উজানের ঢল ও টানা বৃষ্টির কারণে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তিস্তার ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে পানি বিপদসীমা অতিক্রম না করলেও পানি বৃদ্ধি পেয়ে তিস্তা নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে দূর্ভোগের সৃষ্টি করেছে। এসব এলাকায় তলিয়ে গেছে ধান, বাদামসহ নানা ধরনের ফসলের ক্ষেত এবং গ্রামীণ রাস্তাঘাট। এতে চলাচলে দূর্ভোগ সৃষ্টি এবং খাবারের জন্য বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। নদীর পানি ধারণ ক্ষমতা কমে আসায় অল্প পানিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত ও বন্যার সৃষ্টি হয় হলেও নদী খনন বা তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়া হয় না দাবি স্থানীদের।
বুধবার (১৯ জুন) বিকেল ৩ টায় লালমনিরহাটের হাতিবান্ধায় অবস্থিত তিস্তার ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫১.৮৪ মিটার। যা বিপৎসীমার মাত্র ৩১ সেন্টিমিটার নিচে। এর আগে সকাল ৬ টায় ব্যারাজ পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫১.৯৫ মিটার। যা বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে পানি বিপদসীমা অতিক্রম না করলেও তিস্তা নদীতে পলি পড়ে পানি ধারণ ক্ষমতা কমে আসায় অল্প পানিতে লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা গোবরধন, বারোঘরিয়া, সদর উপজেলার বাগডোরাসহ বেশ কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
এসব এলাকা ঘুরে দেখা গেছে নদীর পানি প্রবেশ করায় তলিয়ে গেছে কৃষকের ধান, বাদামসহ নানাজাতের ফসলের ক্ষেত। এছাড়া নিম্নাঞ্চলের রাস্তাঘাটে পানি জমায় চলাচলেও পোহাতে হচ্ছে চরম দূর্ভোগ। গোবরধন এলাকার বাসিন্দা আব্দুল আউয়াল বলেন, গতদুদিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে। তাছাড়া নদীর পানি বাড়ছে তাই আমাদের এলাকায় পানি ঢুকেছে। এতে রান্নাকরা, চলাফেরাসহ নানা সমস্যা হচ্ছে। একই এলাকার মুদি ব্যবসায়ী জোবায়দুল ইসলাম বলেন, এলাকা নিচু হওয়ায় রাস্তাগুলোও নিচু তাই অল্প পানিতে বন্যা হয় আর রাস্তা তলিয়ে যায়। বারোঘরিয়ার স্কুল শিক্ষার্থী শাহজালাল বলেন, ঈদের ছুটিটাও শান্তিতে কাটাতে পারলাম না। বাড়িতে ও রাস্তায় পানিতে ডুবছে। কোনো আত্মীয় আসেনি আর আমরা কোথাও যেতে পারিনি।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার রায় বলেন, টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে তিস্তাসহ লালমনিরহাটের সবকটি নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তিস্তা নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তবে পানি দ্রুত নেমে যাবে। নদীতে পলি পড়ে পানি ধারণ ক্ষমতা কমে আসায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে বলেও জানান তিনি। তিনি আরো বলেন, পানি কমে গেলে কয়েকটি পয়েন্টে ভাঙ্গন দেখা দিতে পারে। নদী ভাঙ্গন ঠেকাতে জরুরি আপদকালীন কাজ হিসেবে জিও ব্যাগ ফেলা হবে।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর