ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি বাড়ায় সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতির শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এরইমধ্যে জেলার ৬৯টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভার প্রায় পোনে চার লাখ মানুষ বন্যাক্রান্ত হয়েছেন। আশ্রয় কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছেন প্রায় ১২ হাজার ৪৩৯ জন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ঈদের আগের দিন থেকেই পানি বাড়তে শুরু করে। এর মধ্যে ঈদের দিন ও ঈদের পরদিন পাহাড়ি ঢল ও বর্ষণে পানি আরো বৃদ্ধি পায়। প্লাবিত হয় নতুন নতুন এলাকা। ছাতক ও দোয়রাবাজার উপজেলাসহ সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা প্লাবিত হয়। জেলা শহরের প্রায় ৮০ ভাগ এলাকা প্লাবিত হয়।
এদিকে গতকাল মঙ্গলবার (১৮ জুন) রাতে সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানান, ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি বাড়ায় সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতির শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
তিনি আরও জানান, সুনামগঞ্জের ষোলগড় পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৬০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগে সুরমা নদীর পানির গতি বেশি ছিল। এছাড়া ছাতক পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি ও তাহিরপুর উপজেলার যাদুকাটা নদীর পানির গতি আগের চেয়ে কমেছে। রাত ১১টার পর থেকে বৃষ্টিপাত বাড়বে। সেইসঙ্গে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে।
জানা গেছে, ইতোমধ্যে সুনামগঞ্জ সদরে ৫ হাজার, বিশ্বম্ভরপুরে ২২ হাজার, শান্তিগঞ্জে ১৫ হাজার, জগন্নাথপুরে ৩৭ হাজার ৩১০, শাল্লায় ১১৭, দিরাইয়ে ৭৮ হাজার ২৫০, জামালগঞ্জে ১২ হাজার ৬৭০, তাহিরপুরে ১ লাখ ৪০ হাজার, ছাতকে ২ লাখ এবং দোয়ারাবাজারে ৫০ হাজার লোকজন বন্যাক্রান্ত হয়েছে।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী জানান, বন্যার্তদের জন্য ৫৩১টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত আছে। এর মধ্যে ১২ হাজার ৪৩৯ জন বন্যার্ত আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। তিনটি পৌরসভা ৬৯টি ইউনিয়ন বন্যাকবলিত হয়েছে। প্রশাসন বন্যার্তদের জন্য প্রতি উপজেলায় ত্রাণ, শুকনো খাবারসহ সরকারি সহায়তা পাঠিয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদা বলেন, গতকাল দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত সুরমার পানি কমেছে ২০ সেন্টিমিটার। দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত সুরমার পানি বিপৎসীমার ৮.৪০ মিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছিল। তবে বুধবার সকাল ৬টায় সুরমার পানি বিপৎসীমার ৮.২০ মিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে। তবে রাত থেকে এখন পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
বাঁধন/সিইচা/সাএ
সর্বশেষ খবর