• ঢাকা
  • ঢাকা, রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • শেষ আপডেট ৬ ঘন্টা পূর্বে
শাহীন মাহমুদ রাসেল
কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১১ জুলাই, ২০২৪, ০২:০২ দুপুর
bd24live style=

একটুখানি বৃষ্টি হলেই তলিয়ে যায় কক্সবাজার

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

ভোর রাতে মেঘ ঘনিয়ে এলো ঝুম বৃষ্টি। ৯টায় ঢুকতে হবে অফিসে। প্রস্তুত হয়ে সকাল পৌনে আটটায় বাইরে বেরিয়ে দেখা গেলো গলির সড়কে হাঁটুপানি। রিকশা না পেয়ে প্যান্ট গুটিয়ে কোনোরকম গাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দেখা গেলো মূল সড়কেও হাটু পরিমাণ পানি।

ঘণ্টা দুয়েক বৃষ্টি হলেই এ অবস্থার সম্মুখীন হতে হয় কক্সবাজার শহরের অধিকাংশ মানুষের। একটি বেসরকারি অফিসের কর্মকর্তা মহিউদ্দিন বলেন, কক্সবাজার শহরে একটু বৃষ্টি হলেই সড়কে পানি জমে যায়। পৌরসভায় বসবাস করছি ২০ বছর। কোনো পরিবর্তন নেই। প্রতি বছর শুধু আশ্বাস শুনি। কাজ হয় না। অফিসে যেতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হয়। আজ ভোররাত থেকে যে বৃষ্টি হচ্ছে তাতে সড়কে কোমর পরিমাণ পানি জমে গেছে। বাহন পাওয়া যায় না। পোশাক-আশাক ভিজে যায়। তিনগুণ রিকশা ভাড়া দিয়ে অফিসে যাচ্ছি।

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সকালে শহরের বিভিন্ন সড়ক পানিতে তলিয়ে যেতে দেখা যায়। বেলা গড়াতে বৃষ্টি বাড়ার পাশাপাশি সড়কে বাড়ে পানি। ভোগান্তিতে পড়েন সব শ্রেণির মানুষ। কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে শহরের কলাতলীর হোটেল-মোটেল জোন, বাজারঘাটা, বার্মিজ মার্কেট, পেশকারপাড়া, হাশিমিয়া মাদ্রাসা, পাহাড়তলী, নুরপাড়া, সিটি কলেজ, বৌদ্ধ মন্দির সড়কসসহ ঝিলংজার বিভিন্ন এলাকায় পানি জমে ভোগান্তির সৃষ্টি হতে দেখা গেছে।

দুর্যোগ, সাধারণ বৃষ্টি কিংবা বর্ষা মৌসুমের বৃষ্টি- যেটাই হোক না কেন জলাবদ্ধতা পৌরসভার মানুষের এসময় সঙ্গী হয়। মূল কথা টানা বৃষ্টি মানেই কক্সবাজার শহরের সড়কে জলাবদ্ধতা। বর্ষা মৌসুমে পানির প্রবাহ বেশি থাকায় জমা পানি অনেক সময় নামতে দেরি হয়। বাড়ে ডেঙ্গুর মতো রোগের উপক্রম।

শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে পৌরসভার বিভিন্ন উদ্যোগ রয়েছে। তবে কোনো উদ্যোগই কাজে আসছে না। প্রতি বছর জলাবদ্ধতা নিরসনের নামে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করছে সংস্থাটি। কিন্তু তার তেমন কোনো সুফল মিলছে না। বৃষ্টি হলেই শহরের প্রধান সড়ক থেকে অলি-গলি পর্যন্ত তলিয়ে যাচ্ছে পানিতে। এমন অভিযোগ স্থানীয়দের।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গেলো কয়েক বছরে নানা উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ হয়েছে কক্সবাজার পৌরসভায়। সড়ক ও ড্রেন নির্মাণ এবং সংস্কারসহ এসব কাজে ব্যয় হয়েছে ১৪৮ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। কিন্তু এবারের বর্ষার শুরু থেকেই শত শত কোটি টাকার এসব উন্নয়ন কাজে আসছে না স্থানীয়দের। বৃষ্টিতে সড়কের ওপর জমে হাঁটু পরিমাণ পানি। চলে না কোনো যানবাহন। আর ড্রেনের পানি ঢুকে পড়ে পর্যটন শহরের দোকান ও হোটেলের ভেতর।

পৌরসভার টার্মিনাল থেকে বাজার ঘাট পর্যন্ত ১৯ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার সড়কের নিচু অংশ পানিতে ডুবে যায়। এছাড়া নতুন ও সংস্কার করা ২১ দশমিক ৯ কিলোমিটার ড্রেনের পানিও জমে যায় সড়কে।  

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, ড্রেনে ময়লা আবর্জনা ফেলে ভরাটের কারণে এমন দুরবস্থা। এছাড়া সময়মতো ড্রেন পরিষ্কার না করাকেও দুষছেন তারা। 

আশঙ্কা করা হচ্ছে, চলমান বর্ষা মৌসুমে ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হলে জলাবদ্ধতায় আরও নাকাল হবে পৌরবাসী। তবে পৌরসভা সংশ্লিষ্টরা জানান, শহরে জলাবদ্ধতা নিরসনে আরও মাসখানেক আগ থেকেই কাজ শুরু করেছেন। এখন সম্ভাব্য জলাবদ্ধতাপ্রবণ এলাকাগুলোর ড্রেন, নালা, খাল পরিষ্কারে কাজ চলছে। আর যেসব এলাকায় জলাবদ্ধতা বেশি হয়, তা সমাধানে আলাদা প্রকল্প নিচ্ছে সংস্থাটি।

বৃহস্পতিবার ভোরে কক্সবাজারে টানা কয়েক ঘণ্টা বৃষ্টি হয়। ৮৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতে নগরের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এ বৃষ্টিতে কোথাও হাঁটুপানি, কোথাও কোমরপানি পর্যন্ত জমে যায়। বৃষ্টির পানি জমে শুধু ভোগান্তি নয়, মৃত্যুর ঘটনাও ঘটে। 

টানা বৃষ্টিতে পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় যথারীতি জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। মূল সড়কেই জমে গেছে হাঁটুপানি। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ। বৃষ্টিতে অনেক দোকানপাট বন্ধ। মার্কেটের যেসব দোকান খোলা সেগুলোতেও ক্রেতা নেই। অলস সময় পার করছেন বিক্রেতারা।

বৃহস্পতিবার সকালে পাহাড় ধসে পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডে জমিলা বেগম (৩০) নামে এক নারী ও মো. হাসান এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এরআগে বিভিন্ন সময় মৃত্যুর ঘটনা ঘটলে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হলেও বর্ষাকাল যেতেই মানুষ ভুলে গেছে। সেই জলাবদ্ধতারও কোনো সুরাহা হয়নি।

সৈকত পাড়ার বাসিন্দা জিয়াউল হক জিয়া। তিনি একটি রিসোর্টের ম্যানেজার। আলাপকালে জিয়া বলেন, আগে বর্ষা মৌসুমে পানি জমেছিল শহরের অন্যান্য এলাকায়। এ বছর বৃষ্টি হলেই হোটেল-মোটেল জোনের কলাতলীর প্রধান সড়কেও পানি জমে। সড়কের পানি নামতে ঘণ্টার পর ঘন্টা লাগে যায়। অথচ প্রতি বছর বর্ষার আগে জলাবদ্ধতা নিরসনের কথা বলেন জনপ্রতিনিধিরা। কিন্তু এ সমস্যা স্থায়ীভাবে সমাধানের কোনো উদ্যোগ নেই।

তার মতে, অপরিকল্পিত উন্নয়ন ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা ধ্বংস করায় এমন প্রতিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

উপজেলা গেটের দোকানি মামুন বলেন, বিগত সময়ে বৃষ্টিতে সদর উপজেলা গেইট তলিয়ে যেত। মনে করেছিলাম, রাস্তাঘাট উন্নয়নের পাশাপাশি ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নতি হবে; কিন্তু যে লাউ সেই কদু। এখন একটু বৃষ্টি হলেই পানিতে দোকানের অধিকাংশ মালামাল নষ্ট হয়ে যায়। একটু বৃষ্টি হলেই আতঙ্ক লাগে। কিন্তু এ জলাবদ্ধতা নিরসনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তেমন কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।

আগে বৃষ্টি হলে শহরে যে পরিমাণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হতো সেটা অনেকাংশে সমাধান হয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মাহবুবুর রহমান চৌধুরী। তিনি বলেন, এক সময় বিভিন্ন প্রধান সড়কেও কয়েকদিন জলাবদ্ধতা থাকতো। এখন আর প্রধান সড়কে জলাবদ্ধতা হয় না। অল্প সময়ের মধ্যেই পানি ড্রেন, নালা গড়িয়ে খাল-নদীতে চলে যায়। ড্রেনে ময়লা ফেলার কারণে অল্প কিছু এলাকার সড়কে পানি জমে।

মুনতাসির/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com