
যমুনার নদীর পানি সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে কমতে শুরু করলেও বানভাসি ও ভাঙন কবলিতদের দুর্ভোগ কমছে না। যমুনার পানি এখনো বিপদসীমার ২৫ সে. মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এখনো হাজার হাজার বসতভিটা, দোকানপাট ও তাঁত কারখানা পানির নীচে তলিয়ে রয়েছে। টানা ২০ দিন যাবত বসতভিটা তলিয়ে থাকায় ঘরবাড়ি নস্ট হতে শুরু করেছে। সাড়ে ৬ হাজার হেক্টর ফসলি জমি তলিয়ে থাকার কারণে ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় কৃষকরা চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।
একদিকে কাজকর্ম নেই অন্যদিকে বানভাসিদের পুজি শেষ হওয়ায় আর্থিক সংকট দেখা দিয়েছে। পানিবাহিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বানভাসিরা। গবাদিপশুর খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। রাস্তাঘাট তলিয়ে থাকায় অনেকে ১৫দিন যাবত পানিবন্দি অবস্থায় মানবেতরভাবে জীবনযাপন করছে। অর্ধ শতাধিকের বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। সরকারিভাবে ১০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেয়া হলেও তা বানভাসিদের তুলনায় অপ্রতুল। অনেক বানভাসি ত্রান বঞ্চিত থাকায় তাদের মধ্যে হাহাকার লেগেছে।
অন্যদিকে পানি কমায় যমুনার অরক্ষিত অঞ্চলে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। বন্যা কবলিত ৫টি উপজেলার ৩৪টি ইউনিয়নের বিভিন্ন পয়েন্টে ভাঙন অব্যাহত থাকায় প্রতিদিন ফসলী জমি ও বসতভিটা বিলীন হয়ে মানুষ নি:স্ব হয়ে পড়ছে।
বন্যা কবলিতরা জানান, পানি বাড়ে আর কমে। কিন্তু আমাদের দুর্ভোগ কমে না উলটো আরো বাড়ে। যাদের নৌকা আছে তারা একটু বাইরে হতে পারে। আর যাদের নৌকা নেই তারা ঘরে বন্দী অবস্থায় খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছে। খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি, চলাফেরা ও অসুখসহ নানা ধরনের সমস্যা ভুগতে হচ্ছে। কিন্তু সরকার বা বেসরকারি কোন সহায়তা আমাদের কাছে আসে না। দেখা যায়, যারা শুকনো বসবাস করে তারা সহায়তা পেয়ে থাকে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আক্তারুজ্জামান জানান, জেলার পাঁচটি উপজেলার ৩৪টি ইউনিয়নে ২৩ হাজার ৩০৬টি পরিবারের এক লাখ ৩ হাজার ৫৯৪ জন মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বন্যাদুর্গত এসব মানুষের মধ্যে ইতোমধ্যে ১৩৩ টন চাল, ৫ লাখ টাকা ও ৩০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান জানান, যমুনা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। তবে উজানে ভারী বর্ষণ হচ্ছে। উজানে পানি বাড়লে যমুনাতে পানি বাড়বে। এছাড়াও বন্যায় ভাঙনকবলিত এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর