টানা বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা ঢলে লালমনিরহাটের তিস্তা নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে সৃষ্ট স্বল্প মেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। বন্যার পানি নেমে গেলেও প্লাবিত এলাকায় বেড়েছে ভোগান্তি। ভেঙ্গে গেছে গ্রামীণ কাচা সড়ক, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফসলের ক্ষেত। এছাড়া বন্যার পানি দ্রুত নেমে যাওয়ায় জেলার আদিতমারী উপজেলার গরীবুল্লাহ পাড়া, চন্ডিমারী এবং সদর উপজেলার কালমাটির কয়েকটি পয়েন্টে দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন। এতে অন্তত ৫ হাজার বসতভিটা, একাধিক মসজিদ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভাঙন হুমকিতে পড়েছে।
রবিবার (২৩ জুন) বিকেল ৩ টায় লালমনিরহাটের হাতিবান্ধায় অবস্থিত তিস্তার ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫১.৪০ মিটার। যা বিপৎসীমার ৭৫ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগে গত শুক্রবার তিস্তার পানি বিপদসীমার মাত্র ১০ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিলো। পানি দ্রুতই কমে যাওয়ায় শুরু হয়েছে নদী ভাঙন। জেলার আদিতমারী উপজেলার গরীবুল্লাহ পাড়ার বাসিন্দা নুর আলমের স্ত্রী নয়তো বেগম(৪০) বলেন গত কয়েকদিন বাড়ি-ঘরে পানি ছিল। শনিবার সকাল থেকে পানি কমে গেছে। তবে নদীর তীরে ভাঙন শুরু হয়েছে। এর আগেও কয়েকবার বাড়ি সড়িয়ে নিয়েছি। আবার ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙন ঠেকানো না গেলে বাড়ি এবারেও নদী গর্ভে যাবে। একই এলাকার মুদি দোকানদার জোবেদ হোসেন(৩৫) বলেন, বাড়ির দুটো ঘর নদীর কিনারায় পড়েছে। বন্যার আগে বাড়ি থেকে ২০০ মিটারের বেশি দূরে ছিল নদী। হঠাৎ পানি কমায় নদী ভাঙ্গনে ফলসি জমি নদীতে গেলো। এখন বাড়িটাও যাবে। জেলার সদর উপজেলার কালমাটি এলাকার সাইদুর রহমান বলেন, পানিবন্দি অবস্থায় থাকা দুর্ভোগের শেষ হতে না হতেই নদীর ভাঙন শুরু হলো। বাড়িটা কোথায় সড়িয়ে নিবো তেমন জমিও নেই।
মহিষখোচা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোসাদ্দেক হোসেন চৌধুরী বলেন, মহিষখোচা ইউনিয়নের নদী তীরবর্তী এলাকার গরীবুল্লাহ পাড়ায় ভাঙন শুরু হয়েছে। কমপক্ষে ৫ শতাধিক বাড়ি, একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদসহ নানা স্থাপনা ভাঙন হুমকিতে পড়েছে। দ্রুত ভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দৃষ্টি আহ্বান করেন তিনি।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার রায় বলেন, তিস্তা তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে সৃষ্ট সৃষ্ট স্বল্প মেয়াদি বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় গরীবুল্লাহ পাড়াসহ কয়েকটি পয়েন্টে ভাঙন শুরু হয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত মহাপরিচালক এমকেএম তাহমিদুল ইসলাম ভাঙন প্রবন এলাকাগুলো পরিদর্শন করেছেন। দ্রুতই ভাঙন ঠেকাতে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত মহাপরিচালক এমকেএম তাহমিদুল ইসলাম বলেন, নদী ভাঙন প্রবন এলাকাগুলো পরিদর্শন করেছি। দ্রুত ভাঙন ঠেকাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর