
যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে বিপদসীমার ১২ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। বসতভিটা ও আশপাশে পানি প্রবেশ করায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছে শতশত পরিবার।
রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। আমন, পাট ও শাক সবজি ক্ষেত তলিয়ে ফসল নষ্ট হওয়ায় কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ছে। তাঁত কারখানা বন্ধ হওয়ায় শ্রমিকরা বেকার হয়ে পড়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তলিয়ে যাওয়ায় পাঠদানে ব্যাঘাত ঘটছে। অন্যদিকে, পানি বাড়ায় যমুনার অরক্ষিতঅঞ্চলে তীব্র ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। ভাঙ্গনে ইতোমধ্যে সদর উপজেলার কাওয়াকোলা, কাজিপুরের খাসরাজবাড়ী, শাহজাদপুরের পাঁচিল, জালালপুরে প্রায় সহ¯্রাধিক বসতভিটা, গুচ্ছ গ্রাম, মসজিদ ওহাসপাতাল বিলীন হয়ে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্র জানায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধ হার্ড পয়েন্টে যমুনা নদীর পানির সমতল রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ দশমিক ২ মিটার। সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৬ ঘন্টায় ১১ সে.মি পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১২ সে.মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। (বিপদসীমা ১২ দশমিক ৯০ মিটার)।
অন্যদিকে কাজিপুর মেঘাই পয়েন্টে যমুনা নদীর পানির সমতল রেকর্ড করা হয়েছে ১৪দশমিক ৭৪ মিটার। সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৬ ঘন্টায় ১৪ সে.মি পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৬ সে.মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। (বিপদসীমা ১৪ দশমিক ৮০ মিটার)। সদর উপজেলার বাঐতারা গ্রামের বাসিন্দা আফজাল হোসেন জানান, পানি বৃদ্ধির ফলে রাস্তাঘাট ও বসতভিটা তলিয়ে গেছে। চলাফেরা ও রান্না করা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে বাথরুমের সমস্যা বেশি দেখা দিয়েছে। শাকসবজি ফসল তলিয়ে যাওয়ায় চরম ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও বাঐতারা এলাকার তাঁত কারখানাগুলোতে পানি উঠে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শ্রমিকরা অলস সময় পার করছে। আয় রোজগার না থাকায় দিনাতিপাত চালানো কষ্টকর হয়ে পড়েছে।
অন্যদিকে, পাঁচিল গ্রামের বাসিন্দা আলহাজ্ব জানান, পানি বাড়ায় এ অঞ্চলে তীব্র ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। ভাঙ্গনে বসতভিটা বিলীন হয়ে যাওয়ায় সবাই নি:স্ব হয়ে পড়ছি। কাওয়াকোলা ইউপি চেয়ারম্যান জিয়া মুন্সী জানান, একদিকে বন্যার কারনে বসতবাড়ীতে পানি ওঠে অন্যদিকে তীব্র ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে কাওয়াকোলার তিন শতাধিক বসতভিটা নদীগর্ভে চলে গেছে। কিন্ত পাউবো কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেনি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবার্হী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান জানান, আরো দুই—তিন দিন যমুনার নদীর পানি সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে বেড়ে মাঝারী ধরনের বন্যার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও ভাঙ্গন দেখা দেয়ায় কিছু কিছু পয়েন্টে জিওব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে চরাঞ্চল ভাঙ্গনে প্রকল্প না থাকায় ব্যবস্থা গ্রহন করা সম্ভব নয়।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর