হাইওয়ে পুলিশের কুমিল্লা অঞ্চলের পুলিশ সুপার খাইরুল আলমের বিরুদ্ধে আইজিপির কাছে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ করেছেন পরিবহণ নেতা মোহাম্মদ আলী গত বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের আইনজীবী শাহ মুহাম্মদ বাবর আইজিপির কাছে মোহাম্মদ আলী ও তার মালিকানাধীন ভূঞা ট্রান্সপোর্টএর চালক মানিক শেখের পক্ষে এই অভিযোগটি জমা দেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, অন্যের দ্বারা প্ররোচিত হয়ে এসপি খায়রুল আলম, ফেনী জেলা ট্রাক, মিনি ট্রাক, পিকাপ ও কাভার্ট ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ আলীকে হেনস্তা ও তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সুনাম নষ্ট করার জন্য পাঁয়তারা করছেন।
তার ধারাবাহিকতায় ৩০ মে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিসিক শিল্প নগরী মোড়ে অভিযান চালিয়ে ভূঞা ট্রান্সপোর্ট এর ১৫ থেকে ১৬ টি গাড়ি জব্দ করে মামলা দেয়া হয়। এ সময় মানিক শেখ নামে এক চালককে সকল কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও উলটো পথে গাড়ি চালানোর একটি মামলা দেয়া হয়। মামলা দেয়াড় পরেও তার থেকে সাদা কাগজে সই নেয়। সেই কাগজ দিয়ে মানিক শেখকে বাদী করে মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা করে হাইওয়ে থানা পুলিশ।
এছাড়াও মোহাম্মদ আলীর মালিকানাধীন ফেনী হাইওয়ে থানা পুলিশ সংলগ্ন কুঁড়েঘর কাবাব হাউসকে উচ্ছেদ করতে এসপি খাইরুল নোটিশ পাঠায় সড়ক ও জনপদ বিভাগের কাছে। এই বিষয়ে গাড়ির চালক মানিক শেখ জানান, আমি ২৯ মে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ডিউটি করি। ৩০ মে বিকেল বেলায় আমি পাঁচগাছিয়া থেকে বাইপাস রোডে বিসিক রাস্তার মাথায় উঠার সাথে সাথে আমার গাড়িটি আটক করে পুলিশ।
এ সময় তারা আমার কাছে রিকোজিশন স্লিপ থাকা সত্ত্বেও আমাকে ও আমার গাড়ি জব্দ করে থানায় নিয়ে যায়। পরবর্তী আমাকে দু-দিন ঘুরিয়ে উলটো পথে গাড়ি চালানোর অভিযোগে তিন হাজার টাকা জরিমানা করা হয় এবং আমার কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয়া হয়। পরবর্তী সাদা কাগজ দিয়ে মোহাম্মদ আলী বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা দেয় পুলিশ অথচ এই বিষয়টি আমি কিছুই জানি না। এই বিষয়ে আমি আইজিপি বরাবর এই ঘটনার তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য দরখাস্ত করেছি।
এই বিষয়ে মোহাম্মদ আলী জানান, অন্যের দ্বারা প্ররোচিত হয়ে তার সুনাম ক্ষুণ্ন করার জন্য সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এসপি খায়রুল এই কাজগুলো করছে। আমি প্রায় ২৫ লাখ টাকা খরচ করে সাবেক এসপির অনুরোধে নির্জন এলাকায় আমার ছেলেকে দিয়ে ক্যান্টিনটি স্থাপন করি। এছাড়া আমি দীর্ঘদিন পরিবহণ ব্যবসা করে আসছি। সম্প্রতি এসপি খায়রুলের কর্মকাণ্ডে আমার সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে, তাই আমি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আইজিপি বরাবর আইনজীবীর মাধ্যমে একটি দরখাস্ত দিয়েছি। মোহাম্মদ আলীর আইনজীবী শাহ মুহাম্মদ বাবর জানান, আমার মক্কেল মোহাম্মদ আলী ও মানিক শেখের পক্ষে
খাইরুল আলমের স্বেচ্ছাচারিতার বিষয়টি তদন্তের জন্য আইজিপি বরাবর একটি দরখাস্ত দিয়েছি। দরখাস্তটি গ্রহণ করেছেন, আশা করি তারা তদন্ত করে এসপি খাইরুল আলমের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত পুলিশ সুপার খাইরুল আলম জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ হাইওয়ে কুমিল্লা রিজিয়নে যারা স্টিকার বাণিজ্য করছে তাদের বিরুদ্ধে গিয়ে তাদের গাড়ি জব্দ ও চাঁদাবাজির মামলা দেয়া হচ্ছে। যারা এই স্টিকারগুলো দেয় তারা বলে যে কোনো কাগজপত্রের প্রয়োজন নেই, থানা পুলিশ, কোর্ট সব আমরা দেখবো। এটি হয়রানি নয় বরং রাষ্ট্রের পক্ষে কাজ।
সেদিনের পুরো অভিযানের লাইভ রয়েছে এবং সেটি কোনো জোড়া লাগানো নয়, আনকাট লাইভ। শুধুমাত্র ভুঁইয়া ট্রান্সপোর্ট নয়, যে-সব গাড়িতে স্টিকার পেয়েছি সেগুলোকে জব্দ করেছি। কারো পক্ষে বিপক্ষে নয়, যেটা সত্য সেটিই করেছি। উপস্থিত ড্রাইভার ও হেলপারদের সাক্ষী রেখে আরেকজন ড্রাইভারকে বাদী করে মামলা দিয়েছি, কোনো কারণে বাদীকে টাকা পয়সা দিয়ে তার পক্ষে নিতেও পারে, তবে ঘটনা সত্য।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর