কুমিল্লা ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকীর উপস্থিতিতে কোটা সংস্কারপন্থি শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করেছে পুলিশ। এতে একাধিক গণমাধ্যমকর্মীসহ গুরুতর আহত অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন আনসার ক্যাম্পের সামনে শিক্ষার্থীরা ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করার উদ্দেশ্যে বের হলে পুলিশের বাঁধায় এ ঘটনা ঘটে।
সরেজমিনে দেখা যায়, পুলিশ ও ডিবির প্রায় শতাধিক সদস্য শিক্ষার্থীদের বাঁধা দিতে গেলে প্রথমে ধস্তাধস্তি হয়। এরপর আবাসিক হল ও মেসের প্রায় সাত-আটশ শিক্ষার্থী এসে যুক্ত হয়ে পুলিশের বাঁধা অতিক্রম করে অগ্রসর হতে চাইলে পুলিশ প্রথমে লাঠিচার্জ করে। এরপর শর্টগান দিয়ে কয়েক রাউন্ড গুলির পাশাপাশি টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। যা কিছুক্ষণ পর তুমুল সংঘর্ষে রূপ নেয়। এসময় শিক্ষার্থীরাও পুলিশকে লক্ষ করে ইট ও পাথর নিক্ষেপ করতে দেখা যায়। পরবর্তী পুলিশের আঘাতে আমাদের সময়ের সংবাদদাতা অনন মজুমদার, দৈনিক ইত্তেফাকের সংবাদদাতা মানছুর আলম অন্তরসহ অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থী শারীরিক ভাবে আঘাত প্রাপ্ত হয়। পরে তাঁদের অ্যাম্বুলেন্স যোগে কুমিল্লা মেডিকেলে পাঠানো হয়।
এরপর বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস থেকে মহাসড়কে এসে জড়ো হয়। পরে তাঁরা ধিক্কার ধিক্কার প্রশাসন ধিক্কার, প্রক্টরের চামড়া তুলে নিব আমরা, আমার সোনার বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই সহ নানা স্লোগান দিয়ে মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদ জানান।
১৪ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী হাসান অন্তর বলেন, প্রক্টরের সামনেই শিক্ষার্থীদেরকে মারছে পুলিশ। ওনার ইন্ধন না থাকলে এটা কীভাবে সম্ভব? আমরা এমন সন্ত্রাসী প্রক্টর চাই না। আমরা প্রক্টরের পদত্যাগ চাই।
নাহিদ হাসান নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, প্রক্টরের নেতৃত্বে আগেও ক্যাম্পাসে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। যিনি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে পারেন না উনি কীসের প্রক্টর? উনার নিজ দায়িত্বে পদত্যাগ করা উচিত।
এবিষয়ে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ সার্কেলের অতিরিক্ত এএসপি এমরানুল হক মারুফ বলেন, প্রতিদিন এভাবে রাস্তা ব্লক করে রাখা দেশের অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর। তাই আমরা আজ শিক্ষার্থীদের বাঁধা দিতে আমরা এখানে এসেছি। শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের ওপর হামলার বিষয়ে তিনি বলেন, বিষয়টি অনাকাঙ্ক্ষিত। এবিষয়ে আমরা পরে ব্যবস্থা নিবো।
কুমিল্লা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) খন্দকার আশফাকুজ্জামান বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে আমরা কথা বলবো বলে এড়িয়ে যান।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের ক্যাজুয়ালিটি বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার ড. রনি বলেন, আমাদের এইখানে সর্বমোট ৯ জন আহত অবস্থায় এসেছে। এর মধ্যে ৭ জনকে অ্যাডমিশন দেওয়া লাগছে এবং ২ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দিচ্ছি। ৭ জনের অবস্থাও অতটা খারাপ নয়, তারাও মোটামুটি ভালো আছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা আমাদের পর্যবেক্ষণে থাকবে।
প্রক্টর ভারপ্রাপ্ত কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, পুলিশের যারা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলবো। এখানে আমার কোন ইন্ধন নেই।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর