• ঢাকা
  • ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • শেষ আপডেট ৩ ঘন্টা পূর্বে
সোহেল রানা
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১৯ জুন, ২০২৪, ০৮:৪০ রাত
bd24live style=

সিরাজগঞ্জে ওয়াকশনের নামে কোটি টাকার মালামাল লুট, খুড়িয়ে চলছে মিল

ছবি: প্রতিনিধি

সিরাজগঞ্জের ওয়াকশনের নামে জাতীয় জুট মিলের কোটি কোটি টাকার মালামাল লুট করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে বিজেএমসি ও রশিদ গ্রুপের কর্মকর্তা স্থানীয় বাসিন্দা সুমন হোসেনের মাধ্যমে মেশিনের নতুন নতুন যন্ত্রপাতি খুলে নিয়ে অকেজো মালামাল দেখিয়ে বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা লুটে নিচ্ছে।

এছাড়াও মিলটিতে মাত্র ২শতাধিক শ্রমিক কাজ করলেও প্রায় ১ হাজার মানুষ কর্ম করছেন উল্লেখ করে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে প্রতিবেদন দাখিল করে প্রতারণা করারও অভিযোগ রয়েছে। এমনকি পাট, তেল ও সরঞ্জামাদির অভাবে মাঝে-মধ্যে মিল বন্ধ থাকছে। যন্ত্রাংশের অভাবে অনেক মেশিন বন্ধ থাকায় খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে মিলটি।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, ২০০২ সালের ২রা জুলাই রাষ্ট্রীয় পাটকল জাতীয় জুট মিলস লিঃ শর্ত সাপেক্ষে রশিদ গ্রুপকে লিজ প্রদান করেন। অধিক পরিমাণ শ্রমিকের কর্মসংস্থানের নিশ্চিত করার শর্তে দুই বছর ভাড়াও মওকুফ করা হয়।

অথচ দুই বছর যাবত মিলটি খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে। মিলে কখনো পাট থাকে না, কখনো তৈল থাকে না। মেশিনের যন্ত্রাংশ নষ্ট হলেও ক্রয় না করে মেশিনগুলো অকেজো হিসেবে ফেলে রাখা হয়। কখনো দুইশ শ্রমিক, কখনো তিনশ শ্রমিক দিয়ে কাজ করা হলেও সরকারি প্রতিবেদন ১ হাজারের বেশি শ্রমিক কাজ করছে বলে দেখানো হচ্ছে। মিলের এরিয়া অপরিষ্কার থাকায় সাপ-পোকা মাকড়ের ভরপুর হয়ে গেছে। শ্রমিকদের মেডিক্যালের কোন ব্যবস্থা নেই।

শ্রমিকদের মাত্র ২৬০-৩০০ টাকা মজুরী দেয়া হচ্ছে। এতে শ্রমিকরা অর্ধাহারে জীবনযাপন করছে। শুধু তাই নয় লিজ নেয়ার সময় যে-সব যন্ত্রপাতি চালু ছিল সেগুলোর অর্ধেকে এখন চালু নেই।

যন্ত্রাংশগুলো খুলে খুলে ওয়াকশনের নামে বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে। মিলটি যখন চালু ছিল তখন ইটলার মেশিন চালু ছিল ২টি, বর্তমানে একটি চালু রয়েছে। ব্যাচিং বিভাগে মেশিন রানিং ছিল ব্রেকারফিনিসার, টিচার কাডসহ ৩৬টি, বর্তমানে মাত্র সাতটি। বাকী মেশিনগুলো থেকে স্পেয়ার খুলে নেয়ায় অকোজো রয়েছে। ড্রই বিভাগে রানিং ছিল ৫২টি, বর্তমানে চালু রয়েছে ১২টি, বাকী মেশিনগুলো থেকে পার্টস খুলে নেয়ায় অকেজো রয়েছে।

স্পিনিং মেশিন চালু ছিল ৮১টি, বর্তমানে চালু রয়েছে মাত্র ২৩টি। যন্ত্রাংশ খুলে নেয়ায় সব অকেজো রয়েছে। ওয়াইন্ডিং বিভাগে মেশিন ছিল ১৪টি। বর্তমানে চালু রয়েছে মাত্র ৮টি। বাদবাকী মেশিনগুলো যন্ত্রাংশ খুলে বিক্রি করায় অকেজো রয়েছে। তাঁত বিভাগে মেশিন ছিল ৫০০টি। বর্তমানে চালু রয়েছে মাত্র ৫০টি। বাদবাকীর যন্ত্রাংশ নষ্ট দেখিয়ে খুলে নিয়ে ওয়াকশনে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে।

এছাড়াও ফিনিসিং বিভাগের অধিকাংশ মেশিন নষ্ট ও অকেজো রয়েছে। রশিদ গ্রুপ মিলটি আলেয়া জুট মিল নামে চালু করার পর থেকে বিজেএমপির কর্মকর্তার যোগসাজশে মেশিনের সকল যন্ত্রাংশ লিজের নামে বিক্রি করে দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। শ্রমিকরা অবিলম্বে মিলটি রক্ষায় সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

মিল শ্রমিক মাহতাব আলী ও আলমগীর হোসেন অনেকে জানান, বিজেএমসি থেকে রশিদ গ্রুপ মিলটি নেয়ার পর প্রায় এক বছর ভালোই চলছিল। এক বছর পর থেকে মিলে লুটপাট শুরু হয়।

দেখা যায়, মেশিনের কোন যন্ত্রাংশ নষ্ট তা খুলে নিয়ে বাইরে স্তূপ করে রাখা হয়। মেশিনগুলোতে নতুন কোন যন্ত্রাংশ লাগানো হয় না। ফলে মেশিনগুলো অকেজো অবস্থায় পড়ে রয়েছে। বর্তমানে অর্ধেকের বেশি মেশিন অকোজে রয়েছে। শ্রমিকরা আরো জানান, সম্প্রতি গোডাইনের ২/৩ টন মাল বিজেএমসি থেকে ওয়াকশন হয়। ওয়াকশনটি পায় রশিদ গ্রুপই। কিন্তু রশিদ গ্রুপ সেই ওয়াকশন চুক্তিমুল্যের ভিত্তিতে স্থানীয় মাহমদুপুর মহল্লার প্রভাবশালী সুমন হোসেন নামে একজনের কাছে বিক্রি করে দেয়। সুমন হোসেন গোডাইনের ২-৩টন মালামালসহ কারখানার অভ্যন্তরের আরো অন্তত কয়েকটি টাকা মূল্যের ২০-৩০টন মালামাল বের করে নিয়ে গেছে। শ্রমিকদের অভিযোগ, বিজেএমসির জাতীয় জুটমিলের ডিজিএম নুরুল হক ও রশিদ গ্রুপের হিসাব রক্ষক আফজাল হোসেন, আমিরুল ইসলামসহ অফিসের ৮-১০ কর্মকর্তা এবং সিকিউরিটি ইনচার্জকে মোটা টাকা দিয়ে এসব মালামাল মিল থেকে বের করে নিয়ে গেছে। মাল বের করে নেয়ার সময় গেটে একদল সন্ত্রাসী বাহিনীও বসিয়ে রেখেছিল। এছাড়াও যন্ত্রাংশের অভাবে নষ্ট হওয়া মেশিনগুলো মেরামত না করে উলটো আরো যন্ত্রাংশ খুলে খুলে নিয়ে গোপনে বস্তা পার করার সময় নিয়ে গিয়ে গোপনে বিক্রি করা হচ্ছে। এমনকি মিলের একপাশের জঙ্গলে পাশের গেটে গার্ড না রাখায় সেখান দিয়েও মালামাল নিয়ে বিক্রি করা হয়।

শ্রমিকরা প্রতিবাদ করলে তাদেরকে চাকরিচ্যুতও করা হয়। শ্রমিকরা দাবী রাষ্ট্রের সম্পদ এভাবে ধ্বংস করা হলেও কেউ মিলটি রক্ষায় নজর দিচ্ছে না। অথচ মিলটিতে একসময় হাজার হাজার শ্রমিক কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করত। মিলকে ঘিরে সিরাজগঞ্জের অর্থনৈতিক চাকা সচল থাকত। অবিলম্বে রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষায় সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।

এ বিষয়ে রশিদ গ্রুপের হিসাবরক্ষক আফজাল হোসেন জানান, আমরা লিজ নিয়ে মিল পরিচালনা করছি। মিল কীভাবে চলবে, কতজন শ্রমিক দিয়ে চালানো হবে সেটি আমাদের বিষয়। মেশিন নষ্ট হলে মেরামত করবো কি করবো না, সেগুলো বিক্রি করব কি করব না সেটি আমাদের বিষয়। এতে আপনাদের কিছু আসে যায় না। অল্প শ্রমিক কাজ করে বেশি দেখালে আপনাদের কি আসে যায়? আপনার মিলের বিষয়ে কথা বলবেন না।

বিজেএমসির জাতীয় জুট মিলের ডিজিএম নুরুল হক জানান, আমরা রশিদ গ্রুপকে মিলটি লিজ দিয়েছি। লিজ দেয়ার সময় যে সব যন্ত্রপাতি সচল দেয়া হয়েছে, ফেরত নেয়ার সময় সেগুলো ১০০% বুঝিয়ে নেয়া হবে। এখন তারা যন্ত্রাংশ নষ্ট করলো, নাকি খুলে বিক্রি করলে তাতে এখন আমাদের কিছু আসে যায় না। আর কতজন শ্রমিক কাজ করবে, সেটি রশিদ গ্রুপের বিষয়। আমরা শুধু মিল এরিয়া প্রটেকশন দিয়ে থাকি। টেন্ডারের বেশি মালামাল মিল থেকে বের করে বিক্রি করা হচ্ছে এমন অভিযোগে অস্বীকার করে বলেন এমনটা হওয়ার সুযোগ নেই।

সালাউদ্দিন/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com