• ঢাকা
  • ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • শেষ আপডেট ৫ সেকেন্ড পূর্বে
শাহাদুল ইসলাম সাজু
জয়পুরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ৩০ জুন, ২০২৪, ০৫:৫৪ বিকাল
bd24live style=

ফাঁসির আসামির খালাস পেতে পেশকারকে ঘুষ দেওয়ার ভিডিও ফেসবুকে

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

জয়পুরহাটে স্কুল ছাত্র মোয়াজ্জেম হত্যা মামলার ফাঁসি দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি দেওয়ান বেদারুল ইসলামের বেদিনের বাসায় গিয়ে তাঁর কাছে  এক ব্যক্তি টাকা নিচ্ছেন এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।  এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে আদালত পাড়ায়। ফাঁসির আসামি দেওয়ান  বেদারুল ইসলাম তাঁর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে শুক্রবারে ভিডিও পোস্ট করেন।

দেওয়ান বেদারুল ইসলাম তাঁর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া ভিডিও ক্যাপশনে লিখেছেন' সাধু- সাবধান জয়পুরহাট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সম্মানীয় পেশকার শাহীন আমার মামলার রায়ে ফাঁসির ভয় দেখিয়ে রায়ে খালাস করে দেবে বলে আমার বসার ঘর থেকে প্রত্যাহারকৃত বিচারক আব্বাস উদ্দীনের নাম করে টাকা নেওয়ার ভিডিও ফুটেজ বলে উল্লেখ করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

ভিডিও শুক্রবারে ফেসবুকে  আপলোডের পর শনিবার রাত ১০টা ২০ পর্যন্ত  পর্যন্ত ৩৫ কমেন্ট, ২১ শেয়ার ও ১০ হাজার ৬শ  ভিউ হয়েছে। ওই ভিডিওর স্কিনে ২৯ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখ লেখা রয়েছে। ৬ মিনিট ৫৬ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, দেওয়ান  বেদারুল ইসলামের বাসার একটি  ঘরে একব্যক্তি গায়ে জ্যাকেট ও মাথা মাফলার পড়ে ঢোকেন। তাঁকে ঘরে বসে রেখে বেদারুল কিছুক্ষণের জন্য চলে যান। জ্যাকেট ও মাথায় মাফলার পরা ব্যক্তি ঘরের এদিক ওদিক তাকাতাকি করছিলেন। এরপর বেদারুল ইসলাম একটি লাল রঙের ব্যাগ নিয়ে ঘরে আসেন। বেদারুল লাল ব্যাগটি পাশের টেবিলের ওপর রাখেন। তখন ওই ব্যক্তি বেদারুলকে কিছু বলছিলেন। বেদারুল এদিক -ওদিক তাকাতাকি করে তার উত্তর দিচ্ছিলেন। এরপর  তাঁদের মধ্যে কিছু  কথোপকথনের পর বেদারুল টেবিলের ওপর রাখা লাল ব্যাগটি নিজের হাতে নিয়ে ব্যাগের ভেতর থেকে টাকার বান্ডিল গুলো বের করে ওই ব্যক্তির হাতে দেন। ওই ব্যক্তি টাকার বান্ডিলগুলো দেখে লাল ব্যাগটি চেয়ে নিয়ে সেই ব্যাগে টাকাগুলো ঢোকে নেন। এরপর তাঁরা দুজন নিজেদের মধ্যে  কিছু কথোপকথন করেন। এরপর আবার বেদারুল কয়েক সেকেন্ডের জন্য কক্ষ থেকে বাসার ভেতরে যান। তিনি  আবারও কক্ষে ফিরে আসেন। এরই কিছুক্ষণ পর সেখানে গায়ে চাদর ও ও মাথায় কাপড় পরা এক নারী সেখানে আসেন। তাঁকে হাত নাড়িয়ে কথা বলতে দেখা যাচ্ছিল।

বেদারুলের বাসায় গিয়ে তাঁর কাছ থেকে টাকা নেওয়া ব্যক্তিটিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বেঞ্চ সহকারী এস, এম শাহিন বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। ভিডিওতে টাকা নেওয়া ব্যক্তটি বেঞ্চ সহকারী এস,এম শাহিন নিজের বলে স্বীকারও করেছেন। তবে ভিডিওতে দেখা যাওয়া টাকা নেওয়ার বিষয়টি  ঘুষ নেওয়ার ঘটনা নয় বলে তিনি দাবি করেন। মুঠোফোনে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বেঞ্চ সহকারী এস,এম শাহিন  বলেন, আমার বড় ভাইয়ের বন্ধু বেদারুল ইসলাম। তিনি আমার বড় ভাই ও আমার কাছে কিছু টাকা নিয়েছিলেন। সেই টাকা তিনি আমাকে ফেরত দিয়েছেন ওই বাসায় । বেদারুলের মামলা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে ছিল না। এর আগেও বেদারুল এ রকম ভিডিও দিয়েছিল। বেদারুল কেমন মানুষ সেটি জয়পুরহাটের মানুষ জানে।  মামলা খালাসের কথা বলে টাকা নেওয়ার কথা সত্য নয় বলে দাবি করেন তিনি।

জয়পুরহাটের যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বেঞ্চ সহকারীর নাঈম হোসাইনের  সঙ্গে এক আইনজীবীর ঘুষ চাওয়া সংক্রান্ত একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ৩ জুন আদালতে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় ওইদিনই বেঞ্চ সহকারী  নাঈম হোসাইন বাদি হয়ে আইনজীবী গোলাম মোর্শেদ আল কোরেশি সাক্কু ও তাঁর মোহরার প্রিতমের বিরুদ্ধে  সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেটের আমলি আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় আদালত থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি করা হয়। এ মামলায় আইনজীবী ও তাঁর মোহরার উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন।  এঘটনায় সমিতির সদস্য কয়েকজন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী  জেলা ও দায়রা জজ মোঃ নূর ইসলামের সঙ্গে দেখা করে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা নিষ্পত্তির জন্য আলোচনা করেন। কিন্তু সন্তোষজনক সমাধান হয়নি। এরপর গত ২৪ জুন থেকে আইনজীবীরা অনির্দিষ্টকালে জন্য জেলা ও দায়রা জজ মোঃ নূর ইসলামের আদালত বর্জন করেছেন। এখনো বিষয়টি সুরাহা হয়নি।  আইনজীবীদের দাবি কয়েকটি আদালতের বেঞ্চ সহকারী ঘুষ ছাড়া কিছুই বোঝেন না। ঘুষ না পেলে তাঁরা হয়রানি করেন।

এরই মধ্যে  জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বেঞ্চ সহকারী এস,এম শাহিন এক  ফাঁসির আসামি দেওয়ান বেদারুল ইসলাম বেদিনের বাসায় গিয়ে টাকা নেওয়ায় ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। বেঞ্চ সহকারীরা ঘুষ নেন আইনজীবীদের এমন অভিযোগ অনেকটায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছ বলে  মনে করছেন জয়পুরহাট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহনূর রহমান শাহীন। তিনি বলেন, একটি হত্যা মামলার ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির কাছে থেকে টাকা নেওয়ার দৃশ্য সম্বলিত  ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও আমাকে একজন আইনজীবী দেখিয়েছেন। টাকা নেওয়া ব্যক্তিটি জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বেঞ্চ সহকারী শাহিন বলে আমার মনে হয়েছে।  হত্যা মামলার আসামির সঙ্গে আদালতের বেঞ্চ সহকারী আর্থিক লেনদেনের সর্ম্পক থাকা সমীচীন নয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের   এটি তদন্ত করে দেখা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,  বেদারুল ইসলাম বেদিন জয়পুরহাট সদর উপজেলার পাঁচুর চক  উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র মোয়াজ্জেম হোসেন হত্যা মামলার আসামি। চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মোঃ আব্বাস উদ্দিন বেদারুল ইসলামসহ ১১ জন আসামির ফাঁসির আদেশ দেন। একই সঙ্গে আসামিদের প্রত্যেকের অর্ধ লক্ষ টাকা করে জরিমানাও করা হয়। ওই মামলার রায় ঘোষণার পাঁচ দিনের মাথায় গত ৫ ফ্রেরুয়ারি দিবাগত দুর্বৃত্তরা  অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ  মোঃ আব্বাস উদ্দীনের হাউজিং এস্টেটের ভাড়া বাসার গ্রিল কেটে ভেতরে ঢোকেন। তাঁরা  অতিরিক্ত দায়রা জজ মোঃ আব্বাস উদ্দীনকে  ফাঁসি দেওয়ার হুমকি দেন। এসময় দুর্বৃত্তরা  তাঁর বাসা থেকে পাঁচ ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা চুরি করে পালিয়ে যান।  এঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ নিজেই বাদি হয়ে জয়পুরহাট সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছিলেন। ওই ঘটনার পর গত ২০ ফেব্রুয়ারি বিচারক মোঃ আব্বাস উদ্দীন প্রত্যাহার করা হয়।

 

শাকিল/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com