কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে তলিয়ে গেছে দুধকুমার নদের তীর রক্ষা বাঁধ। ভাঙন আতঙ্কে দিন পাড় করছেন ইসলামপুর ও নলেয়া গ্রামের তীরবর্তী মানুষজন।
জানা গেছে, কুড়িগ্রাম জেলার মধ্যদিয়ে প্রবাহিত দুধকুমার নদ ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড, জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলাধীন ইসলামপুর ও নলেয়া গ্রামের দুধকুমার নদের ডান তীর বরাবর ৫০০ মিটার করে ৫টি প্যাকেজে প্রায় ৫২কোটি ১২ লাখ ৭৮ হাজার ৬৬৫ টাকা ব্যয়ে প্রায় ২৫০০ মিটার তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণের প্রকল্প নেয়। এর মধ্যে টেন্ডার আইডি নং-৭০৪৪২৮, প্যাকেজ নং কুড়ি/দুধকুমার/ড/১৪ (৫০০ মিটার) প্রকল্পের কাজ পায় 'টিআই-পিভিএল-জেডআই জেভি' নামের ঢাকার একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

ঠিকাদারি ওই প্রতিষ্ঠান বাইরে থেকে মাটি না নিয়ে এসে নদের তীর ঘেঁষে প্রায় ১৫ ফুট ফসলী জমির মাটি কেটে তা সরিয়ে ফেলে। এবং  তীরের  প্রায় ৭ ফুট নিচ থেকে কংক্রিটের বোল্ডার ফেলে বাঁধ নির্মাণের কাজ সমাপ্ত করে। এর ফলে বর্ষার শুরুতেই নদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বাঁধটি তলিয়ে গেছে এবং তীর এলাকায় দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙ্গণ। এখন তীর থেকে প্রায় ২০ ফুট দূরে নদের পানিতে তলিয়ে রয়েছে বাঁধটি। 

ইসলামপুর গ্রামের রুবেল মিয়া (২৮) মেহেদী হাসান (২৫)ও নজরুল ইসলাম(৪৫) জানান, তীরের প্রায় ৭ ফুট নিচ থেকে কাজ শুরু করায় বাঁধ কোন কাজে আসছেনা উলটো বাঁধ তলিয়ে গিয়ে ভাঙ্গণ শুরু হয়েছে। মসজিদ ও ঘর- বাড়িসহ ফসলি জমি নদের গর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কায় দিন কাটছে তাদের।
এবিষয়ে জানতে  প্রকল্পটির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান  টিআই-পিভিএল-জেডআই জেভি, মগবাজার,ঢাকা এর সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

পানি উন্নয়ন বোর্ড কুড়িগ্রাম সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পের কাজ আরম্ভের তারিখ ১৪ জুলাই এবং সমাপ্তির তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে শেষ হবার কথা থাকলেও ১১,১২,১৩ ও ১৫ নং প্যাকেজের কাজ  অর্ধেকও সম্পন্ন হয়নি। শুধু তাইনয়, ১৩ নং প্যাকেজের ঠিকাদার কাজটি অন্য ঠিকাদারের কাছে বিক্রি করে দেয়ায় ঐ প্রকল্পের কাজটি এখনো শুরুই হয়নি।

১৫ নং প্যাকেজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রুপান্তর কন্সট্রাকশন এর স্বত্বাধিকারী শামসুল হক জানান, প্রকল্পটির প্রায় ৬০ শতাংশ কাজ তিনি সম্পন্ন করেছেন। বর্ষার পর অবশিষ্ট কাজ শুরু করবেন এবং  অর্থ সংকটের কারণে কাজ বিলম্ব হয়েছে বলে তিনি জানান।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান জানান, ডিজাইন অনুযায়ী বাঁধ নির্মাণের কথা। তারপরও বাঁধ নির্মাণে কোন ত্রুটি হয়েছে কিনা আমি সরেজমিন দেখবো। অর্থ বরাদ্দ নিয়ে সমস্যার কারণে প্রকল্পের কাজ বিলম্বিত হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।