![BD24LIVE.COM](https://www.bd24live.com/bangla/public/logo-bd24live.png)
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের এক দফা দাবির আন্দোলনে উত্তাল হয়ে উঠেছে দেশ। বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে নিহত হয়েছেন পাঁচজন। আহত হয়েছেন কয়েকশ। মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দুপুর থেকে বিকেলের মধ্যে এসব সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এই অবস্থায় ঢাকা, চট্টগ্রাম, রংপুর, বগুড়া ও রাজশাহীতে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিকে, সোমবার (১৫ জুলাই) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে। এ ঘটনায় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। হামলায় আক্রান্ত শিক্ষার্থীদের ছবি-ভিডিও মুহূর্তের মধ্যেই ঝড় তোলে ইন্টারনেট দুনিয়ায়। ছাত্র-ছাত্রীদের গায়ে হাত তোলায় প্রতিবাদে সরব হন তারকারাও।
শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা প্রসঙ্গে বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ও কুঁড়েঘর ব্যান্ডের ভোকালিস্ট তাসরিফ তার ফেসবুকে মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) একটি স্ট্যাটাসে দিয়েছেন। যেখানে তিনি লিখেছেন, একসময় আমরা ছোট ছিলাম। এলাকার সবাই মিলে সারাদিন একসাথে খেলতাম। সন্ধ্যায় কারেন্ট গেলেও দৌড়ে বের হয়ে যেতাম। কোন একজন খেলার সাথী একবেলা অনুপস্থিত থাকলে আমরা সবাই মিলে বাসায় গিয়ে খোঁজ নিতাম। কেউ কোন অসুবিধায় পড়লে বা অসুস্থ থাকলে খুব মন খারাপ হতো, কস্ট পেতাম। তখন আমরা মানুষ ছিলাম, আমাদের একটা সুন্দর মন ছিল। তখন কোন আন্দোলন, ছাত্রলীগ,ছাত্রদল, পুলিশ বা ক্ষমতা বুঝতাম না।
তিনি আরও লিখেন, তারপর একদিন আমরা বড় হয়ে গেলাম। এতো বড় হয়ে গেলাম যে ধর্মের আগে, দলের আগে , আন্দোলনের আগে, ছাত্রলীগ-ছাত্রদল বা পুলিশের আগে আমরা যে মানুষ সেটাই ভুলে বসলাম। আল্লাহর দোহাই লাগে মানুষ হয়ে মানুষ মারবেন না, হোক সে আন্দোলনকারী, পুলিশ, ছাত্রলীগ বা ছাত্রদল যে ই হোক। সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই।
প্রসঙ্গত, কোটা সংস্কারের দাবিতে টানা দুই সপ্তাহ ধরে আন্দোলন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এরই মধ্যে রোববার (১৪ জুলাই) বিকেলে গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনিরা কোটা পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতিরা কোটা পাবে? তা তো আমরা দিতে পারি না।
প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্য ঘিরে রোববার (১৪ জুলাই) রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেন, ‘তুমি কে, আমি কে; রাজাকার, রাজাকার’, ‘কে বলেছে, কে বলেছে; স্বৈরাচার, স্বৈরাচার।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভের খবর ছড়িয়ে পড়লে বুয়েট, জগন্নাথ, জাহাঙ্গীরনগর, রাজশাহী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়েও রাতে একই স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরতরা। পরে তারা প্রধানমন্ত্রীকে তার বক্তব্য প্রত্যাহারে আলটিমেটামও দেন। এরপর সরকারের মন্ত্রী-এমপি এবং ক্ষমতাসীন দলের নেতারা এ ইস্যুতে বিভিন্ন মন্তব্য করছেন।
এ অবস্থায় সোমবার (১৫ জুলাই) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। দিনভর উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়। উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে তিন শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। আহতদের অনেককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। বেশ কয়েকজনকে ভর্তিও করা হয়।
সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও চট্টগ্রাম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।
বাঁধন/সিইচা/সাএ
সর্বশেষ খবর