
প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পাওয়া আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের উপকারভোগীদের দারিদ্র বিমোচন ও পুনর্বাসন কিশোরগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। উপকারভোগীদের উঠানে চলছে এসব প্রশিক্ষণ। তাঁদের স্বাবলম্বী করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে উপজেলা প্রশাসন। ইউএনও এম এম আশিক রেজা ওই সব উপকারভোগীদের উঠানে গিয়ে দারিদ্র বিমোচন, পুনর্বাসন ও স্বাবলম্বী হওয়ার পথ দেখাচ্ছেন। যাতে এক এক জন উপকারভোগী কর্মসংস্থানের মাধ্যমে উন্নয়ন কর্মী হয়ে উঠে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় সূত্র জানায়- সরকারের আবাসন কর্মসূচি আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে ৫শত ৮২ জন গৃহ ও ভূমিহীন মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়েছেন। তাদের প্রত্যেক উপকারভোগীকে ২ শতাংশ জমির উপরে নির্মিত দৃষ্টিনন্দন পাঁকা ঘর এবং ওই জমির দলিল দেয়া হয়েছে।
এসব আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকায় বিদ্যুৎ, রাস্তার ব্যবস্থা করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর ঘর পাওয়া উপকারভোগীদের দারিদ্র বিমোচন, পুনর্বাসন ও স্বাবলম্বী হতে দেয়া হচ্ছে ১০ দিনব্যাপি পেশাভিত্তিক প্রশিক্ষণ। প্রশিক্ষণে শেখানো হচ্ছে কীভাবে বসত বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষ, উচ্চ মূল্যের ফসলের চাষাবাদ প্রযুক্তি, গ্রীষ্ম কালীন সবজি চাষাবাদ পদ্ধতি, মৎস্য চাষ, হাঁসমুরগি পালন, গরু মোটাতাজাকরণ করে স্বাবলম্বী হওয়া যায়।
এছাড়া প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়ন ও পুষ্টি, গর্ভবতী মায়েদের সেবা, যুব সমাজের ভূমিকা ও বেকার কর্মসংস্থানসহ নামজারি, সায়রাত মহাল ব্যবস্থাপনা ও কৃষি জমি বন্দোবস্ত, আই. এম. সি. আই, যৌতুক, বাল্য বিবাহ, আইন-শৃঙ্খলা, সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ ও মাদক এবং সমবায় সমিতি গঠন এবং সদস্য নির্বাচন সংক্রান্ত ধারণা প্রশিক্ষণে দেয়া হচ্ছে। বিভিন্ন বিষয়ের উপরে সংশ্লিষ্ট অফিসারগণ এ প্রশিক্ষণ প্রদান করছে। আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প এলাকায় উপকারভোগীদের ব্যাচওয়ারী এ প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। এছাড়া প্রশিক্ষণে উপকারভোগীদের ছেলে মেয়েদের পড়াশুনার বিষয়ে বাবা মায়েদের উদ্বুদ্ধ করছে।
উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় গৃহ ও ভূমিহীন মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পাওয়া উপকারভোগীদের দারিদ্র বিমোচন ও পুনর্বাসন নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে উপজেলা প্রশাসন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার এম এম আশিক রেজা সশরীরে গিয়ে প্রশিক্ষণ ক্লাস নিচ্ছে এবং তাদের স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখাচ্ছেন। তাদেরকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ব্যবসায় উদ্বুদ্ধ করছে। এছাড়া সামাজিক নিরাপত্তা বেস্টুনির সুযোগ সুবিধার পথ দেখিয়ে দিচ্ছে। এক এক জন উপকারভোগী যাতে দারিদ্র বিমোচন ও পুনর্বাসন পেশাভিত্তিক এ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে স্বাবলম্বী হয়ে উন্নয়ন কর্মী হয়ে উঠে সে লক্ষ্যে উপজেলা প্রশাসন কাজ কওে যাচ্ছে।
প্রশিক্ষণে অংশ নেয়া ময়না, মাজেদা বেগম,সবুজ মিয়া, লাল বাবু, মাহামুদা জানান- আমরা এ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অনেক কিছু জানতে পারছি ও শিখছি। আমরা এখন থেকে আমাদের পতিত জমিতে শাক চাষ করে খেতে পারবো। ঋণ নিয়ে গরু-ছাগল পালন করতে পারবো। এছাড়া সরকারের অন্যান্য সুযোগ সুবিধা সর্ম্পকেও ধারণা হচ্ছে। তারা আরও বলেন আমাদের থাকার জায়গা ছিল না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আমাদেরকে থাকার ঘরসহ জমি দিছে। আমরা তাঁর জন্য সব সময় দোয়া করি। এসব বলার সময় উপকারভোগীদের চোখে মুখে যেন আনন্দ বইছে লক্ষ্য করা যায়।
অন্যদিকে উপজেলা কৃষি বিভাগ হতে ইতোমধ্যে ৫৬ জন উপকারভোগীকে পারিবারিক পুষ্টি বাগানের আওতায় আনা হয়েছে। তাদের বাড়ির আশপাশে শাকসবজি চাষ করে তারা তাদের পুষ্টি যোগাচ্ছে। অন্য উপকারভোগীদেরও পারিবারিক পুষ্টি বাগানের আওতায় আনা হবে বলে উপজেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছে।
এছাড়া আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের অনেককে সামাজিক নিরাপত্তা বেস্টুনির আওতায় আনা হয়েছে। ক্যাটাগরি অনুযায়ী সবাইকে সামাজিক নিরাপত্তা বেস্টুনির আওতায় আনা হবে বলে উপজেলা সমাজসেবা বিভাগ জানান।
উপজেলা সমাজসেবা অফিসার জাকির হোসেন বলেন- আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ঘর পাওয়া গৃহ ও ভূমিহীনদের অনেকেই বিধবা, প্রতিবন্ধী ও বয়স্ক ভাতার আওতায় এসেছে। তালিকা করা হচ্ছে ক্যাটাগরি অনুযায়ী সকলকে সামাজিক নিরাপত্তা বেস্টুনির আওতায় আনার কাজ চলমান রয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার লোকমান আলম জানান- মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পাওয়া আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের উপকারভোগীদের দারিদ্র বিমোচন ও পুনর্বাসন পেশাভিত্তিক প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। সেখানে বসত বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষসহ কৃষি বিষয়ে জ্ঞানও দেয়া হচ্ছে। এদের অনেকের আঙ্গিনায় পারিবারিক পুষ্টি বাগান প্রদশর্ণী দেয়া হয়েছে। তারা তাদের শাকসবজি খেয়ে পুষ্টির চাহিদা মিটাচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার এম এম আশিক রেজা জানান, সরকারের আবাসন কর্মসূচি আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় এ উপজেলায় ৫শত ৮২ জন গৃহ ও ভূমিহীনকে মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর দেয়া হয়েছে। এসকল উপকারভোগীদের ১০ দিনব্যাপি দারিদ্র বিমোচন ও পুনর্বাসনে পেশাভিত্তিক প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। এ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে আশ্রয়ণের উপকারভোগীরা যাতে স্বাবলম্বী হয়ে উঠে। এরা যাতে এক এক জন রোল মডেল হয়ে উন্নয়ন কর্মীতে রূপান্তরিত হয় সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর