• ঢাকা
  • ঢাকা, মঙ্গলবার, ০৪ মার্চ, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ৯ মিনিট পূর্বে
রাশেদুল ইসলাম রাশেদ
গাইবান্ধা থেকে
প্রকাশিত : ০৫ জুলাই, ২০২৪, ০৩:১৭ দুপুর
bd24live style=

গাইবান্ধায় ২০ হাজার পরিবার পানিবন্দি!

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল এবং টানা কয়েক দিনের ভারি বৃষ্টির ফলে গাইবান্ধায় তিস্তা নদী ছাড়া সবগুলো নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে জেলার সদর, ফুলছড়ি, সাঘাটা ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলাসহ চার উপজেলা। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে চার উপজেলার ২৪টি ইউনিয়নের অন্তত ২০ হাজার পরিবার। পানিতে তলিয়ে গেছে আউশ ধান, পাট, ভুট্টা ও আমন বীজতলা। এছাড়া তলিয়ে গেছে পুকুর ও মাছের ঘের। বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে জেলার ৮০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

গাইবান্ধার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, শুক্রবার সকাল ছয়টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি জেলার ফুলছড়ি উপজেলার তিস্তামুখ পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৮৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া ঘাঘট নদীর পানি জেলা শহরের নতুন ব্রিজ পয়েন্টে ৩৫ সে.মি. বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৪৪ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

অপরদিকে, জেলার করতোয়া নদীর পানি গোবিন্দগঞ্জের কাটাখালি পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় ২৯ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেলেও বিপদসীমার ১৪৫ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে এবং তিস্তা নদীর ২৮ সে.মি কমে বিপদসীমার ৬১ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

গাইবান্ধার যমুনা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলার চার উপজেলার নিম্নাঞ্চল ও নদী তীরবর্তী এলাকায় ইতোমধ্যে বন্যা দেখা দিয়েছে। চার উপজেলার ২৪টি ইউনিয়নের প্রায় ২০ হাজার (সরকারি হিসেবে) মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

জেলা প্রশাসনের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত গাইবান্ধার সদর উপজেলার ২টি ইউনিয়ন, সুন্দরগঞ্জে ৭টি, সাঘাটা উপজেলায় ৮টি ও ফুলছড়ি উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এই ২৪ ইউনিয়নে পানিবন্দি ১৭ হাজার ৮২০টি পরিবার। এরমধ্যে গাইবান্ধা সদর উপজেলায় ২ হাজার ১৫০টি , সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় ৪ হাজার ৭০০টি, সাঘাটা উপজেলায় ৫ পাঁচ হাজা ১৭০টি ইউনিয়ন ও ফুলছড়ি উপজেলার ৬ হাজার ৮০০টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। যদিও স্থানীয়দের দাবি বাস্তবে পানিবন্দি পরিবারের সংখ্যা আরো অনেক বেশি।

পানিবন্দি মানুষের জন্য স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে মোট ১৮১টি আশ্রয় কেন্দ্রের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এরমধ্যে সাঘাটা উপজেলায় রয়েছে ৩৬টি, সুন্দরগঞ্জে ৪৮টি, ফুলছড়িতে ২৩টি, সদরে ২৪টি, সাদুল্লাপুরে ৩৩টি, পলাশবাড়ীতে ০৬টি ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় ১১টি আশ্রয় কেন্দ্রের ব্যবস্থা রয়েছে।

এদিকে, চার উপজেলার বন্যা কবলিত এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে ও বিদ্যালয়ের ভেতরে বন্যার পানি ওঠায় ইতোমধ্যে সদর উপজেলার ১৭টি বিদ্যালয়, ফুলছড়িতে ১৪টি, সাঘাটায় ২১টি এবং সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় ১১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ জেলার মোট ৭০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ। এছাড়াও সাতটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং তিনটি দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষা কার্যক্রমও বন্ধ ঘোষণা করেছে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বিভাগ।

বৃহস্পতিবার দুপুরে পানিবন্দি এসব এলাকার মধ্যে ফুলছড়ি উপজেলার ফুলছড়ি, কঞ্চিপাড়া, উড়িয়া ও ফজলুপুর ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বন্যায় পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে বাড়ি-ঘর, ফসলি জমি। এসব এলাকার চারদিকেই পানি থই থই করছে। নিম্নাঞ্চলের সাথে নদী তীরবর্তী এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়েছে পড়েছে। শিশু-বৃদ্ধ ও গবাদিপশু নিয়ে তারা ধীরে ধীরে বিপদের সম্মুখীন হচ্ছে। পানিবন্দি মানুষদের নৌকা যোগে চলাচল করতে দেখা গেছে। গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন পানিবন্দি এসব পরিবারগুলো। এসব এলাকার পাট, আউশ ক্ষেত পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন এলাকায় নদী ভাঙ্গনে পাট, ভুট্টা, বাদাম, আউশক্ষেত সহ বিভিন্ন ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে বলে জানা গেছে।

এ সময় ফজলুপুর ইউনিয়নের মালেক মিয়া বলেন, গত তিনদিন থেকেই নদীতে পানি বাড়ছেই। পানিবন্দি হয়ে গবাদি পশু, শিশু-বৃদ্ধদের নিয়ে নানা সংকটে দিন যাচ্ছে আমাদের। বন্যায় পাট, ভুট্টা আউশ ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। টিউবয়েল পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় বর্তমানে বিশুদ্ধ পানির সংকট পড়েছি আমরা।

গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান খোরশেদ আলী খান বলেন, বর্তমানে এই ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। শুধু গজারিয়ায় নয় পানিবন্দি সকল এলাকায় বিশুদ্ধ পানির সংকট হয়েছে।

গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক খোরশেদ আলম মোবাইল ফোনে জানান, চলমান বন্যায় ইতোমধ্যে চার উপজেলায় ২ হাজার ৫৪৫ হেক্টর জমির আউশ ধান, পাট, ভুট্টা, বীজতলা ও শাক-সবজি পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। যদি দ্রুত পানি নেমে যায় তাহলে সেসব ক্ষতির আশঙ্কা কম রয়েছে। আর যদি বন্যা স্থায়ী হয় কিংবা আরো বাড়ে তাহলে কী পরিমাণ ফসল নষ্ট হবে তা পরবর্তীতে জানা যাবে।

গাইবান্ধা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম মোবাইল ফোনে বলেন, জেলার বন্যা কবলিত চার উপজেলার অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চারদিকেই থই থই পানি। এরমধ্যে কিছু স্কুলের মাঠে ও শ্রেণিকক্ষে পানি ঢুকে পড়েছে এবং কিছু এলাকায় রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় বিদ্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। ফলে ওইসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা কেউই স্কুলে যেতে পারছে না। যার কারণে সেইসব বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেই বা পানি নেমে গেলেই পূর্বের ন্যায় সকল বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম চালু হবে।

গাইবান্ধার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাফিজুল হক জানান, উজানের ঢলে অব্যাহত পানি বৃদ্ধির ফলে ঘাঘট ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে সুন্দরগঞ্জ, সদর, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার নিম্নাঞ্চলসহ বেশ কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে বন্যা পরিস্থিতি আরো কিছুটা বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সার্বিক পরিস্থিতির উপর সার্বক্ষণিক নজর রাখছে এবং পরিস্থিতি মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

শাকিল/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com