবাসী সংঘবদ্ধভাবে সন্ত্রাসী অবস্থান করার স্থান ঘেরাও করতে গেলে সন্ত্রাসীরা গুলি ছুড়ে। তখন একটা গুলি এসে শান্তি পরিবহনের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা সুপারভাইজার নাই মের শরীরে বিদ্ধ হয়। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
সাজেক থানার অফিসার্স ইনচার্জ মো. আবুল হাসান বলেন, 'গুলিবিদ্ধ সুপারভাইজার নাই মকে দীঘিনালা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় এক দল আরেক দলকে দায়ী করছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ চলমান রয়েছে।'
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর