প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে ও কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১০ জুলাই) সকাল সাড়ে দশটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।
কোটা আন্দোলনের অংশ হিসেবে টানা সপ্তম দিনের মতো অবরোধ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে গান-কবিতা এবং পথনাটকের মাধ্যমে কোটা বৈষম্যের বিরুদ্ধে এ কর্মসূচি পালন করছেন জাবি শিক্ষার্থীরা।
এসময় শিক্ষার্থীদেরকে "আমার সোনার বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই", "কোটা প্রথা নিপাত যাক, মেধাবীরা মুক্তি পাক", "মেধাবীদের কান্না আর না আর না", "মেধা নাকি কোটা, মেধা মেধা" প্রভৃতি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও বায়োটেকনোলজি বিভাগের শিক্ষার্থী আহসান লাবিব বলেন, আমরা সব গ্রেডে অযৌক্তিক এবং বৈষম্যমূলক কোটা প্রথার স্থায়ী সংস্কার চাই। কোটা সংস্কারের বিষয়ে নির্বাহী বিভাগ থেকে সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো। যদি সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার ক্ষুণ্ন করে এমন কোনো রায় আসে তাহলে আমরা দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলে ঢাকার সাথে সমগ্র বাংলাদেশের যোগাযোগ বন্ধ করে দেবো।
আইন ও বিচার ৫১ ব্যাচের শিক্ষার্থী জাইমা জাফরিন বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের দিনব্যাপী বাংলা ব্লকেড কর্মসূচির ফলে যদিও জনদুর্ভোগ হচ্ছে কিন্তু এর মাধ্যমে আমরা সরকারের কাছে যে বার্তাটি পৌঁছে দিতে চাচ্ছি সেটি হচ্ছে, ল' এর রিফ্লেকশন হোক, কিন্তু সেটি অবশ্যই জাস্টিস নিশ্চিত করে। কিন্তু সরকারি চাকরিতে যে ৫৬ শতাংশ কোটা রাখা করা হয়েছে সেটি সম্পূর্ণরূপে অযৌক্তিক এবং ইনজাস্টিস। এটি আমাদের পড়াশোনার যে উৎসাহ সেটিকেই নষ্ট করে দিচ্ছে। তাই আমাদের যে এক দফা দাবি, সকল গ্রেডের অযৌক্তিক কোটা বাতিল করা হোক এবং কোটা সংস্কার করা হোক।
ভূগোল ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী তানজিম আহমেদ বলেন, শুরু থেকে আমাদের দাবি ১৮'র পরিপত্র সম্পূর্ণ বাতিল নয়, কোটা সংস্কার করে সাংবিধানিক ভাবে আইন পাশ করা। আমাদের দাবি অনগ্রসর, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন, মুক্তিযোদ্ধা কোটা, নারী কোটা সহ সকল ধরনের কোটাকে কে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশে নিয়ে এসে অধ্যাদেশ জারি করা। আমরা বলতে চাই, অনতিবিলম্বে যেন আমাদের দাবি মেনে নেয়া হয় এবং সেই আইন পাশ করা হয়।
এ অবরোধে ফলে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে উভয় পাশে যানবাহনের দীর্ঘ সারি তৈরি হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ যাত্রীরা। যাত্রীদের অনেককে যানবাহন থেকে নেমে পায়ে হেঁটেই গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যাত্রা করতে দেখা যায়। তবে রোগী বহনকারী গাড়ি ও জরুরি সেবার গাড়ি ছেড়ে দিতে দেখা গেছে।
এদিকে আজ সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর এক মাসের স্থিতাবস্থা দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। আগামী ৪ সপ্তাহ পর এ বিষয়ে ফের শুনানি হবে।
এ আদেশের ফলে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র বহাল থাকছে।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর