ফেনীতে গত ১৮ মাসে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য উদ্ধার করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কার্যালয়ের ফেনী কার্যালয়।
কার্যালয়টি হতে প্রাপ্ত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত মাদকদ্রব্যে আইনে ৩৯০টি মামলায় ৩৯৯ জনকে আসামি করা হয়েছে। উক্ত সময়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে মোট ৫ হাজার ৪০১টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। তার মধ্যে ২০২৩ সালে ৩ হাজার ৯১১টি এবং চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত ১ হাজার ৪৯০টি অভিযান চালানো হয়েছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের দেয়া তথ্যানুসারে, ২০২৪ সালের মে মাস অবধি মোট ১২১টি মামলায় ১২১ জন আসামি রয়েছে। উক্ত সময়ে অভিযান
দেড় বছরে ৩৯০ মামলা ১০টি সেমিনার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাদকবিরোধী সচেতনতা সৃষ্টিতে মেন্টর তৈরি করা হয়েছে ৯২ টি, আলোচনা সভা করা হয়েছে ২৩ টি, মাদকবিরোধী শ্রেণি বক্তৃতা ১৭ টি, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে ক্লাব এনজিও ও সামাজিক সংগঠনের মাধ্যমে শর্ট ফিল্ম প্রদর্শিত হয়েছে ১৫৪ টি, কারাগারে বন্দিদের মাদকবিরোধী প্রচারণামূলক কার্যক্রম হয়েছে ৭ টি। এছাড়াও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাদকবিরোধী স্লোগান সম্বলিত কলম খাতা, স্কেল বিতরণ করা হয়েছে এবং মাদকের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে ব্যানার পোস্টার লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে ফেনী কার্যালয়ের উপপরিচালক সোমেন মন্ডল জানান, বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। ফেনী সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়াতে মাদকের কারবার বেশি হয় এবং সে অনুযায়ী অভিযান পরিচালনা করা হয়। এছাড়াও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ট্রানজিট হওয়াতে ফেনী দিয়ে মহাসড়কে মাদক পাচার বেশি হয়। অভিযানে ফেনীর মানুষ ছাড়াও আশেপাশের বিভিন্ন জেলার মানুষ ধরা পড়েন।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর অভিযান চালিয়ে ইয়াবা ৪০ হাজার ৫৬৮ পিস, গাঁজা ২৮ কেজি ৮৫০ গ্রাম, চোলাইমদ ৩৬ লিটার, বিদেশি মদ ২০৯ বোতল, বিয়ার ৩ ক্যান, মুলি ৩ কেজি ৫০০ গ্রাম, ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট ৪৫০ পিস, ৮ রাউন্ড গুলিসহ ১টি পাইপগান উদ্ধার করা হয়েছে। একই কার্যালয়ের তথ্যানুসারে, ২০২৩ সালে ২৬৯ মামলায় আসামি ২৭৮ জন। এরমধ্যে ইয়াবা ৩৩ হাজার ৯৭৯ পিস, গাজা ১১৮ কেজি ১০০ গ্রাম, চোলাইমদ ১০৭ লিটার, বিদেশীমদ ৬৯ বোতল, ফেন্সিডিল ৪৮ বোতল, বিয়ার ৩০ ক্যান, ওয়াস ১ হাজার ২০ কেজি, জি পেথিডিন ইনজেকশন ৫ স্যাম্পল, মুলি ২০ পিস, কোডিনযুক্ত মাদকদ্রব্য ৮ বোতল, মোবাইল সেট ১টি, পিক আপ ১টি, সিএনজি ১টি উদ্ধার করা হয়েছে।একই সূত্র জানায়, ২০২১-২২, ২০২২-২৩ ও ২০২৩-২৪ অর্থবছরে গণসচেতনতা কার্যক্রমের আওতায়
তিনি বলেন, মাদক নিয়ন্ত্রণে চিহ্নিত স্থানগুলোতে নিয়মিত অভিযানের পাশাপাশি জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে টাস্কফোর্স অভিযান পরিচালনা করা হয়। মাদক নিয়ন্ত্রণে থাকলেও যারা ধরা পড়ে অধিকাংশই যুবক বয়সী বলে জানান তিনি।অভিভাবকদের সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, মাদক নিরাময়
কেন্দ্রগুলোতে ৯০ শতাংশ ১৫ থেকে ৩৫ বয়সী। এটি খুবই উদ্বেগজনক। এদেরকে মাদকের ভয়াবহতা থেকে বের করতে হলে অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে। খেলাধুলাসহ পারিবারিক কোনো অবস্থানের মাধ্যমে পরিত্রাণ করতে হবে। তবেই মাদকের ভয়াবহতা থেকে তরুণদের বের করে আনা সম্ভব হবে।
উল্লেখ্য, আজ বুধবার (২৬ জুন) আন্তর্জাতিক মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী দিবস। জাতীয়ভাবে দিবসটি আজ উদ্যাপিত হওয়ার কথা থাকলেও সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ১৪ জুলাই অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর