সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয়’ স্কিম বাতিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদেরকে প্রতিশ্রুত সুপার গ্রেডে অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতনস্কেল প্রবর্তনের দাবিতে আগামী ১ জুলাই থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘অল-আউট শাট ডাউন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।
আগামী ৩০ জুনের মধ্যে দাবি আদায় না হলে এক জুলাই তারিখ থেকে কর্মবিরতিতে অনুষদের ডিন, বিভাগের চেয়ারম্যানরা কোনো দাপ্তরিক কাজ করবেন না, হল প্রভোস্ট হলে যাবেন না, অন্য শিক্ষকরাও যারা বিভিন্ন দপ্তরের দায়িত্বে আছেন তারাও তাদের কাজ করবেন না।
আজ বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) টানা তৃতীয় দিনের মতো অর্ধদিবস কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে এ ঘোষণা দেন শিক্ষক সমিতির নেতারা। এদিন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির আহ্বানে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত কর্মবিরতি ও দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষকরা।
কর্মসূচিতে শিক্ষকরা বলেন, এই পেনশন স্কিম তো আসলে তো পেনশন নয়, এটা একটা স্কিম। বিষয়টি এমন যে আমি কারো কাছে মাসে মাসে টাকা জমা রাখছি, সে পরবর্তীতে আমাকে একসঙ্গে বেশি টাকা ফেরত দেবে। একটি চক্র বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদেরকে কেন্দ্র করে শিক্ষার পরিবেশে বাধা সৃষ্টি করতে পাঁয়তারা করছে। শুধু এই স্কিম বাতিল নয়, যে কুচক্রী মহল এর জন্য দায়ী তাদেরকে চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। শিক্ষকতা পেশায় নতুন প্রজন্মকে আগ্রহী করার জন্য পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আমাদের আহ্বান থাকবে।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন সহযোগী অধ্যাপক খ্রীষ্টিন রিচার্ডসন বলেন, আমরা যে দাবিতে আন্দোলন করছি, তার মধ্যে দুটো পুরোনো, নতুন যুক্ত হয়েছে পেনশন স্কিম। এতো দিনে যে খুব একটা ফলাফল পেয়েছি তা নয়। আমরা শিক্ষকরা অনেক ‘নাই নাই’ এর মধ্যে কাজ করি। আমাদের একটা সান্ত্বনা থাকে যে রিটায়ারমেন্টে গেলে পেনশনের টাকা দিয়ে একটা স্বাচ্ছন্দ্য জীবন কাটাবো। আমাদের সেই শেষ জীবনে স্বাচ্ছন্দ্য টুকু কেড়ে নেয়া হচ্ছে। দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের শিক্ষকদের নিয়ে যদি এমন করা হয় তাহলে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে? আমাদের যৌক্তিক দাবি হলো আমাদের যে সুবিধাটুকু ছিল তা যেন বহাল থাকে। যা ছিল তা থেকে আরো কমিয়ে দেয়া ন্যাচারাল জাস্টিসের পরিপন্থি।
কর্মসূচিতে জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সহযোগী অধ্যাপক ড. শেখ মাশরিক হাসান বলেন, ৩০ তারিখের মধ্যে দাবি না মানলে আমরা এক তারিখ থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে যাবো। আমরা অল-আউট শাট ডাউন কর্মসূচিতে যাবো। সরকারের কাছে আমাদের আবেদন, বাংলাদেশকে মেধাহীন রাষ্ট্র করার যে ষড়যন্ত্র চলছে তা থেকে বেরিয়ে এসে মেধাবীরা যেন শিক্ষকতা পেশায় আসেন তার জন্য এ প্রত্যয় স্কিম বাতিল করা হোক।
অবস্থান কর্মসূচিতে শিক্ষা সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক ড. মোমিন উদ্দীন বলেন, এক তারিখ থেকে আমরা অল-আউট কর্মবিরতি পালন করবো। আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের জন্য আন্দোলন করছি। আশা করি আমাদের শিক্ষার্থীরাও আমাদের পাশে থাকবেন। আমরা শিক্ষার্থীদের প্রতি সহানুভূতিশীল। আমরা এ কর্মবিরতি ফলে তাদের ক্ষতি পুষিয়ে দেবো। এক তারিখ থেকে আমাদের অল-আউট কর্মবিরতি পালিত হবে।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির নেতারাসহ বিভিন্ন অনুষদের ডিন, ইনস্টিটিউটের পরিচালক, বিভাগের চেয়ারম্যানসহ শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর