• ঢাকা
  • ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • শেষ আপডেট ৭ মিনিট পূর্বে
মাসুদ রেজা শিশির
রাজবাড়ী প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৬ জুলাই, ২০২৪, ০৭:২০ বিকাল
bd24live style=
ছাগলকাণ্ডের মতিউরের সাথে ফোনালাপ ফাঁস

রাজস্ব বোর্ডের দ্বিতীয় সচিব আরজিনা খাতুনের সম্পদের পাহাড়

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (মূসক মনিটরিং, পরিসংখ্যান ও সমন্বয়) বিভাগের দ্বিতীয় সচিব হিসেবে আরজিনা খাতুন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে কর্মরত থাকাকালীন কোটি কোটি টাকা অবৈধভাবে আয় করেছেন।

এসকল দুর্নীতির অর্থ দিয়ে ঢাকা ও রাজবাড়ীতে গড়ে তুলেছেন সম্পদের পাহাড়। দুর্নীতি দমন কমিশনে এমন অভিযোগ দায়ের করেছেন ফেয়ার অ্যান্ড সন্স কোম্পানি লিমিটেডের পক্ষে মোঃ ইসতিয়াক আহমেদ রেজা নামের জনৈক এক ব্যক্তি। অভিযোগটি এখন অনুসন্ধান পর্যায়ে রয়েছে।

ছাগল কাণ্ডে ফেঁসে যাওয়া মতিউর রহমানের সাথে সখ্যতা ও ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে। এ নিয়ে রীতিমতো এলাকায় চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনার ঝড়।

দুদকে দাখিলকৃত অভিযোগে বলা হয়েছে, আমদানি পণ্য খালাসের নামে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের থেকে হাতিয়ে নিতেন মোটা অঙ্কের টাকা। অনেক সময় পণ্য খালাসের কাজ না হলেও ফেরত দিতেন না ঘুষের টাকা। এভাবে দুর্নীতির টাকায় তিনি গড়েছেন কোটি কোটি টাকার সম্পদ। একইসঙ্গে তিনি স্বর্ণ চোরাকারবারিদের সঙ্গে যোগসাজশে হাতিয়েছেন প্রায় ৬ কোটি টাকার স্বর্ণ।

অভিযুক্ত এ কর্মকর্তা আরজিনা খাতুন আগে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের উপ-কমিশনার ছিলেন। এক বছর আগে চট্টগ্রাম থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে বদলি করা হয় তাকে। চট্টগ্রামে থাকাকালীন তার ঘুষের টাকা লেনদেনের বাহক ছিলেন তার বন্ধু আবু তাহের, অফিসের পিয়ন মোঃ ইলিয়াস ও গাড়িচালক শাহাজাহান আকতার।

রাজবাড়ি জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার তালুকপাড়ার গ্রামের আহমেদ আলীর মেয়ে আরজিনা খাতুন। তার বিরুদ্ধে দুদকে দেওয়া অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, অবৈধভাবে উপার্জন করা অর্থে ৫০০ ভরি স্বর্ণ কিনেছেন আরজিনা খাতুন। তার বার্ষিক আয়কর নথিতে উল্লেখ করেছেন, বিয়ের সময় ১০০ ভরি স্বর্ণ উপহার পেয়েছেন। কিন্তু তার বিয়ের কাবিননামায় এসব স্বর্ণের কথা উল্লেখ নেই।

অভিযোগে আরও বলা হয়, আরজিনা ১০০ ভরি স্বর্ণ কিনেছেন রয়েল ঢাকার মালাবার দোকান থেকে। বাঁকি ৩০০ ভরি স্বর্ণ কিনেছেন ঢাকার আপন জুয়েলার্স ও ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড দোকান থেকে। বর্তমানে এসব স্বর্ণের মূল্য অন্তত ৬ কোটি টাকা। দেশের বেশ কয়েকটি ব্যাংকের লকারে ও ক্রয়কৃত দোকানে স্বর্ণগুলো বন্ধক রেখেছেন তিনি।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ক্রয়মূল্য গোপন করে ঢাকার মিরপুরে একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে দ্বিতীয় সচিব আরজিনা খাতুন। ফ্ল্যাটটি কিনেছেন ২ কোটি টাকায়। কিন্তু কেনার চুক্তিনামায় উল্লেখ করেছেন ১ কোটি ২১ লাখ টাকা। এছাড়া ফ্ল্যাট কেনার পর সেখানে ইনটেরিয়র ডিজাইনের পেছনে খরচ করেছেন ২৭ লাখ টাকা, ফ্ল্যাটের ইলেক্ট্রনিক্স ও ফার্নিচারের পেছনে ব্যয় করেছেন ৩৫ লাখ টাকা। তবে ব্যাংক থেকে ঋণ নিলেও তা ফ্ল্যাট কেনার এক বছর পর।

এছাড়া আরজিনার নিজস্ব একটি প্রাইভেট কার রয়েছে, যার নম্বর গ-১৬-৭৪৫৮। ওই কারটি নিজের অর্থ দিয়ে কেনা হলেও কারটি সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠান ‘আনবি লজিস্টিক লিমিটেডের নামে রেজিস্ট্রেশন করেন। ওই সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ীও কাস্টমস কর্মকর্তার সঙ্গে দুর্নীতিতে জড়িত বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

দুদকে দেওয়া অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, কাস্টমসের চাকরির আগে আরজিনা খাতুনের বাড়ি ছিল ২০ ফিটের একটি টিনের ঘর। ওই টিনের ঘরের একটি অংশ পাটিশান দেওয়া ছিল। সম্প্রতি তার গ্রামের বাড়িতে ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করেছেন আলিশান বাড়ি। ফার্নিচার ও ইলেক্ট্রনিক্স খাতে ব্যয় করা হয়েছে আরও অন্তত ৩৫ লাখ টাকা।

অভিযোগে বলা হয়, সাবেক কাস্টমস কর্মকর্তা আরজিনা খাতুনের গ্রামের বাড়ির বাল্যবন্ধু হিসেবে সবার কাছে পরিচিতি মোঃ আবু তাহের। তিনি এয়ারপোর্ট সংলগ্ন কাওলায় ব্যবসা করেন। আরজিনা চট্টগ্রাম কাস্টমসে থাকাকালীন পিয়ন ইলিয়াস ও তার গাড়িচালক শাহজাহান আকতারকে দিয়ে টাকা পাঠাতেন দুটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে। একটি নিরো এন্টারপ্রাইজ, অপরটি বেঙ্গল ট্রেডিংয়ের নামে। এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডে অ্যাকাউন্ট গুলো রয়েছে।

অভিযোগে আরও বলা হয়, আরজিনা তার বাবা আলী আহমেদের কাছে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি এলাকায় সোনালী ব্যাংক এবং মা বাবার বিকাশে টাকা পাঠাতেন । শুধু তাই নয়, তিন কোটি টাকা ব্যয়ে তার আপন দুই ছোট ভাইয়ের নামে ৪০ বিঘা জমি ক্রয় করেছেন আরজিনা। বর্তমানে সেখান থেকে ৩০ বিঘা জমি বন্ধক রাখা হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয় অভিযোগে।

এসব অভিযোগের বিষয়ে আরজিনার গ্রামের বাড়ী রাজবাড়ি জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের তালুকপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখাযায়, সেই টিনের ঘরটি এখন আর নেই। সেখানে আলিসান বাড়ী তৈরী করা হয়েছে। তার বাড়ীতে গেলেও কাউকে পাওয়া যায়নি।

তালুকপাড়া গ্রামের বেশ কয়েকজন বলেন, আহম্মদ আলী একজন দিনমজুর। মাছ শিকার ও চাষাবাদ করে সংসার চলতো। ২ ছেলে, এক মেয়ে তার। ২ ছেলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে চাকুরি করেন। আর মেয়ে আরজিনা খাতুন। অল্প দিনেই অনেক সম্পদ গড়ে তুলেছেন। নারুয়া বাজারে জমি ক্রয় করে ঘর নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েছেন। বালিয়াকান্দি শহরে ও রাজবাড়ি শহরে বাড়ী নির্মাণ করেছেন। মাঠে ১০-১২ পাখি (২২ শতাংশ পাখি) ক্রয় করেছেন। ব্যাংকে টাকা আছে কিনা বলতে পারবো না। তবে ৩ ছেলে মেয়ে চাকুরী করার পর অল্প কিছু দিনের মধ্যেই আর্থিক অবস্থা পাল্টে গেছে।

নারুয়া বাজারে জমি ক্রয় করে ঘর নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েছেন আরজু নামে এক ব্যবসায়ীর নিকট। তিনি বলেন, আরজিনা খাতুনের ভাই মতিন ও মেহের দুজন সেনাবাহিনীর চাকুরী করে। মতিন মিশনে যাওয়ার পর দেশে এসে বাজারের জমি ক্রয় করে টিনের ঘর নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েছে। তবে এটা আরজিনার কিনা বলতে পারবো।

নাম না প্রকাশের শর্তে একজন মাহেন্দ্র চালক বলেন, আরজিনা খাতুনের মাকে একটি ধর্মীয় উপাসনালয়ে নিয়ে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে তার ৭০ হাজার টাকা মূল্যের একটি স্বর্ণের চেইন হারিয়ে যায়। পরে আরজিনাকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, ও নিয়ে চিন্তা করার দরকার নেই, এটা আমার এক মিনিটের কামাইয়ের সমান নয়।

আব্দুল আলিম নামে এলাকার একজন বাসিন্দা বলেন, বিভিন্ন ধরনের কথাবার্তা শুনছি। ছাগলকান্ডের মতিউরের সাথে তার নাকি ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। মাত্র ৩ বছরে এত সম্পদ হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত আরজিনা খাতুনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সব অভিযোগ মিথ্যা ও কাল্পনিক উল্লেখ করে বলেছেন, তার স্বামীকে তালাক দেওয়ার পর থেকেই এ ভাবে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করছে। তিনি এ বিষয়ে মামলা দায়ের করেছেন। উলটো তার বিরুদ্ধেও মামলা করেছেন। এখন তিনি চরম অশান্তির মধ্যে রয়েছেন। তবে দুদক ডাকলে তার জবাব দিবেন।

সালাউদ্দিন/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com