
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় আকস্মিকভাবে বেড়েছে শিশু নিখোঁজের ঘটনা। প্রায় প্রতিদিনই জেলার কোথাও না কোথাও শিশু নিখোঁজ হচ্ছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিখোঁজ শিশুর সন্ধান চেয়ে বিজ্ঞপ্তি এখন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। এতে করে তীব্র উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন অভিভাবকেরা।নিখোঁজ শিশুদের মধ্যে বেশিরভাগ আবার মাদ্রাসা শিক্ষার্থী। যদিও পুলিশ বলছে জেলায় কোন সক্রিয় অপহরণকারী চক্র আছে বলে তাদের জানা নেই।
নবীনগরের কলেজপাড়া থেকে নিখোঁজ হওয়া রিফাত নামের এক শিশুকে গত ২৯ জুন জেলা সদরের জগৎ বাজার এলাকায় অজ্ঞাত এক বৃদ্ধের কাছ থেকে উদ্ধার করে স্থানীয় মানুষজন।পরে ঐ বৃদ্ধকে সদর থানায় হস্তান্তর করে উপস্থিত জনতা।রিফাতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, রিফাত স্থানীয় একটি মাদ্রাসার ছাত্র আর ঐ বৃদ্ধের বাড়ি কুমিল্লা জেলায়।বাড়ি থেকে মাদ্রাসায় যাবার পথে সে রিফাতকে মোবাইল কিনে দেয়ার লোভ দেখিয়ে, ফুসলিয়ে নবীনগর থেকে নিয়ে আসে।ঐ বৃদ্ধের বিরুদ্ধে সদর থানায় অপহরণ মামলা দায়েরের ব্যাপারটি নিশ্চিত করেছে রিফাতের পরিবার।
গত ২৮শে জুন নবীনগর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের বাঘাউড়া গ্রাম থেকে আয়েশা নামের দশ বছরের এক মেয়ে নিখোঁজ হয়।ফেসবুকে নিখোঁজের পোস্ট দেখে পরদিন ময়মনসিংহ স্টেশনে এক ভিক্ষুকের কাছ থেকে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয়রা।
কিছুদিন আগে নবীনগর উপজেলার গোপীনাথপুরের মনতলা থেকে তামিম নামের আরেক মাদ্রাসা ছাত্র নিখোঁজ হয়।পরে ভৈরব উপজেলার আনোয়ারপুর হাসপাতালের সামনে থেকে তার খোঁজ পাওয়া যায়। তার পরিবারের দাবি তাকে জ্বীন আছড় করেছিল।
এছাড়াও একই উপজেলার চরগোসাইপুর থেকে শাওন নামে আরেক মাদ্রাসাছাত্রকে নিখোঁজ হওয়ার পরদিন পাওয়া যায়।
সদর উপজেলার চিনাইর দক্ষিণপাড়া থেকে গত সপ্তাহে নাদিমুল নামের আরেক মাদ্রাসা ছাত্র হারিয়ে যায়।সে এখনো নিখোঁজ রয়েছে। এ ব্যাপারে সদর থানায় জিডি করেছে তার পরিবার।
এসব নিখোঁজের ঘটনায় থানা পুলিশের দ্বারস্থ হতে চায় না ভুক্তভোগীরা।নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভুক্তভোগী পরিবারের একজন জানান,অনেকেই থানা পুলিশের কাছে দৌড়াদৌড়ি করাকে ভোগান্তি মনে করেন। অবশ্য, অনেকক্ষেত্রে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েও সুফল মিলে না।
যেমন এ বছরের ২৩ শে এপ্রিল বিকেলে বিজয়নগর উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের লক্ষীমুড়া গ্রাম থেকে মাসুম রহমান শুভ নামে ১৩ বছর বয়সী এক মাদ্রাসা ছাত্র নিখোঁজ হয়।ঘটনার পরদিন সকালে বিজয়নগর থানায় ভাইয়েত সন্ধান চেয়ে জিডি করে তার বড়ো ভাই মামুন মিয়া,জিডি নং-১১৮৮।কিন্তু নিখোঁজের আড়াই মাস পেরিয়ে গেলেও পুলিশের তরফ থেকে তারা উল্লেখযোগ্য কোন সহযোগিতা পাননি এবং শুভকে এখনো খুঁজে পাওয়া যায় নি বলে জানায় শুভর পরিবার।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুল ইসলাম বিডি২৪লাইভকে বলেন,’ জিডি এন্ট্রি হওয়ার পর আমরা দেশের সকল থানায় সন্ধান চেয়ে একটি তারবার্তা প্রেরন করে থাকি। আর আমার এলাকায় কোন সংঘবদ্ধ অপহরণকারী চক্র আছে বলে আমার জানা নেই।ভুক্তভোগী পরিবারকে যোগাযোগ করতে বইলেন,আমি বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখবো।’
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর