• ঢাকা
  • ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • শেষ আপডেট ৫ মিনিট পূর্বে
প্রচ্ছদ / জাতীয় / বিস্তারিত
নিউজ ডেস্ক
বিডি২৪লাইভ, ঢাকা
প্রকাশিত : ০৯ জুলাই, ২০২৪, ১২:২১ দুপুর
bd24live style=

গ্রামে আবেদ আলীর পরিচয় ‘শিল্পপতি’, হতে চেয়েছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান

ছবি: সংগৃহীত

পিএসসির ড্রাইভার সৈয়দ আবেদ আলী জীবন মাত্র ৮ বছর বয়সে জীবিকার তাগিদে পাড়ি জমিয়েছিলেন ঢাকাতে। সেখানেই কুলির কাজ করতেন। একসময় ফুটপাতে ঘুমিয়ে নিদারুণ কষ্ট করেছেন তিনি। এরপর গাড়ি চালনা শিখে চাকরি নেন পিএসসিতে। তারপর জড়িয়ে পড়েন পিএসসির প্রশ্ন ফাঁস চক্রের সঙ্গে। আর ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। অর্জন করেছেন বিপুল সম্পদ। সঙ্গে ক্ষমতাও। চেয়েছিলেন মাদারীপুর জেলার ডাসার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হতে। দীর্ঘদিন থেকে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচনের জন্য প্রচার প্রচারণাও চালিয়ে যাচ্ছিলেন। 

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সৈয়দ আবেদ আলী জীবন মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার পশ্চিম বেতলা গ্রামের মৃত আব্দুর রহমান মীরের ছেলে। আব্দুর রহমান মীরের তিন ছেলে এক মেয়ের মধ্যে সৈয়দ আবেদ আলী জীবন মেজো। বড় ভাই জবেদ আলী কৃষি কাজ করেন। ছোট ভাই সাবেদ আলী এখনও এলাকায় অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। তাদেরই মেজো ভাই সৈয়দ আবেদ আলী জীবন। এলাকার মানুষের কাছে পরিচয় দিতেন শিল্পপতি হিসেবে। 

আবেদ আলীর ছেলে সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়াম ব্যবহার করতেন দামি গাড়ি। আবেদ আলী নিজেও দামি গাড়িতে চড়ে বেড়াতেন। এলাকায় কেউ জানতোই না যে, তিনি ড্রাইভারের চাকরি করেন। তিনি ঢাকায় রিয়েল স্টেট ব্যবসা করতেন বলেই এলাকায় প্রচার ছিল। কয়েক বছর ধরে এলাকায় ব্যাপক দান খয়রাত করছেন। 

স্থানীয়সূত্রে জানা গেছে, আবেদ আলী জীবনের বিত্ত বৈভব ফুলে ফেঁপে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে মীর পদবি পাল্টে নামের আগে সৈয়দ পদবি ব্যবহার করেন। আবেদ আলী জীবনের উত্থান নিয়ে তার ছেলে সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়াম সম্প্রতি একটি সমাবেশে বক্তব্য দেন। 

তিনি তার বাবার উত্থানের গল্প বলতে গিয়ে বলেন, আমার বাবা একদম ছোট থেকে বড় হয়েছেন। আমার বাবার বয়স যখন ৮ বছর, তখন পেটের দায়ে ঢাকায় চলে গেছেন। ঢাকায় গিয়ে কুলিগিরি করে ৫০ টাকা রুজি দিয়ে তিনি তার ব্যবসা শুরু করেন। এখন তিনি একটি লিমিটেড কোম্পানির মালিক। তিনি কষ্ট করে বড় হয়েছেন। 

এমনটাই দাবি করেন আবেদ আলী জীবনের ছেলে সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়াম। 

তবে সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমে উঠে আসে ভয়ংকর তথ্য। প্রায় একযুগ আগে থেকে বিপিএসসির প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের সঙ্গে জড়িত এই সৈয়দ আবেদ আলী জীবন। এমন খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। 

তবে সৈয়দ আবেদ আলী জীবনের গল্প সিনেমাকেও হার মানাবে। রহস্যে ঘেরা সৈয়দ আবেদ আলী জীবন গ্রামের বাড়ি এসে নেমে পড়েন উপজেলা নির্বাচনের প্রচারণায়। রাজনীতির মাঠে ময়দানে কোটি টাকার গাড়িতে চড়ে গণসংযোগ করেন সৈয়দ আবেদ আলী জীবন ও তার ছেলে ছাত্রলীগ নেতা সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়াম। এলাকায় দান-খয়রাত করতেন বাবা-ছেলে দুহাত ভরে।

সৈয়দ আবেদ আলী জীবন তার গ্রামে কোটি টাকা খরচ করে বিলাসবহুল বাড়ি নির্মাণ করেছেন। সেই বাড়ির পাশে করেছেন মসজিদ। এছাড়াও তিনি রাস্তার পাশে সরকারি জায়গা দখল করে করেছেন গরুর খামার ও নির্মাণাধীন মার্কেট। উপজেলার পান্তাপাড়া ও পূর্ব বোতলা গ্রামে কিনেছেন বিপুল সম্পদ। 

স্থানীয়রা জানান, ঢাকায়ও তার একাধিক বাড়ি রয়েছে। পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় রয়েছে তার থ্রি স্টার হোটেল। সামান্য একজন ড্রাইভার থেকে হঠাৎ করে এমন বিত্ত বৈভবের মালিক হওয়ায় তার সম্পর্কে জানার কৌতুহল সৃষ্টি হয়েছে সাধারণ মানুষের মাঝে। 

সৈয়দ আবেদ আলী জীবন পিএসসি চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক। কিন্তু এলাকার মানুষ জানতোই না। গত কোরবানির ঈদে দামি গাড়িতে চড়ে ১০০ জনকে এক কেজি করে গোস্ত বণ্টন করেন। সেই ভিডিও শেয়ার করেন নিজের ফেসবুকে। 

আবেদ আলীর ছেলে সিয়াম একটি নয়, একাধিক দামি গাড়ি ব্যবহার করেন। সবই দামি, ঝকঝকে। পড়েছেন ভারতের শিলংয়ে। তারপর দেশের একটি ব্যয়বহুল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েও। তিনি ডাসার উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি পদে আছেন। নিজেদের প্রভাব জাহির করার জন্য বড় বড় নেতা ও আমলাদের সঙ্গে ছবি তোলেন বাবা-ছেলে দুজনেই। সেই ছবি ফেসবুকে বুস্ট করে ব্যাপকভাবে প্রচার করেন। 

সৈয়দ আবেদ আলী সম্প্রতি নিজের ফেসবুক পেজে একটি হোটেল নির্মাণের তথ্য তুলে ধরেছেন। গত ১৮ মে প্রকাশিত এক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আমাদের নতুন হোটেলের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করলাম আজ। হোটেল সান মেরিনা, কুয়াকাটা।’ 

সম্প্রতি দেশের একটি বেসরকারি টেলিভিশনের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে বিসিএসসহ ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের তথ্য। বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (বিপিএসসি) ছয় কর্মকর্তা-কর্মচারীর একটি সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। সেই অভিযুক্ত কর্মচারীদের একজন পিএসসি চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী জীবন। 

তবে এসব বিষয়ে জানতে সৈয়দ আবেদ আলী জীবনের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর ও তার ছেলে সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়ামের নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও, তারা ফোন রিসিভ করেননি। তাদের গ্রামের বাড়িও তালাবদ্ধ। 

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, আবেদ আলী পরিবারের সবাই ইউরোপের ভিসা করে রেখেছে আগেই। যে কোনো সময় দেশ ছেড়ে চলে যেতে পারেন। 

এ বিষয়ে মাদারীপুর সচেতন নাগরিক কমিটির সাবেক সভাপতি খান মোহাম্মদ শহীদ বলেন, যারা অস্বাভাবিক সম্পদ অর্জন করেছেন, তাদের নিয়ে সচেতন মহলের প্রশ্ন তোলা উচিত। সরকারের উচিত এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। প্রশ্ন ফাঁস করে বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুন্ন করার কারণেও এদের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত। 

দুর্নীতি দমন কমিশনের মাদারীপুর সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আতিকুর রহমান বলেন, বিষয়টি নিয়ে কেউ অভিযোগ দিলে আমরা প্রধান কার্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করব।

বাঁধন/সিইচা/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com