• ঢাকা
  • ঢাকা, শনিবার, ০৬ জুলাই, ২০২৪
  • শেষ আপডেট ৩৭ মিনিট পূর্বে
ইয়ানুর রহমান
যশোর প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৩ জুলাই, ২০২৪, ০৮:৩৮ রাত
bd24live style=
বেনাপোল কাস্টম হাউস’

২০২৩-২৪ অর্থ বছরে লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে বেশি আয় করেছে ২১৬.৫৯ কোটি টাকা

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

টানা ১ যুগ ধরে বেনাপোল কাস্টম হাউস রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হলেও ২০২৩-২৪ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২১৬.৫৯ কোটি টাকা বেশি আয় করেছে।

সূত্রে জানা যায়, এ অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বেনাপোল কাস্টম হাউসকে বেঁধে দেওয়া লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬২৩৮ কোটি টাকা। সেখানে বেনাপোল কাস্টম হাউস ৩০ জুন-২০২৪ পর্যন্ত সংশোধিত রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা প্রকাশ করেছেন ৫৯৪৮ কোটি টাকা। আদায় দেখিয়েছেন ৬১৬৪.৫৯ কোটি টাকা। যা শতকরা প্রবৃদ্ধির হার প্রকাশ করা হয়েছে ৬ দশমিক ৫৩ শতাংশ বেশি।

এই সময়ে এ বন্দর দিয়ে ভারত থেকে পণ্য আমদানি হয়েছে ১৭ লাখ ২১ হাজার ৭৮০ টন। যা বিগত বছরের তুলনায় ২ লাখ ৮১ হাজার ৯৭০ টন কম। এখানে পণ্য আমদানি কমলেও রাজস্ব আদায় বেড়েছে।

জানা গেছে, প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে স্থলবন্দরের মাধ্যমে বাংলাদেশের মধ্যে যত বাণিজ্য সম্পাদিত হয় তার প্রায় ৮০ ভাগ পণ্য আমদানি হয় বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে। তবে বৈশি^ক মন্দাসহ নানা কারণে গেল কয়েক বছর ব্যবসায়ীরা ঠিকমতো এলসি করতে না পারায় আমদানি বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এছাড়া, ভারত থেকে আমদানিকৃত পণ্য শুল্কায়নে কাস্টম কর্মকর্তাদের লাগামহীন ঘুষ বাণিজ্য, কতিপয় চিহ্নিত দুষ্কৃতকারী আমদানিকারকদের মিথ্যা ঘোষণায় আমদানি করা পণ্য পাঁচারে কর্মকর্তাদের সহযোগিতা করা ও চেকপোস্ট কাস্টম দিয়ে সীমান্তের চোরাকারবারি সিন্ডিকেটের সাথে অবৈধ আঁতাতের মাধ্যমে অবাধে বিনা শুল্কে আমদানি পণ্য পাচার হওয়ায় দীর্ঘ ১ যুগ যাবত প্রতিবছর এ বন্দর থেকে কাস্টমস কর্মকর্তা ও চোরাকারবারিরা আঙুল ফুলে কলাগাছ বনে গেলেও সরকার হারাতে থাকে শত শত কোটি টাকার রাজস্ব।

জানা যায়, বিদায়ী অর্থবছরে বেনাপোল বন্দর থেকে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে ফেব্রিক্স, পচনশীল কাঁচা পণ্য, ইংগড, ট্রাকের চেচিস, মটরপার্টস এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল কাঁচামাল থেকে। আর সর্বোচ্চ রাজস্ব প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ছিল পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি বিডি, এসএমসিএল নিলয় ও এসএম কর্পোরেশন বলে জানিয়েছে কাস্টমস সূত্র।

স্থানীয় সিএন্ডএফ ব্যবসায়ীরা জানান, বেনাপোল বন্দর থেকে সরকার প্রতিবছর প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আহরণ করলেও বন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সন্তোষ জনক না। বন্দর থেকে পণ্য চুরি ও বারবার বন্দর অভ্যন্তরে রহস্যজনক অগ্নিকান্ডের ঘটনায় অনেক ব্যবসায়ী এখান থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছেন। এছাড়া এ বন্দর দিয়ে বৈধ পথে আমদানি পণ্যের সাথে ফেন্সিডিলসহ বিভিন্ন মাদক দ্রব্য আসতে থাকায় ঝামেলা এড়াতে সচেতন ব্যবসায়ীদের অনেকে অন্য বন্দরে চলে গেছে।

নাম প্রকাশে ভয়ে ভীত বেনাপোল কাস্টমস ক্লিয়ারিং এন্ড ফরওয়ার্ডি এজেন্টের অধিকাংশ কর্মচারীরা জানান, বেনাপোল কাস্টমস হাউসের অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আমদানি-রপ্তানিকারকদের গলার ফাঁস। বেনাপোল বন্দর হয়ে ভারত-বাংলাদেশ আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে প্রত্যেকটি পণ্যের শুল্কায়ন করেন শুল্কায়ন কর্মকর্তারা। সেখানে পণ্যের শ্রেণিভেদে শুল্কায়ন করেন সহকারি রাজস্ব কর্মকর্তা থেকে শুরু করে যুগ্ম কমিশনার পর্যন্ত। যেখানে ফাইল উপস্থাপনের সাথে পণ্য শুল্কায়নের আগেই নগদে প্রত্যেক দপ্তরের কর্মকর্তাদের পরিশোধ করতে হয় সর্বনিম্ন ৩ হাজার টাকা থেকে শুরু করে লক্ষ লক্ষ টাকা।

এদিকে অধিকাংশ সিএন্ডএফ এজেন্ট ব্যবসায়ীরা জানান, শাড়ি, থ্রি-পিছ, কসমেটিক্স, ব্লাঙ্ককে টস, মেশিনারিজ পার্টস, সার্জিক্যাল আইটেম, চকলেটসহ আমদানিযোগ্য লাভজনক অনেক পণ্য দীর্ঘদিন যাবত ব্লাকের মাধ্যমে বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট কাস্টম হয়ে কাস্টমসের কতিপয় অসাধু সিন্ডিকেট কর্মকর্তা-কর্মচারিদের সহযোগিতায় শুল্কফাঁকি দিয়ে দেশে প্রবেশ করছে। এতে চেকপোস্ট কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তার অবৈধ পণ্য পাচারকারী সিন্ডিকেটের সদস্য সহকারি রাজস্ব কর্মকর্তা (এআরও) জুলহাস, না ইম, ইমরান, লিঙ্কন, দিদার বক্স, আনিছুর রহমান আনিছ, শরিফ,  ছাবিরা, সিপাই মতিন, নাজমুল, ট্যান্ডেল সাদ্দাম হোসেন, শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তা, আনসার সদস্য আনিছুর, শামীম, নাসিম রেজা, সুমনসহ কতিপয় কর্মকর্তারা রাতারাতি কোটিপতি বনে গেলেও
আমদানিকারকরা সরকারের শুল্ক দিয়ে বৈধপথে আমদানি বাণিজ্যে লোকসান গুনতে গুনতে বন্ধ করে দিয়েছে এ ধরনের পণ্য আমদানি। একইসাথে প্রতিবছর সরকার হারাচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আয়।

কাস্টম সূত্রে জানা যায়, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে বেনাপোল কাস্টমস হাউসে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ হাজার ৯৬৬ কোটি টাকা, সেখানে আদায় হয়েছিল ৫ হাজার ৭৮৬ কোটি টাকা। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় কম হয় ১৮০ কোটি টাকা। ২০২১-২২ অর্থ বছরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬২৪৫ কোটি টাকা, আদায় হয়েছিলো ৪৫৯৯ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। এতে রাজস্ব ঘাটতি হয় ১৬৪৫ কোটি ৮ লাখ টাকা। তবে, সংশোধিত রাজস্ব আয় ৫১৫৮ কোটি টাকার বিপরীতে ঘাটতির পরিমান ৫৫৮ কোটি ৮ লাখ।

তথ্য অনুযায়ী, ২০২০-২১ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬ হাজার ২৪৪ কোটি ৫৭ লাখ টাকা, সেখানে আদায় হয়েছিল ৪ http://cricket.banglaconverter.org/হাজার ১৪৫ কোটি ১৪ লাখ টাকা। ওই বছর ঘাটতি ছিল ২ হাজার ৯৯ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রাজস্ব ঘাটতি হয়েছিল ৩ হাজার ৩৯২ কোটি টাকা, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ঘাটতি ১১৪৫ কোটি টাকা, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ঘাটতি ১৭৯ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।

তবে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৪৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা রাজস্ব বেশি আদায় হয়েছিল, আবার  ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ঘাটতি ২০৩ কোটি টাকা, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ঘাটতি ৮ কোটি ৭১ লাখ টাকা, ২০১৩-১৪ তে ঘাটতি ১৩৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকা, ২০১২-১৩ তে ঘাটতি ৪৫২ কোটি ৮৯ লাখ এবং  ২০১১-১২ অর্থবছরে ঘাটতির পরিমান ছিল ১৯৪ কোটি টাকা।

তবে, এবারের (২০২৩-২৪) অর্থবছরে রাজস্ব আহরণে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বেনাপোল বন্দরের কাস্টম সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। অধিকাংশরা বলেছেন, এবার দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃক বেনাপোল কাস্টম হাউসের অধিনে কর্মরত ঘুসখোর কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করে তাদের নামে-বেনামে বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবসহ নগদ অর্থ ও সম্পত্তির খোঁজ-খবর নিলে বেরিয়ে আসবে অনেক অজানা তথ্য। বেরিয়ে আসবে নতুন চাকুরিতে প্রবেশকারিদের কর্মকর্তাদেরও অজ্ঞাত আয়ের পরিধি। তাতে, হয়রানি এড়িয়ে একদিকে এ বন্দর দিয়ে সুষ্ঠভাবে ব্যবসা বাড়াতে পারতে ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে সরকারের বাড়তে থাকবে প্রতিবছর হাজার হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আয়।

বেনাপোল কাস্টম হাউসের ডেপুটি কমিশনার মির্জা রাফেজা সুলতানা বলেন, বেনাপোল কাস্টম হাউস কমিশনারের সঠিক দিকনির্দেশনায় এবার আমরা রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছি। এখানে কর্মকর্তা-কর্মচারিদের মধ্যে জবাবদিহিতা ও কাজের প্রতি স্বচ্ছতা বেড়েছে। আগামীতে এ রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন অব্যাহত থাকবে। 

মুনতাসির/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com