• ঢাকা
  • ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • শেষ আপডেট ১৬ মিনিট পূর্বে
শাহীন মাহমুদ রাসেল
কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ২৬ জুন, ২০২৪, ০৬:১৩ বিকাল
bd24live style=

দরিদ্র গ্রাহকের টাকায় ৪ মাঠ সহকারির আয়েশি জীবন

ছবি: প্রতিনিধি

গ্রাহকের টাকায় আয়েশি জীবন পার করছে রামু পল্লি সঞ্চয় ব্যাংকের চারজন মাঠ সহকারী। উত্তোলনকৃত ঋণের টাকা ব্যাংক হিসাবে জমা না দিয়ে জড়িয়ে পড়েছেন জমি ক্রয়, একাধিক বাড়ি, পরিবহণ ব্যবসা, নিজস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, স্ব উদ্যোগে আর্থিক ঋণদান সমিতি গঠনসহ নানা আত্ম উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে। গ্রাহকের টাকায় এমন ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার হওয়ায় ওই ৪ মাঠ সহকারী নিয়মিত অফিসের কাজেও সময় দেন না। 

গ্রাহকের টাকা উত্তোলন করার পর পাশবই ব্যাংকে প্রদর্শনের নিয়ম থাকলেও এসব মাঠ সহকারী পাশবই ব্যাংকে প্রদর্শন না করেই আত্মসাৎ করেন গ্রাহকের পরিশোধ করা ঋণের বিপুল পরিমাণ অর্থ। তাদের এমন অনিয়মের কারণে অনেক গ্রাহক সকল টাকা পরিশোধ করা সত্ত্বেও ঋণ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ নিয়ে ব্যাংকের ব্যবস্থাপক ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অসংখ্য অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী গ্রাহকরা।

অনিয়ম-দূর্নীতিতে জড়িয়ে পড়া মাঠকর্মীরা হলেন- মাঠ সহকারী চম্পক শর্মা, সিরাজুল হক, রাজীব শর্মা ও মো. আলম। এ চার মাঠ সহকারির বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের পাশাপাশি পরিবার-পরিজন ও ভুয়া সদস্যদের নামে ঋণ নিয়ে আত্মসাতেরও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, অভিযুক্তদের মধ্যে চম্পক শর্মা দীর্ঘ ১ যুগ ধরে পল্লি সঞ্চয় ব্যাংক রামু শাখায় কর্মরত রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে কতব্য-কর্মে অবহেলা, হস্তমজুদ এবং দায়িত্ব বুঝিয়ে না দেয়াসহ নানান অনিয়মের অভিযোগে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে গত ৫ মার্চ লিখিত অভিযোগ দেন, ব্যাংকের ৪ কর্মকর্তা। অভিযোগকারীরা হলেন- পল্লি সঞ্চয় ব্যাংক রামু শাখার ব্যবস্থাপক মো. আমিনুল হক, জুনিয়র অফিসার আব্দুল মোনাফ, ক্যাশ সহকারী এখাইন মার্মা ও মাঠ সহকারী ধ্রুব কুমার দে।

ওই অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, মাঠ সহকারী চম্পক শর্মা তার দায়িত্বপ্রাপ্ত সমিতির বিভিন্ন সদস্যদের ৩ লাখ ৪১ হাজার ৭৮৪ টাকা হস্তমজুদ/আত্মসাৎ করেছেন। ১৩ টি সমিতির ১৩৯ টি পাশবই গোপন রাখার কারণে ৩০ লাখ ৪ হাজার ৯২০ টাকার কোন প্রকার হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। তার দেখাদেখি অন্যান্য মাঠ সহকারিরাও তাদের কাজে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। মাঠ সহকারী চম্পক শর্মার আউটস্ট্যান্ডিং ১ কোটি ২০ লাখ টাকা। অথচ এর আগে ৬ মাসে আদায় হয়েছে মাত্র ১৯ লাখ টাকা। এর আগে ২০২৩ সালের ১৭ জুলাই অভ্যন্তরীণ অডিট চলাকালীন চম্পক শর্মার আওতাধীন সমিতির অপ্রদর্শিত পাশ বইসমূহ থেকে কক্সবাজার জেলা কার্যালয় কর্তৃক রিকনসাইল পূর্বে ১ লাখ ৩ হাজার ৫৩৪ টাকা টাকা উদ্ধার করা হয়। এছাড়া নিয়মিত অফিসে না আসা, মোবাইল ফোন বন্ধ থাকার কারণে উপকারভোগীরা যাবতীয় সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলেও প্রধান কার্যালয়ে দেয়া অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে অত্র শাখাকে লাভজনক ও দুর্নীতিমুক্ত করার নিমিত্তে এবং গরীব মানুষে ভাগ্য পরিবর্তনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী মাঠ সহকারী চম্পক শর্মাকে অন্যত্র বদলসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহনের সুপারিশ করা হয়।

একই অভিযোগ রয়েছে, রামু পল্লি সঞ্চয় ব্যাংকের দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়নের মাঠ সহকারী সিরাজুল হকের বিরুদ্ধে। তার নানান অনিয়ম-দুর্নীতির প্রেক্ষিতে শাখা ব্যবস্থাপক মো. আমিনুল হক গত ২৯ মে ২য় দফা কারণ দর্শানো নোটিশ দেন। ওই নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ২ মে সিরাজুল হকের দায়িত্বপ্রাপ্ত পূর্ব পানেরছড়া গ্রাম উন্নয়ন সমিতিতে পরিদর্শনে গেলে সদস্যদের হাতে কোন পাশবই পাওয়া যায়নি। কার্যালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক প্রতিমাসে ২ লাখ ২৪ হাজার টাকা সঞ্চয় আদায়ের নির্দেশনা থাকলেও আদায় করেছেন মাত্র ৩৩ হাজার টাকা। গত এপ্রিল মাসে ৬দিন কর্মক্ষেত্রে অনুপস্থিত থেকেও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন সিরাজুল হক। সিরাজুল হককে দেয়া এ কারণ দর্শানো নোটিশে আরও উল্লেখ করা হয়, তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মোবাইল রিসিভ করেন না। মৌখিকভাবে একাধিকবার তাগাদা দেয়া সত্ত্বেও এসব অনিয়মের বিষয়ে কোন কর্ণপাত করেন না। যা অত্যন্ত হতাশাজনক, গুরুতর অসদাচরণ, কর্তব্য-কর্মে চরম অবহেলা, কর্মী ব্যবস্থাপনা ও শৃঙ্খলা পরিপন্থি। এছাড়া কক্সবাজার শহরে বর্তমানে সিরাজুল হকের ৮টি ইজিবাইক (টমটম) গাড়ি (লাইসেন্সসহ) রয়েছে। যার বাজার মূল্য প্রায় ২০ লাখ টাকা।

উপজেলার ঈদগড় ইউনিয়নের আংশিক অংশে দায়িত্বপ্রাপ্ত মাঠ সহকারী রাজিব শর্মার বিরুদ্ধেও রয়েছেন অনিয়মের নানা অভিযোগ। কর্মস্থল থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে কক্সবাজার শহরে প্রায় ৩০ লাখ টাকা দামের জমি কিনে শুরু করেছেন পাকা স্থাপনা নির্মাণ কাজ। সন্তানদের ভর্তি করিয়েছেন ব্যয়বহুল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। নিজের কর্মস্থল ঈদগড়েও ১০ শতাংশ জমির উপর নির্মাণ করেছেন পাকা স্থাপনা। আয়ের সাথে যার কোনো সামঞ্জস্য নেই। চাকরির পাশাপাশি করেন ঔষধের দোকান। নীতিমালা লঙ্ঘন করে তিনি নিজের মা-বাবার নামেও পল্লি সঞ্চয় ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছেন। ইতিপূর্বে আবুল হোসেন, ডা. গিয়াস উদ্দিনসহ অনেক গ্রাহক তার অনিয়মের বিরুদ্ধে পল্লি সঞ্চয় ব্যাংক রামু শাখা কার্যালয়ে অভিযোগ করেছেন। একসময় ভূমিহীন হলেও রাজিব রহমান এখন কোটিপতি। মাঠ সহকারী হিসেবে তিনি (রাজিব শর্মা) একই ইউনিয়নে (ঈদগড়) ১২ বছর ধরে চাকুরি করছেন। যার কারণে তিনি নির্বিঘ্নে সমিতির টাকা আত্মসাৎসহ নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন।

অফিসের অপর মাঠ সহকারী মো. আলমের বিরুদ্ধেও রয়েছে অনিয়মের এমন অনেক অভিযোগ। নিজের আত্মীয়-স্বজন ও ভুয়া সদস্যদের নামে প্রায় ৪০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে তিনি এখন বিশাল বিত্তের মালিক। নিজের মালিকানায় নির্মাণ করেছেন কমিউনিটি সেন্টার। তার প্রভাব প্রতিপত্তি চোখে পড়ে পল্লি সঞ্চয় ব্যাংক রামু শাখা কার্যালয়েও। অফিসের অনেক সহকর্মী তার ভয়ে তটস্থ। তিনি ঋণ বিতরণকালে জোরপূর্বক সমিতির সদস্যদের কাছ থেকে ১ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত উৎকোচ নেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

জানা গেছে, মাঠ সহকারী চম্পক শর্মা অসংখ্য ভুয়া ঋণ নামে-বেনামে তুলে আত্মসাৎ করেছেন। উপজেলা কার্যালয়ে এ ধরনের একটি ভুয়া ঋণের সদস্যদের তালিকাও করা হয়েছে। এসব ভুয়া ঋণের তালিকা নাম রয়েছে শিলু বড়ুয়া, পঙ্কজ ধর, কম্পন ধর, গুরাবালা ধর, নেপালী ধর, জাহানারা বেগম, সুভতি বড়ুয়া, শিপন ধর, দুলাল কান্তি শীল, স্বপন ধরসহ আরও অনেকে।

রামুর ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের সিপাহির পাড়ার সিফাত নুর তোফা নামের এক গ্রাহক জানিয়েছেন, তিনি সিপাহীরপাড়া সমিতির নিয়মিত গ্রাহক। এ সমিতিতে তার এবং তার মায়ের (রওশন আক্তার) নামে দুটি ঋণ ছিল। ২০২৩ সালের মে মাসে তিনি দুটি কিস্তির টাকা পাসবইতে স্বাক্ষরপূর্বক পরিশোধ করেন। ওই বছরের ডিসেম্বরে তিনি অফিসে গিয়ে দেখতে পান তার টাকা ব্যাংক হিসাবে জমা হয়নি। অর্থাৎ তার টাকা মাঠ সহকারী চম্পক শর্মা আত্মসাৎ করায় অপরিশোধিত দেখাচ্ছে। পরে বিষয়টি দায়িত্বরত কর্মকর্তাকে জানালে তিনি একটি ঋণের টাকা পরিশোধ করেন। কিন্তু মায়ের নামে অপর একটি ঋণের টাকা এখনো পরিশোধ করা হয়নি। নিরুপায় হয়ে তিনি এ বিষয়ে শাখা ব্যবস্থাপকের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ দেন।

হাজারীকুল গ্রাম উন্নয়ন সমিতির সদস্য ইরিন শারমিন জানিয়েছেন, ২০২৩ সালের ২০ মার্চ তিনি তিনি পল্লি সঞ্চয় ব্যাংক রামু শাখা থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ গ্রহন করেন। ওই বছরের ৩ নভেম্বর তিনি সার্ভিস চার্জসহ ৫৪ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। কিন্তু তার টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে হস্তমজুদ করেন সংশ্লিষ্ট মাঠ সহকারী। এ কারণে তিনি পরবর্তীতে ঋণ নিতে গিয়ে হয়রানির শিকার হন। এ ব্যাপারে তিনি শাখা ব্যবস্থাপককে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

পাঞ্জেগানা গ্রাম উন্নয়ন সমিতির সদস্য শহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন- তিনি পল্লি সঞ্চয় ব্যাংক রামু শাখা থেকে ২০২১ সালের ১৭ মার্চ ৫৫ হাজার টাকা ঋণ নেন। ২০২৩ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি মাঠ সহকারী চম্পক শর্মাকে সমুদয় টাকা পরিশোধ করেন। কিন্তু চলতি বছরের ১৫ মার্চ তিনি অফিসে গিয়ে দেখতে সাধারণ ঋণ বাবদ তার নামে মাত্র ১১ হাজার ৬০০ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। অবশিষ্ট টাকা মাঠ সহকারী চম্পক শর্মা ব্যাংকে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। ফলে তিনি আবারও আবেদন জানিয়ে ঋণ পাচ্ছেন না। নিরুপায় হয়ে এ ব্যাপারে তিনি পল্লি সঞ্চয় ব্যাংক রামু শাখা ব্যবস্থাপকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

উত্তর তেচ্ছিপুল এলাকার ইয়াছমিন আক্তার জানিয়েছেন- তিনি ২০২৩ সালের ১০ ডিসেম্বর তার নামে নেয়া ঋণের সকল টাকা পরিশোধ করেছিলেন। কিন্তু পরে ঋণ নিতে গিয়ে দেখেন তার পূর্বের টাকা মাঠ সহকারী এখনো ব্যাংকে জমা করেননি। এ জন্য তিনি পরিশোধকৃত টাকা ব্যাংকে জমা দেয়ার ও ঋণ পাওয়ার জন্য শাখা ব্যবস্থাপকের কাছে লিখিত আবেদন দিয়েছেন।

রামুর দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়নের চেইন্দা খোন্দকার পাড়া সমিতির সদস্য ইয়াছমিন আক্তার জানিয়েছেন, ২০২০ সাল থেকে তিনি ঋণ নেয়ার জন্য মাঠ সহকারী সিরাজুল হকের কাছে একাধিকবার ফাইল জমা দিয়েছেন। চলতি বছরের ৪ এপ্রিল ব্যবস্থাপকের উপস্থিতিতে ফাইল জমা ও ডিপিএস করানোর পর ঋণ দিতে অপরাগতা জানান মাঠ সহকারী সিরাজুল হক। পরে ফোন করে এবং অফিসে গিয়ে সিরাজুল হকের দেখা পাননি তিনি। হয়রানির বিরুদ্ধে মাঠ সহকারী সিরাজুল হকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তিনি শাখা ব্যবস্থাপকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পল্লি সঞ্চয় ব্যাংক রামু শাখায় কয়েকমাস পূর্বে যোগদান করা এক মাঠ সহকারী জানান, তিনি কাজ করতে নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছেন। এরমধ্যে অসংখ্য ব্যক্তির নামে ভুয়া ঋণ নেওয়ারও তথ্য পেয়েছেন তিনি। তার তথ্য প্রমাণ তাঁর হাতে রয়েছে।

ভুক্তভোগী গ্রাহকরা জানান- ইতিপূর্বে এ শাখায় দায়িত্বরত ব্যবস্থাপক আবদুল মজিদ মাঠ সহকারীদের এসব ভুয়া ঋণ বিতরণে সহযোগিতা করেছেন। তিনি দায়িত্বরত অবস্থায় বিভিন্ন সময়ে পুলিশি অভিযান চালিয়ে সদস্যদের কাছ থেকে বকেয়া ঋণ আদায় করলেও এসব ঋণের বেশির ভাগ নিজে এবং মাঠ সহকারীরা আত্মসাৎ করেছেন। ব্যাংকের বিধি লঙ্ঘন করে গর্জনিয়া একটি পরিবারের সাড়ে ৫ লাখ টাকা ঋণ বিতরণেরও অভিযোগ রয়েছে। এসব অনিয়মে অভিযুক্ত মাঠ সহকারীদের রক্ষায় এ শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক আবদুল মজিদ এখনো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। যার একটি অডিও রেকর্ড এ প্রতিবেদকের হাতে রয়েছে। এসব দুর্নীতি ধামাচাপা দিতে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে নানাভাবে তদবিরসহ তিনি পুনরায় এ শাখায় যোগদানেরও চেষ্টা চালাচ্ছেন।

জানা গেছে, ইতিপূর্বে রামুর গর্জনিয়া ইউনিয়নের মাঠ সহকারী প্রীতিলতা দেবী গ্রাহকদের ২৬ লাখ আত্মসাৎ করেন। যা নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। পরে ওই মাঠ সহকারির নামে পল্লি সঞ্চয় ব্যাংক (তৎকালীন একটি বাড়ি, একটি খামার) কর্তৃপক্ষ দুটি মামলা দায়ের করে। পরবর্তীতে প্রীতিলতা দেবীকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।

এতবড় ঘটনার পরও পল্লি সঞ্চয় ব্যাংক রামু শাখায় শাখা ব্যবস্থাপক আবদুল মজিদ, মাঠ সহকারী চম্পক শর্মা, সিরাজুল হক, রাজিব শর্মা ও মো. আলমের রমরমা অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে বর্তমানে এ শাখার কর্মকাণ্ড নিয়ে অসংখ্য গ্রাহক ও জনমনে চরম ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। হয়রানির শিকার ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা অবিলম্বে এসব অনিয়ম দুর্নীতির ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

এইসব বিষয়ে জানতে মাঠ সহকারী চম্পক শর্মার সাথে যোগাযোগ করা হলে তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

মাঠ সহকারী রাজিব শর্মা এইসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার কোন ফার্মেসি নেই। যে জমি ক্রয় করে স্থাপনা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে, তা খুব অল্প টাকা দিয়ে ক্রয় করছি।

তার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছেন বলে দাবি করেছেন মাঠ সহকারী সিরাজুল হক। তিনি বলেন, অভিযোগ যে কেউ করতে পারে, তার সত্যতা কতটুকু আপনারা যাচাই বাছাই করুন। তবে তার কোনো টমটম নেই বলে দাবি করেন অভিযুক্ত এই মাঠ সহকারী সিরাজুল হক।

কোথাও এক টাকার দুর্নীতি করেননি বলে দাবি করেছেন মাঠ সহকারী মো. আলম। তিনি বলেন, রামু শাখার ব্যবস্থাপক মো. আমিনুল স্যার আরেকজন সিনিয়র অফিসারকে গালমন্দ করার সময় আমি নিষেধ করি, এতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। শুধু তাই নয়, পরবর্তী তিনি মাঠ পর্যায়ে আমার বিষয়ে তদন্ত করেও কোন অনিয়ম-দুর্নীতি পাননি। 

এসব অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে পল্লি সঞ্চয় ব্যাংক রামু শাখার ব্যবস্থাপক রাশেদা বেগম জানান, ইতিমধ্যে চম্পক শর্মাকে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছে। অন্যান্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে প্রমাণসহ দেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এইসব অভিযোগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে পল্লি সঞ্চয় ব্যাংকের এম ডি
শেখ জামিনুর রহমান বলেন, কিছুদিন আগে রামু শাখার ব্যবস্থাপককে পটুয়াখালীতে শান্তিমূলক বদলি করা হয়েছে। আগামী মাসে অডিট পাঠাবো, যার বিরুদ্ধে অনিয়ম উঠে আসবে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মুনতাসির/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com