• ঢাকা
  • ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • শেষ আপডেট ৩ ঘন্টা পূর্বে
নিউজ ডেস্ক
বিডি২৪লাইভ, ঢাকা
প্রকাশিত : ২৪ জুন, ২০২৪, ০২:৩৫ দুপুর
bd24live style=

‘রাসেলস ভাইপারের কামড়, একবারের জন্যও মনে হয়নি মারা যাব’

ছবি: সংগৃহীত

‘আমার মনে একটা বিশ্বাস ছিল যে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা হলে সাপের বিষ লাগবে না। আমার ধারণা অ্যান্টিভেনম দিলে আমার শরীরের বিষ পানি হয়ে যাবে। তাই কোনো ওঝার কাছে না গিয়ে সাপ নিয়ে সরাসরি রাজশাহী মেডিকেল গিয়েছে। আমার ধারণা ছিল চিকিৎসকরা সাপ দেখলে সঠিক অ্যান্টিভেনমটা দ্রুত দিতে পারবে। তাই সাপ সঙ্গে ধরে নিয়ে গেছি হাসপাতালে। রাসেলস ভাইপার যখন কামড়েছে আমি এক সেকেন্ডের জন্য নার্ভাস হইনি। সাপে কামড় দিয়েছে মারা যাব, আমার একবারের জন্যও মনে হয়নি।’

সোমবার (২৪ জুন) সকালে রাজশাহী চারঘাট উপজেলার পিরোজপুর গ্রামের ফসলের খেতে রাসেলস ভাইপার কামড়ানোর পর চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হওয়া হেফজুল হক এভাবেই তার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন। 

হেফজুল হক বলেন, রাসেলস ভাইপার যেদিন কামড় দেয় সেদিন দলের অন্য লোকজনের সাথে ধান কাটার কাজ করছিলাম। ধান কাটা শেষ পর্যায়ে। এমন সময় একটা সাপ বের হয়েছে। অন্য শ্রমিকরা সাপ সাপ বলে চিৎকার দিতে শুরু করে। আমি গিয়ে সাপকে ধান কাটা কাচি দিয়ে মাটির সাথে চেপে ধরি। এ সময় সাপটি আমার গালে কামড় দেয়। বিষয়টি তাৎক্ষণিক না বুঝতে পারলেও অন্য শ্রমিকরা জানায়, আমার গালে রক্ত। আমাকে সাপে কামড়ে দিয়েছে। এরপর সাপটিকে বেশ কয়েকবার আছাড় দিয়ে মেরে ফেলি। পরে সাপটিকে নিয়ে দ্রুত বাড়িতে এসে পোশাক পরিবর্তন করে রাজশাহী মেডিকেলের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। 

তিনি আরও বলেন, ঘটনার এক ঘণ্টার মধ্যে রাজশাহী মেডিকেলে পৌঁছেছি। ইমার্জেন্সিতে ডাক্তারকে দেখানোর পরে সেখান থেকে আমাকে সরাসরি ওয়ার্ডে ভর্তি করে। তখনও আমার হাতে সাপ ছিল। আমি এই সাপটাকে চিকিৎসকদের দেখিয়েছি। তারা রাসেলস ভাইবার হিসেবে শনাক্ত করেছে। এরপর তারা রাসেলস ভাইপারের অ্যান্টিভেনম দিয়ে আমার চিকিৎসা শুরু করেছে। এর মধ্যে দুই ঘণ্টা পরে আমি খুব বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে আমাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) রেফার করে। সেখানে আমার চিকিৎসা শুরু হয়। ২৪ ঘণ্টা আইসিইউতে ছিলাম। চিকিৎসার বিষয়গুলো তেমন মনে নেই। তবে ভালো চিকিৎসা দিয়েছেন তারা। এরপরে আমাকে আবার ওয়ার্ডে দেয়। সেখানে তিন দিন চিকিৎসা শেষে রিলিজ দেয়। 

হেফজুল বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসকরা তিন দিন পরে আবার ডেকেছিল। তখন গিয়ে লিভার, কিডনি পরীক্ষা দেয়। তবে আর্থিক অবস্থা ভালো না হওয়ায় সেই পরীক্ষাগুলো করা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে আমি সুস্থ থাকলেও শারীরিক দুর্বলতা কাটেনি। সাপে কামড়ানোর ঘটনার ২৩ দিন আজ। কিন্তু এখনও কাজে যেতে পারিনি। এ নিয়ে কষ্টে আছি। এমন অবস্থায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহায়তার আশা প্রকাশ করেছেন তিনি। 

হেফজুল হকের স্ত্রী তানিয়া আক্তার বলেন, ঘটনার দিন বাড়িতে ধানের কাজ করছিলাম। হঠাৎ ননদিনীরা কাঁদতে কাঁদতে ছুটে এসে বলেন, ভাই সাপের কামড়ে মারা গেল। কিছুক্ষণ পরে তার স্বামী সাপ মেরে হাতে করে নিয়ে আসছেন। দেরি না করে ভাগ্নের মোটরসাইকেলের পেছনে উঠেই হাসপাতালে চলে যায়। পরে আমরা হাসপাতালে যাই। গিয়ে দেখি চিকিৎসা শুরু হয়ে গেছে। চিকিৎসকরা অনেক আন্তরিকতার সাথে চিকিৎসা করেছে। 

তিনি জানান, দীর্ঘদিন হলেও তার স্বামী এখনো ঠিকঠাক সুস্থ হতে পারেননি। ফলে সাংসারিক কোন কাজ করতে পারছেন না। এছাড়া চিকিৎসার সময়ে তাদের বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা বাবদ টাকা পয়সা খরচ হয়েছে। এমন অবস্থান সংসার চালনা নিয়ে এক ধরনের কষ্টে আছেন তারা। তাই সরকারের পক্ষ থেকে কামনা করেন তিনি। 

এর আগে রোববার (২৩ জুন) রামেক হাসপাতালে আইসিইউ ইনচার্জ আবু হেনা মোস্তফা কামালের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন হেফজুল হক। এ বিষয়ে আইসিইউয়ের ইনচার্জ আবু হেনা মুস্তফা কামাল বলেন, হেফজুল হক সময়মতো হাসপাতালে এসেছেন। তিনি কোনো ওঝার কাছে গিয়ে সময় নষ্ট করেননি। অ্যান্টিভেনম দেওয়া হয়েছিল। তিনি সুস্থ আছেন। 

প্রসঙ্গত, গত ৩১ মে রাজশাহীর চারঘাটের কৃষি জমিতে কাজ করার সময় হেফজুল আলীকে (৪৫) কামড় দেয় রাসেলস ভাইপার। পরে তিনি সাপটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলেন। এরপর রাসেলস ভাইপারকে নিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসেন। হাসপাতালে চিকিৎসার পরে বর্তমানে তিনি সুস্থ আছেন।

রার/সা.এ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com