ভারত ও সুনামগঞ্জে প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টি হচ্ছে, সেই সাথে ভারত থেকে আবারও ঢলের পানি আসা শুরু করায় সুনামগঞ্জের যাদুকাটা,সুরমা সহ সকল নদ নদীর পানি বাড়ছে। এ কারণে জেলার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নিম্নাঞ্চলের মানুষজনের মধ্যে উৎবেগ আর উৎকণ্ঠায় রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে ২৬০মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ষোলঘর পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমা ১১ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ার জেলার জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা,বিশ্বম্ভরপুরসহ কয়েকটি উপজেলার নিম্নাঞ্চলের আবারও নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে এছাড়াও অনেক জায়গায় জলাবদ্ধতা তৈরী হয়েছে। সুনামগঞ্জ বিশ্বম্ভরপুর তাহিরপুর সড়ক,তাহিরপুর বাদাঘাট সড়কে যানবাহন চলাচল আবারও বন্ধ হয়ে গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সুনামগঞ্জ কার্যালয় থেকে জানা গেছে,ভারতের চেরাপুঞ্জিতে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে,এদিকে সুনামগঞ্জে গত ২৪ ঘণ্টায় ২৬০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। সুনামগঞ্জ পৌরশহরের ষোলঘর পয়েন্টের সুরমা নদীর পানি ১৮ সেন্টিমিটার বেড়েছে। এর পূর্বে ৯ জুলাই থেকে ১০ জুলাই সকাল ৯টা পর্যন্ত সুরমা নদীর পানি বেড়েছে ২২ সেন্টিমিটার। এছাড়াও জুন,জুলাই ও আগস্ট মাসে বর্ষা মৌসুমের কারণে দেশের সব নদীর পানি বৃদ্ধি পায়। ইতিমধ্যে দেশের ১৮টি জেলার নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,গত ১৬ জুন পাহাড়ি ঢল এবং টানা বৃষ্টিপাতে সুনামগঞ্জের ১২টি উপজেলায় বন্যায় সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পানি বন্দি হয়ে পড়ে ছিল ৭ লাখ মানুষ। পরে সব নদ-নদীর পানি কমে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হলেও গত ৩০ জুন থেকে আবারও টানা বর্ষণে জেলায় পানি বেড়ে বন্যার পানিতে তলিয়ে গিয়ে জেলার ৫ টি উপজেলার ৫ লাখ মানুষ আবারও চরম দুর্ভোগে পড়েন আশ্রয় কেন্দ্র। পরে ৯ জুলাই পানি কমে নদীর মাত্র ৪৪কসেন্টিমিটার নিচে নেমেছিলো। কিন্তু দুই দেশে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে আবারও নদ নদীর পানি বেড়েছে।
খরচার হাওরের পাড়ের বাসিন্দা জহির মিয়া জানান,পানি কমায় মন ভাল হয়েছিল এখন আবারও পানি বাড়ছে। গত দু দিন ধরে প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টি হচ্ছে। পানি বাড়লে আমরা বড় বেশি সমস্যায় পড়ে যাই। হাওরের ডেউলে বসত বাড়ি ভাঙা শুরু হয়। আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে হয়।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা দক্ষিণ বাদাঘাট ইউনিয়নের দুর্ঘাপুর গ্রামের বাসিন্দা জামিল আহমেদ জানান,এই সড়কে যানবাহন চলাচল একে বারেই বন্ধ রয়েছে। নৌকা দিয়ে এখন চলাচল করছে। বন্যার পানি কমতে না কমতেই আবারও এই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী ৪টি উপজেলার বাসিন্দা গণ চরম দুর্ভোগে পড়েছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানিয়েছেন,ভারতে ও সুনামগঞ্জে বৃষ্টিপাতের কারণে জেলার নদ-নদীর পানি বেড়েছে। বিশেষ করে ভারতে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে সুনামগঞ্জের নিম্নঞ্চলে আবারও বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর