সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষে বয়ে যাওয়া মালদা নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। এরই মধ্যে উপজেলার মালগাড়া, বগুড়াপাড়া এলাকার ১০ টি বসতভিটাসহ ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। নদীর ভাঙ্গনে বলাইরহাট-লোহাকুচীর একমাত্র সংযোগ সড়কটিও বিলীনের পথে। এতে যানবাহন নিয়ে প্রায় ১৫ কিলোমিটার ঘুরে জেলা, উপজেলা শহরে যেতে হচ্ছে চন্দ্রপুর, গোড়ল, মদাতি ইউনিয়নের অধিকাংশ মানুষের। দায়িত্ব পালনে বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে বিজিবি সদস্যদেরও। আর ভাঙ্গনের ঝুঁকিতে রয়েছে একাধিক মসজিদ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ অন্তত ১০ হাজার পরিবার।
স্থানীয়দের অভিযোগ মালদার ভাঙন রোধে জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টরা পরিদর্শনেই সীমাবদ্ধ থাকছেন। ভাঙ্গনরোধে পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দিলেও এগিয়ে আসেনি কেউ। মালদা ভাঙ্গনের শিকার গোড়ল ইউনিয়নের বগুড়াপাড়ার বাসিন্দা ইসমাল হোসেন(৪৫) বলেন, ৩২ শতাংশ জমিতে বাড়ি ছিল। গত কয়েকবছরের ভাঙ্গনে বাড়ি ও আমার ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। বর্তমানে রাস্তায় রয়েছি। সে রাস্তাটিও এখন ভাঙ্গনের মুখে।
একই এলাকার বাসিন্দা মোক্তার হোসেন(৫৫) বলেন, এবারের বন্যায় বলাইরহাট থেকে লোহা কুচী হয়ে লালমনিরহাট জেলা শহরে যাওয়ার একমাত্র সড়কটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফাটল দেখা দিয়েছে বগুড়াপাড়ার ব্রীজটিতেও। আর গত ৪ দিনে ১০ বাড়ি সড়িয়ে নেওয়া হয়েছে।
পথচারী তহিদুল ইসলাম(৩০) বলেন, মালদা নদী ঘেঁষে থাকা সড়কটি দিয়ে দীর্ঘদিন যাতায়াত করছি। ভাঙ্গনের কারনে এখন আর যাওয়া হচ্ছে না। প্রায় ১৫ কিলোমিটার ঘুরে চলাচল করতে হচ্ছে। এলাকাবাসীরা জানায়, ভাঙন শুরু পর থেকে ইউপি চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কমকর্তারা পরিদর্শন করেছে এবং ভাঙন রোধ করার আশ্বাস দিয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে গোড়ল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বলেন, গত কয়েকবছর ধরে ভাঙন শুরু হয়েছে। এবার তীব্র আকারে ভাঙ্গছে মালদা। গতবছরেও বলাইরহাট-লোহাকুচী সড়কটি নদী থেকে ৫০০ গজ দূরে ছিল। এবারের ভাঙ্গনে সড়কটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হুমকিতে পড়েছে ব্রিজসহ ১০ হাজার বাড়িঘর। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তারা পরিদর্শন করেছে। আশা করি দ্রুতই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জহির ইমাম বলেন, মালদার ভাঙন প্রবন এলাকা পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবগত করা হয়েছে। দ্রুতই ভাঙ্গনরোধে পদক্ষেপ গ্রহণ করার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার রায় বলেন, মালদার ভাঙ্গনের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই কাজ শুরু করা হবে।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর