
চুয়াডাঙ্গায় বৃষ্টির অজুহাতে অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে সব ধরনের কাঁচা সবজির দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে রসুন, পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ, বেগুন ও মাছ-মাংসের দাম আকাশ ছোঁয়া। সবজির সাথে পাল্লা দিচ্ছে আমিষ ও মসলার বাজারও। গতকাল চুয়াডাঙ্গা নিচের বাজার ও অন্যান্য সব বাজার ঘুরে এই দামের চালচিত্র দেখা গেছে।
চুয়াডাঙ্গার নিচের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গেল কয়েকদিন ধরে চুয়াডাঙ্গায় থেমে থেমে চলছে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি। এমন অবস্থায় চুয়াডাঙ্গায় নিচের বাজারসহ অন্যান্য সব বাজারে কাঁচা সবজির কিছুটা সংকট দেখা দিয়েছে। এ সংকটে বাজার থেকে উধাও হয়ে গেছে বেগুন। এজন্য বেগুনের দাম কেজিতে ৬০ টাকা বেড়ে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। এছাড়া সব ধরনের সবজি কেজিতে ২০ টাকা বাড়তি। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে পাইকারি পর্যায়ে পেঁয়াজ কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে। আর রসুনের দাম কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে হয়েছে ২০০ টাকায়। ঝাঁঝ বেড়েছে কাঁচা মরিচের। কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে মরিচের দাম ১৮০ টাকা। আদার দামও নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে দিনকে দিন। এখন এক কেজি আদার দাম ৩০০ টাকা। কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে আলুর দাম ৫৫ টাকা। ডাল কিনতে গিয়ে ক্রেতা সাধারণ মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। এক কেজি কলাইয়ের ডালে ৪০ টাকা বেড়ে ৯০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। আর অন্যান্য সব ধরনের ডাল কেজিতে ১০ টাকা বাড়তি।
স্বস্তি নেই মসলার বাজারে। প্রতিটা মসলার দাম আকাশ ছোঁয়া। সব থেকে দাম বেশি এলাচের। কেজিতে এই মসলার দাম ২ হাজার ৮০০ টাকা বেড়ে ৩ হাজার ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে। অপরদিকে, দামে স্বস্তি ফিরেছে বোতলজাত সয়াবিন তেল, ডিম, চিনি, আটা ও সব রকমের চালের। তবে অস্বস্তি রয়েই গেছে সব ধরনের প্যাকেটজাত পণ্যে। এই পণ্যগুলো প্যাকেট প্রতি ৩ টাকা বাড়তি।
দামে স্বস্তি নেই আমিষের বাজারে। বৃষ্টির কারণে বাজারে সব ধরনের মাছের আমদানি কম। তাই বড় ধরনের মাছ কেজিতে ৫০ টাকা বাড়তি। আর ছোট সব ধরনের মাছ কেজিতে ৩০ টাকা বেড়েছে। আগের দামেই বিক্রি করা হচ্ছে গরুর ও খাসির মাংস। এদিকে নিম্ন আয়ের মানুষের আমিষ পণ্য ব্রয়লার মুরগি কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কেউ কেউ ২৮০ টাকাও হাঁকাচ্ছেন। সোনালি ও প্যারিসের মুরগির মাংস কেজিতে ৩০ টাকা বাড়তি। আর দেশি জাতের মুরগির মাংসের দাম আকাশ সমান। দেশি মুরগির দাম ৬৫০ টাকা কেজি।
বাজারে আসা এক ক্রেতা শাজহান আলী বলেন, বাজারের সব জিনিসের দাম বেশি। মুরগির মাংস কেনার তো কোনো কায়দা নেই। এভাবে সব খাদ্য পণ্যের দাম বাড়তে থাকলে আমরা সাধারণ জনগণ কিভাবে খাদ্যদ্রব্য কিনবো সেটাই এখন ভাবার বিষয়। আবার সবজি বাজারে গেলে ব্যাগ হাতেই ফিরে আসতে হচ্ছে।
আরেক ক্রেতা জাহিদুল ইসলাম বলেন, শুধু যে বৃষ্টির অজুহাতে জিনিসের দাম বাড়ে তা নয়। নিত্যপণ্যের দাম প্রতিদিন ওঠানামা করে। আর এই নিচের বাজারের সব ব্যবসায়িরা সিন্ডিকেট করে দাম নিয়ন্ত্রণ করে। ব্যবসায়িরা তাদের পণ্যে ইচ্ছে মতো দাম হাকায়। সবজির দাম এতো বেশি হয় আগে জানা ছিল না।
এ বিষয়ে জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক সজল আহম্মেদ বলেন, বাজারে এখন মসলার দাম মাংসের দাম ও অন্যান্য কিছু পণ্যের দাম ওঠানামা করছে। নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে কেউ যেন দাম বৃদ্ধি না করে সেজন্য প্রশাসন থেকে ব্যবসায়িদের সচেতন করা হয়েছে। আর বাজার মনিটরিং অব্যাহত আছে। বাজার নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সরকার সব সময় পদক্ষেপ নিচ্ছে এবং সকল কার্যক্রম অব্যাহত আছে।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর