
ঘূর্ণিঝড় রিমালে বরগুনার ৩ শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অনেকগুলোর শ্রেণিকক্ষই অব্যবহারযোগ্য অবস্থায় পড়ে রয়েছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা করে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ দেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে বরগুনায় ৩০৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ১৪৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং বাকি ১৬৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ, মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের প্রতিষ্ঠান।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কারে প্রয়োজন প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকা। তবে প্রাথমিক পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানগুলো সংস্কারে কত টাকা লাগতে পারে, তা এখনো নিরূপণ করতে পারেননি তারা। এ বিষয়ে খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে।
গত ২৬ ও ২৭ মে ঘূর্ণিঝড় রিমাল উপকূলীয় জেলা বরগুনায় ব্যাপক তাণ্ডব চালায়। প্রবল বাতাসের সঙ্গে ভারী বর্ষণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
ঘূর্ণিঝড় রিমালে আমতলীর ড. শহীদুল ইসলাম কলেজ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়। কলেজের সবগুলো শ্রেণীকক্ষই ভেঙে পড়েছে। তিনি আরো জানান, কলেজের তিনটি ভবনই বন্যায় ভেঙে গেছে। নতুনভাবে ভবন না তুলে পাঠদান করানো যাবে না। এ কলেজের ভবন নির্মাণের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাই।
আমতলী এমএউ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শাহ আলম কবির বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে ভবনের উপর গাছ পড়ে ভবনটি বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। নতুন ভবন নির্মাণ না করা পর্যন্ত বিদ্যালয়ে পাঠদান করানো সম্ভব নয়।
বরগুনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল মুকিত মোল্লা বলেন, জেলায় ১৪৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘুর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বরগুনা সদর উপজেলায় ২২৮ স্কুলের মধ্যে ৫৬টি, আমতলীতে ১৫২টির মধ্যে ১০টি, পাথরঘাটায় ১৪৯টির মধ্যে ১৮টি, তালতলীতে ৭৯টির মধ্যে ২৫টি, বেতাগীতে ১২৯টির মধ্যে ২৫টি ও বামনায় ৬২টির মধ্যে ১০টি স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা করে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ দেওয়ার জন্য ঊর্ব্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।
জেলায় মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, মাদ্রাসাসহ ১৬৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঘুর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে পাথরঘাটায় সর্বাধিক ৫১টি, বরগুনা সদরে ৩৭টি, তালতলীতে ২৬টি, বামনায় ২২টি, বেতাগীতে ২০টি ও আমতলীতে নয়টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
জেলা শিক্ষা অফিসার মুহাম্মাদ জসিম উদ্দিন রহমান বলেন, এসব প্রতিষ্ঠান সংস্কারের জন্য প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকা প্রয়োজন। এসব ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ঘুর্ণিঝড়ের পরে লেখাপড়া বিঘ্নিত হচ্ছে। দ্রুততম সময়ে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংস্কারের দাবী জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর