• ঢাকা
  • ঢাকা, রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • শেষ আপডেট ৬ ঘন্টা পূর্বে
আব্দুল ওয়াদুদ
বগুড়া প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১৫ জুলাই, ২০২৪, ০৩:২৮ দুপুর
bd24live style=

ভদ্রাবতী নদী যেন এক টুকরো রাতারগুল

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার বুড়ইল ইউনিয়নের মুরাদপুর বাজারে প্রবেশ করতেই চোখে পড়ে ছোট্ট একটি কালভার্ট। কালভার্টে দাঁড়িয়ে দেখা মেলে স্বচ্ছ মিষ্টি নদীর পানি। চারিদিকের পরিবেশ দেখে মনে হয় এ যেন এক টুকরো রাতারগুল। কালভার্ট থেকে নেমে কিছুটা এগিয়ে দেখা মিলল স্বচ্ছ জলে নৌকা বাইতে আসা ভ্রমণ পিপাসুদের একটি দল।

এ মুরাদপুর ভদ্রাবতী নদীর নাম শুনেছেন তারা ইউটিউবে। তারা শুনেছেন নন্দীগ্রামের বুকে এক টুকরো রাতারগুলের নাম। সেখান থেকেই তাদের ইচ্ছে হয় এই ভদ্রাবতী নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে তাই শহর থেকে ছুটে আসেন মুরাদপুর গ্রামে। আরও খানিকটা আগাতেই চোখে মিলবে এই গ্রামের বাসিন্দারা কেউ মাছ ধরছেন আবার কেউ স্বচ্ছ পানিতে ঝুপ করে গোসল করতে নেমেছেন। দুই ধারে গাছপালা তার মাঝ দিয়ে বয়ে চলেছে ভদ্রাবতী নদী।

নদীর দুই ধারের  গাছগুলো বেশ ডালপালা ছড়িয়ে আছে। গাছগাছালির ভেতর দিয়ে নদীতে  ঘুরতে  মনে হচ্ছে এ যেন রাতারগুল। আহ রাতারগুল নন্দীগ্রাম! সুন্দর সবুজ মনোরম পরিবেশে ভদ্রাবতী  নদী যেন সেজেছে তার অলৌকিক রূপে। নৌকার তলায় ঢেউয়ের শব্দে অন্য রকম এক আবহ তৈরি হলো। নীরব প্রকৃতি আর মৃদুমন্দ বাতাসে  এরই মধ্যে নিস্তব্ধতা ভাঙে গাছে বসে থাকা পাখির ডাকে, হঠাৎ ফুড়ুৎ করে উড়াল দেয় একঝাঁক পাখি।

কোলাহলহীন শান্ত-স্নিগ্ধ ভদ্রাবতী ক্ষণে ক্ষণে রূপ বদল করে চলে। এই ভদ্রাবতী নদীর উৎপত্তি নিয়ে কল্প কাহিনিও শোনা যায় এলাকাবাসী মুখে। নন্দীগ্রাম উপজেলা সদর থেকে পূর্ব দিকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে ১নং বুড়ইল ইউনিয়নের মুরাদপুর গ্রামের শেষপ্রান্তে রয়েছে ভদ্রাবতী নদী। বগুড়া জেলার শাজাহানপুর উপজেলার শাবরুল বিল থেকে উৎপত্তি ভদ্রাবতি নদীর। এই নদীর সাথে সিংড়ার চলনবিল ও যমুনা নদীর সংযোগ রয়েছে।

মুরাদপুর গ্রামের খয়বর আলীর সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, দাদার মুখে শুনেছি রাজার শাসন আমলে শাবরুল দিঘীর বুক চিরে ভদ্রানদীর আবির্ভাব ঘটে। সেন বংশের অচ্যিন কুমার নামের শেষ রাজার আমলে তার কন্যা ভদ্রাবতীর নাম অনুসারে নদীর নামকরণ। আগে বর্ষা মৌসুমে ভরা পানিতে নদী থই থই করতো। এখন নদীতে পানি থাকেনা। এলাকার  মানুষ হিসেবে আশরাফুলের দাবি, সরকারি পৃষ্টপোষকতায় ভদ্রাবতী খননের মাধ্যমে নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনা ও একটি সুইচ গেট।

ভদ্রাবতীর সৌন্দর্য দেখতে এসেছেন বগুড়া শহর থেকে শারমিন খাতুন নামের এক ভ্রমণপিপাসু।  শারমিন বলেন ইউটিউবে দেখলাম বগুড়ার রাতারগুল, যেহেতু রাতারগুল সিলেটে অবস্থিত হওয়ার কারণে যাওয়া হয়নি, তাই এলাকার পাশে হওয়ায় দেখতে চলে এলাম। আমার খুব ভালো লেগেছে। ইউটিউবে দেখেছি সিলেটের রাতারগুল, আর এখানে এসে দেখলাম অনেকটাই মিল আছে। এটা আমার কাছে গরিবের রাতারগুল বললে ভুল হবেনা। এখানে এসে একটা সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি সেটি হলো গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা নেই এবং ভালো কোন খাবারের রেস্টুরেন্ট নেই। আবার নৌকায় ওঠার জন্য ভালো ঘাটও নেই। যদি সরকার এইসবের দিকে লক্ষ্য রাখে তাহলে এটি একটি সুন্দর  দর্শনীয় স্থান হবে।

আব্দুল আজিম ও শামিম হোসেন নামের মাঝি বলেন, আমাদের এলাকায় এই ভদ্রাবতী নদী একটি দর্শনীয় স্থানের মত হয়ে গেছে। প্রতিদিন অনেক দূর থেকে লোকজন আসেন এই স্থানটি ভ্রমণ করতে। একটি নৌকার ভাড়া থেকে প্রতিদিন তাদের এক হাজার থেকে ১২’শ টাকা আয় হয়। এটি আমাদের এলাকার জন্য একটি গর্বের বিষয়।

বুড়ইল ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (মেম্বার) জোবায়ের আহমেদ বলেন জ্যৈষ্ঠ, আষাঢ়, শ্রাবণ এই তিন মাস পানি থাকে তারপরে আর পানি থাকে না নদীতে। পানি কম হওয়ার কারণে বাকি সময় নৌকাও চলে না। তিন কিলোমিটার জুরে নদীটির দুই পাশে সবুজ গাছ পালা দিয়ে যে সুন্দর মনোরম  প্রাকৃতিক পরিবেশ তৈরি হয়েছে সেটি দেখতে ছুটে আসছে বিভিন্ন এলাকা থেকে দর্শনার্থীরা। এটি আমাদের এলাকার জন্য গর্ব।

বুড়ইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জয়িাউর রহমান বলনে, বর্ষা মৌসুমে নদীতে পানি এলেই অনেক দর্শনার্থী এখানে বেড়াতে আসেন। এলাকাবাসী ওই জায়গার নাম দিয়েছে রাতারগুল। নৌকায় উঠে দুই পাশে তাকালে সিলেটের রাতারগুলের মতোই মনে হয়। এই উপজেলায় কোনো পর্যটন কেন্দ্র নেই। তাই সরকারিভাবে পদক্ষেপ নিলে এখানে একটি পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা সম্ভব হবে।

নন্দীগ্রাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো হুমায়ুন কবির বলেন, জায়গাটি অনেক সুন্দর। আমি নিজে সেখানে গিয়ে দেখেছি। তবে ভদ্রাবতী নদীতে বেশিদিন পানি থাকে না। তারপরেও ভদ্রাবতী নদীর পাড় সংস্কার করে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে।

মুনতাসির/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com