
ঢাকার সাভারে চুরির অপবাদ দিয়ে শিশু গৃহকর্মীকে ছুরি দিয়ে খুঁচিয়ে নির্যাতনসহ অমানবিক নির্যাতনের মামলায় গ্রেপ্তার দম্পতিকে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠিয়েছে সাভার মডেল থানা পুলিশ। এদের মধ্যে স্ত্রীর একদিন রিমান্ড মঞ্জুর করে স্বামীকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
রবিবার (১৪ জুলাই) বিকেল ৫ টার দিকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সাভার মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হাসান সিকদার। এর আগে আজ সকালে তাঁদের আদালতে পাঠানো হয়।
আসামিরা হলেন- মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর থানার ঘরিয়ালা কাজীপাড়া গ্রামের লুৎফর রহমানের ছেলে কাজী ইসমাইল হোসেন (৩১) ও তার স্ত্রী একই এলাকার নাজিমুদ্দিন সরকারের মেয়ে মাহমুদা খাতুন পরশ মনি (২৬)। তারা সাভারের সাভারের রাজাশন এলাকায় থেকে প্রায় ১ বছর ধরে শিশু গৃহকর্মী মিমকে ছুরি দিয়ে খুঁচিয়ে নির্যাতনসহ অমানবিক নির্যাতন করেন।
ভুক্তভোগী সাভারের রাজাশন এলাকার আনোয়ার হোসেনের মেয়ে মিম (১০)। আসামি মাহমুদা খাতুন পরশ মনির মায়ের মধ্যস্থতায় মিমকে ১ হাজার টাকা বেতনে গৃহকর্মীর কাজে নেয় আসামিরা।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, কাজী ইসমাইল ও তার স্ত্রী মাহমুদা খাতুন পরশ মনি ভুক্তভোগী শিশুর পরিবারের প্রতিবেশী। এই সুবাদে তারা একে অপরের পরিচিত। প্রায় দেড় বছর আগে আসামি মাহমুদা খাতুন পরশ মনির মায়ের মধ্যস্থতায় মিমকে ১ হাজার টাকা বেতনে কাজে নেয় আসামিরা। কিন্তু গত ১ বছর কাজ করার পরেও ঠিকমতো বেতন প্রদান না করে বছরজুড়ে মিমকে শারীরিক নির্যাতন করেছেন। বেতনের টাকা চাইলে শিশুকে ছুরি দিয়ে খুঁচিয়ে অমানবিক নির্যাতন করেন অভিযুক্তরা। নির্যাতনের বিষয়টি শিশুর পরিবার যাতে না জানতে পারে সে জন্য পরিবারের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করতে বাধ্য করে ওই দম্পতি। গত শুক্রবার ভুক্তভোগী শিশু অসুস্থ হয়ে পড়লে বাবা-মায়ের কাছে হস্তান্তর করে ভয়ভীতি দেখায় তারা। পরে সাভার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স শিশুটিকে ভর্তি করে থানায় মামলা দায়ের করে ভুক্তভোগী পরিবার। এই মামলায় ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আজ সকালে তাদের আদালতে পাঠালে মাহমুদা খাতুন পরশ মনির ১ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। স্বামী কাজী ইসমাইলকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ভুক্তভোগী মিম বলে, আমি ১ বছর ধরে ঐ বাসায় কাজ করছিলাম। ওই বাসায় যাওয়ার পর প্রথম কয়েকদিন আমাকে আদর করেছে। কিন্তু কিছুদিন যাওয়ার পরই আমাকে মারধর করতে থাকে। সর্বশেষ আমাকে চুরির অপবাদ দিয়ে ছোট সরু ছুরি দিয়ে সারা শরীরে খুঁচিয়ে নির্যাতন করেছে। এছাড়া ব্যাট দিয়ে পায়ে ও মাথায় আঘাত করেছে। আমার সারা শরীরে নির্যাতনের দাগ ও জখম রয়েছে।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সাভার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. হাসান সিকদার বলেন, এঘটনায় অভিযোগ দায়েরের পরপরই অভিযুক্তদের আটক করা হয়। পরে ঘটনার প্রাথমিক তদন্তের পর মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী পরিবার। সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে তাঁদের আদালতে পাঠানো হয়। তবে নারী আসামির ১ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করলেও স্বামীকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয় আদালত।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর