ভবিষ্যতে মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ার আশায় নিজ অর্থ কোনো কিছুতে খাটানোকে বিনিয়োগ বলে। আর ভালো বিনিয়োগে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ার সব চেয়ে বড় সুযোগ। আপনি যদি অর্থ বাড়াতে চায় তবে আপনাকে বিনিয়োগ সম্পর্কে শিখতে হবে। বিনিয়োগকে ঝুঁকিমুক্ত করতে হলে জানতে হবে নিরাপদ বিনিয়োগ কিভাবে হয় বা করণীয় কি। লাভজনক বিনিয়োগ নির্ধারণ করতে নিম্নলিখিত কয়েকটি বিষয় বিবেচনা করতে পারেন-
বাজার গবেষণা করুন: বিনিয়োগ করার আগে বাজারের অবস্থা, ট্রেন্ড এবং ভবিষ্যৎ প্রবণতা বিশ্লেষণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই এ বিষয়ে খুঁটিনাটি জানার চেষ্টা করুন। গবেষণা ছাড়া বিনিয়োগ আপনাকে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন করতে পারে এ বিষয়টি মাথায় রাখুন।
ঝুঁকি মূল্যায়ন: বিনিয়োগ কখনো ঝুঁকি ছাড়া হয় না তবু বিনিয়োগের সাথে যুক্ত ঝুঁকি নির্ধারণ করুন। ঝুঁকি যত বেশি, লাভের সম্ভাবনাও তত বেশি হতে পারে! তবে এটি সতর্কতার সাথে মোকাবেলা করা প্রয়োজন। ঝুঁকি শনাক্ত করতে পারলে আপনি পেতে পারেন সফলতা।
বিনিয়োগের লক্ষ্য নির্ধারণ: আপনার বিনিয়োগের লক্ষ্য কি তা নির্ধারণ করুন। এটি স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি, বা দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে। কিন্তু আপনার জন্য কোনটি উপযুক্ত বিনিয়োগের আগে সেটা খুঁজে বের করুন এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুন।
বৈচিত্র্য: একই ঝুড়িতে সব ডিম রাখা উচিত না আমরা সবাই জানি। এটা মেনে বিভিন্ন সেক্টর ও সম্পদ শ্রেণিতে বিনিয়োগ করে পোর্টফোলিও বৈচিত্র্য করুন। এটি ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করবে আপনাকে।
আর্থিক বিশ্লেষণ: বিনিয়োগের আগে আর্থিক বিবরণী, যেমন- ব্যালেন্স শিট, আয় বিবরণী, ক্যাশ ফ্লো বিশ্লেষণ করুন। গুরুত্বপূর্ণ এ বিষয়টি এড়িয়ে গেলে পড়তে পারেন বিপদে।
বাজার বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ: যে বিষয়ে আপনার সুনির্দিষ্ট জ্ঞান নেই সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেয়া বুদ্ধিমানের কাজ। প্রয়োজন হলে আর্থিক পরামর্শদাতাদের বা বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিন।
সঠিক সময় নির্ধারণ: বাজারের অবস্থা বুঝে সঠিক সময়ে বিনিয়োগ এবং প্রয়োজন হলে মুনাফা তুলে নেয়া। সঠিক সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে, ব্যবসায় যেমন ঝুঁকি বাড়ে তেমনি ভালো লাভ থেকে আপনি বঞ্চিত হতে পারেন। তাই সময় অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ সচেষ্ট থাকুন।
লং টার্ম ভিউ: দীর্ঘ মেয়াদি দৃষ্টিভঙ্গি রাখুন, কারণ স্বল্প মেয়াদি বাজার ওঠানামা প্রায়শই বেশি হতে পারে। তাই চিন্তা করুন দীর্ঘমেয়াদি, স্বল্প মেয়াদি সবসময় ভালো ফলাফল নাও আসতে পারে। অপেক্ষার ফল মিষ্টি একথা আমরা সবাই জানি।
রিসার্চ এবং শিক্ষা: বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিভিন্ন বই, আর্টিকেল এবং কোর্স পড়ে জ্ঞান বৃদ্ধি করুন। এ বিষয়ে পরিপূর্ণ ধারণা নেয়ার চেষ্টা করুন। বর্তমান সময়ে রিসার্চ ও শিক্ষার গুরুত্ব অনেক। বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগ করার আগে, সে বিষয়ে পর্যাপ্ত গবেষণা ও রিসার্চ করে থাকে।
এগুলো খেয়াল রেখে আপনি লাভজনক বিনিয়োগ নির্ধারণ করতে পারবেন। আপনার বিনিয়োগ হোক আপনার জীবনের সফলতার মাপকাঠি।
লেখক: ফয়সাল আহমেদ, অতিথি লেখক ও গণমাধ্যমকর্মী।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর