
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জের বাহাগিলী ইউনিয়নের ঝুঁকিপূর্ণ প্রধান সড়কটি স্থায়ীভাবে সংস্কারের দাবিতে ৩ ঘণ্টা ব্যাপী বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি করেছে বাহাগিলী ইউনিয়নবাসী।
এসময় উপজেলা হতে রংপুর ও নীলফামারী মুখী যানবাহন চলাচল প্রায় ৩ ঘণ্টা বন্ধসহ রাস্তার উভয় দিকে প্রায় ২ সহস্রাধিক যানবাহন আটকা ছিল। পরে প্রশাসনের তরফ হতে দ্রুত সংস্কারসহ রাস্তাটির কাজ শুরু করার আশ্বাসে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি তুলে নেয় কর্মসূচিতে অংশ নেয়া ইউনিয়নবাসী।
কিশোরগঞ্জ উপজেলার বাহাগিলী ইউনিয়নের দীর্ঘ এক যুগ যাবৎ ঝুঁকিপূর্ণ প্রধান সড়কটি স্থায়ী সংস্কারের দাবিতে বাহাগিলী ইউনিয়নবাসীর উদ্যোগে আজ বুধবার ( ১০ জুলাই) দুপুর বারো টা হতে বেলা তিন টা পর্যন্ত কিশোরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সংলগ্ন ব্রিজের মোড়ে এ বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি করা হয়েছে। এসময় উপজেলা হতে রংপুর ও নীলফামারীমুখী যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল প্রায় ৩ ঘণ্টা। যানবাহন চলাচল বন্ধ হলে ব্রিজের দু’ পাশে ২ সহস্রাধিক যানবাহন আটকা পড়ে। এতে প্রায় ৬ হাজার জনগণ ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকা পড়ে থাকেন। খবর পেয়ে কিশোরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ পলাশ চন্দ্র মন্ডল এসে দ্রুত কাজ শুরুর আশ্বাস দিলে বিক্ষোভকারীরা মুখের কথায় নয়, লিখিত কাগজ চান যে দ্রæত যাতে রাস্তার কাজ শুরু হয় এবং তারা উপজেলা প্রকৌশলীর কাছে লিখিত চান। পরে উপজেলা প্রকৌশলী মাহমুদুল হাসান এসে বিক্ষোভকারীদের জানান- যতদ্রুত সম্ভব রাস্তার কাজটি শুরু করা হবে। এতেও বিক্ষোভ ও অবস্থানকারীরা সন্তুষ্ট না হয়ে তারা কাজ কবে থেকে শুরু করা হবে তার লিখিত পত্র চান। এসময় বিক্ষোভকারী জানান- বর্ষার সময় যেহেতু রাস্তার কাজ শুরু করা সম্ভব নয়। তাই তারা রাস্তাটি দ্রুত চলাচলের উপযোগী করে দেয়ার দাবি করেন। পরে অফিসার ইনচার্জ পলাশ চন্দ্র মন্ডল, উপজেলা প্রকৌশলী মাহমুদুল হাসান, বাহাগিলী ইউপি চেয়ারম্যান সুজাউদ্দৌলা লিপটন রাস্তাটি পরিদর্শন করেন। এসময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জাকির হোসেন বাবুল উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীদের আশ্বস্ত করেন রাস্তার কাজটি দ্রুত শুরু করা হবে। পরে বিক্ষোভকারীদের নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে এক আলোচনা সভা হয়। সেখানে আজ বুধবার থেকেই রাস্তা চলাচলের উপযোগির কাজ শুরু করা হবে মর্মে কথা হলে বিক্ষোভ ও অবস্থানকারী কর্মসূচি তুলে নেয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার এম এম আশিক রেজা, অফিসার ইনচার্জ পলাশ চন্দ্র মন্ডল, উপজেলা প্রকৌশলী মাহমুদুল হাসান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জাকির হোসেন বাবুল, প্রেস ক্লাব সাধারণ সম্পাদক শামীম হোসেন বাবু, ওই রাস্তাটির কাজের ঠিকাদার, সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য বাবুল হোসেন প্রমুখ।
উপজেলা প্রকৌশলীর (এলজিইডি) কার্যালয় সূত্রে জানা যায়- উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সংলগ্ন ব্রিজ থেকে বাহাগিলী রাস্তার ৬৭১ মিটার ও প্রেট্রোল পাম্প মোড় হতে ভিন্নজগৎ যাওয়া রাস্তার ৫৭৮ মিটার রাস্তা নিয়ে একটি প্যাকেজ করা হয়। প্যাকেজটির প্রাক্কলিত মূল্য ১ কোটি ৪ লক্ষ ৩৫ হাজার ৪৭৩ টাকা। ঠিকাদারের সাথে চুক্তি মূল্য হয় ৯২ লক্ষ ৮৩ হাজার ৭৩৮ টাকা ২৮৭ পয়সা। উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ের ১৮৪৩ স্মারকে ২০১৯ সালের ২ ডিসেম্বর ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয়া হয়। সেখানে ২০১৯ সালের ৮ ডিসেম্বর কাজ শুরুর তারিখ ও কাজ সমাপ্তের তারিখ ২০২০ সালের ৭ ডিসেম্বর উল্লেখ থাকলেও সাড়ে চার বছরেও প্যাকেজের কাজ দু’টি শেষ করা হয়নি।
বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন বাহাগিলী ইউপি চেয়ারম্যান সুজাউদ্দৌলা লিপটন, প্রেস ক্লাব সাধারণ সম্পাদক শামীম হোসেন বাবু, ইউপি সদস্য বাবুল হোসেন, আসাদুজ্জামান জামান, একেএম শাহজাহান, এরশাদ, সুজন প্রমুখ।
বক্তারা জানান- কিশোরগঞ্জ উপজেলার বাহাগিলী ইউনিয়নের প্রধান সড়কটির কাজ শুরু হলেও তা শেষ না করেই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজ বন্ধ করে দেয়। দফায় দফায় উপজেলা প্রকৌশলী ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করা হলে রাস্তার কাজটি করবে করবে করে প্রায় ৪ বছর বন্ধ রেখেছে কাজটি। ফলে চলতি বর্ষায় রাস্তাটির বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্ত হওয়ায় চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এছাড়া বক্তারা আরও জানান- ৪ বছর ধরে রাস্তাটির কাজ শুরু করে শেষ না করায় জনদূভোর্গে পড়েছে ইউনিয়নবাসী।
উপজেলা প্রকৌশলী মাহমুদুল হাসান জানান- ওই রাস্তার ঠিকাদার আজ বুধবার হতে রাস্তাটি যানবাহন চলাচলে মেরামত কাজ করে দিবে এবং দ্রুতই রাস্তাটির সংস্কার কাজ শুরু করার আশ্বাস দেয়ায় বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি তুলে নেয় এলাকাবাসী।
অফিসার ইনচার্জ পলাশ চন্দ্র মন্ডল বলেন- ঠিকাদারকে ডেকে এনে আলোচনা করা হয়েছে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান রাস্তাটি চলাচল উপযোগী করে দিবে এবং ১৫-২০ দিনের মধ্যেই রাস্তার মূল কাজ শুরু করবে বলে আশ্বস্ত করেছেন। এরপরেই বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি তুলে নেয় এলাকাবাসী।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর