সুনামগঞ্জের তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর ও জামালগঞ্জ উপজেলার নৌপথে একাধিক স্থানে বেপরোয়া চাঁদাবাজি বন্ধে জন্য ব্যবসায়ীরা দাবী জানালে সুনামগঞ্জ-১ আসনের এমপি অ্যাডভোকেট রনজিত সরকার জেলা পুলিশসহ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে দ্রুত চাঁবাদাবাজী বন্ধের কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করার করেন। এতে করে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে বাধ্য হয় চাঁদাবাজরা। এ নিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন এমপি নিজেই।
খোঁজ নিয়ে জান গেছে,চাঁদাবাজি বন্ধ করায় ব্যবসায়ী ও নৌযান শ্রমিকদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে বালি পাথর ও কয়লা-চুনাপাথর ব্যবসায়ী,নৌ শ্রমিকরা চাঁদাবাজি বন্ধে বার বার পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনকে জানানোর পরও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় এ বছর আন্দোলনে নামেন ভুক্তভোগীরা এবং চাঁদাবাজি বন্ধে এমপির হস্তক্ষেপ কামনা করেন৷
আন্দোলনের খবর পেয়ে সুনামগঞ্জ-১আসনের এমপি ও সিলেট জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রনজিত চন্দ্র সরকার বিষয়টি আমলে নেন এবং ব্যবসায়ীসহ নৌশ্রমিকদের স্বার্থে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। চাঁদাবাজ বিরোধী শক্তিশালী অবস্থানের কারণে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার জাদুকাটা, ঘাগড়া, লাউরেরগড়, ফাজিলপুর ও ফতেপুর ইউনিয়নের রঙ্গিয়ারচর ঘাট, তাহিরপুর উপজেলার পাটলাই নদীর বিআইডব্লিউটিএ ও কোটগাড়ি নৌকা ঘাটগুলোতে অতিরিক্ত টোল ট্যাক্স আদায় বন্ধ করে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হারে টোল আদায় করতে বাধ্য হচ্ছেন ইজারাদার ও উপজেলা প্রশাসন। ফলে একদিকে যেমন ব্যবসায়ী ও নৌ শ্রমিকরা লাভবান হচ্ছে অন্যদিকে সরকারও পাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব।
দুর্লভপুর নৌকা ঘাটের ইজারাদার মোহাম্মদ ওয়াহেদ আলী জানান, চার্ট অনুযায়ী আমার লোকজন টাকা উত্তোলন করছে। এমপি রনজিত চন্দ্র সরকার আমাদের সব ইজারাদারদেরকে ডেকে নির্দেশনা দিয়ে দিয়েছেন চার্টের বাইরে কোন ধরনের টাকা উত্তোলন না করি। আমরাও আমাদের লোকদেরকে বলে দিয়েছি চার্টের অতিরিক্ত কোনো টাকা না তুলতে।
জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. মুশফিকুন নূর জানান,জামালগঞ্জের ফাজিলপুর, দুর্লভপুর ঘাটগুলোতে নিয়ম অনুযায়ী টোল ট্যাক্স আদায় করা হচ্ছে।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা পারভীন জানান,ডাম্পের বাজার,শ্রীপুর,ঘাগড়া, লাউরেরগড় নৌকাঘাট মামলা সংক্রান্ত জটিলতা থাকায় ইজারা দেওয়া সম্ভব হয়নি। এসব ঘাটে সরকারি বিধি বিধান অনুযায়ী প্রশাসনের লোকজন দিয়েই খাস কালেকশন করা হচ্ছে। এখানে কোনো ধরনের সিন্ডিকেট নাই। মামলাগুলো নিষ্পত্তি হওয়ার পর ঘাটগুলো ইজারা দেওয়া হবে।
সুনামগঞ্জ-১ আসনের এমপি অ্যাডভোকেট রনজিত চন্দ্র সরকার জানান,সকল ঘাটের দায়িত্বশীল দের কে আমি বলে দিয়েছি সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হারে টোল ট্যাক্স আদায় করতে হবে। কোন ভাবেই অতিরিক্ত টাকা আদায় সহ্য করা হবে না। প্রতিটি ঘাটে টোল ট্যাক্স আদায়ের চার্ট টানিয়ে রাখতে হবে। আমার নির্বাচনী এলাকায় কোনো ধরনের লুটপাট ও চাঁদাবাজিকে প্রশ্রয় দেয়া হবে না। কেবল নৌ-পথের চাঁদাবাজি নয় সকল ধরনের অনিয়ম রুখতে অচিরেই ৪টি উপজেলা প্রশাসনকে নিয়ে আলোচনায় বসে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, টানা কয়েক বছর তাহিরপুরের পাটলাই নদীর ডাম্পের বাজার ও মন্দিয়াতা এলাকায় টোল ট্যাক্স আদায়ের নামে চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে গেল বছরের ৭ সেপ্টেম্বর অনির্দিষ্টকালের জন্য কয়লা চুনাপাথর বিক্রি এবং পরিবহণ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তাহিরপুরের সীমান্ত এলাকার তিনটি শুল্কস্টেশন বড়ছড়া, চারাগাঁও ও বাগলীর আমদানিকারক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর