পাবনা জেলা আদালতে সরকারি নিয়োগপ্রাপ্ত আইন কর্মকর্তা (জিপি, পিপি) সহ সকল আইন কর্মকর্তার নিয়োগে ডেপুটি স্পীকার অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকুর সুপারিশ করার প্রতিবাদ জানিয়েছেন আওয়ামীলীগ সমর্থিত পাবনা জেলা বারের সম্মিলিত আইনজীবি সমন্বয় পরিষদ।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বিকেল ৩টায় পাবনা জেলা আইনজীবি সমিতির মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এই প্রতিবাদ জানান তারা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, পাবনা জেলা আইনজীবি সমিতির সাধারন সম্পাদক ও জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল আহাদ বাবু।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, দীর্ঘ ১০ বছর ধরে পাবনা জেলা বারের আইনজীবিরা সংগঠিত ও ঐক্যবদ্ধ হয়ে জেলা আইনজীবি সমিতির ১৩টি পদের সবগুলো পদেই নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করে পরিচালনা করছেন। কিন্তু সংসদের ডেপুটি স্পীকার ও পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকুর নগ্ন হস্তক্ষেপে তাদের সেই শৃঙ্খলা ও ঐক্যবদ্ধতা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে যাচ্ছে।
শামসুল হক টুকু পাবনার আইনজীবিদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ও গ্রুপিং সৃষ্টি করতেই পাবনার কোন আইনজীবি নেতৃবৃন্দদের সাথে আলাপ-আলোচনা ছাড়াই জিপি পদে অ্যাডভোকেট আক্তারুজ্জামান মুক্তা এবং পিপি পদে সাবেক তথ্যমন্ত্রী অধ্যাপক আবু সাইয়িদের আত্মীয় অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম পটলকে সুপারিশ করে আইন মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেছেন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, জিপি পদে ডেপুটি স্পীকারের সুপারিশকৃত অ্যাডভোকেট আক্তারুজ্জামান মুক্তার বর্তমান বয়স ৬৭ বছর। তারই সুপারিশে ইতিপূর্বে অ্যাডভোকেট মুক্তা ২০১৪-১৮ সাল পর্যন্ত পিপি ছিলেন। তাকেই আবার ২০২৪-২৮ সালের জন্য জিপি হিসেবে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
আবার পিপি হিসেবে ডেপুটি স্পীকারের প্রস্তাব পাঠানো অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম পটল অধ্যাপক আবু সাইয়িদের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট ছিলেন। এই ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুর বিরুদ্ধে সাক্ষী দিয়েছিলেন অ্যাডভোকেট পটল। সেই মানুষকে কিভাবে তিনি পিপি করতে চান, কি উদ্দেশ্যে তা কারোরই বোধগম্য নয়।
আওয়ামী আইনজীবি সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবি সমন্বয় পরিষদ নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে পাবনা থেকে আইন কর্মকর্তা নিয়োগের জন্য একটি তালিকা আইন মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করলেও ডেপুটি স্পীকারের হস্তক্ষেপের কারণে বাধাগ্রস্ত হয়েছে বলে অভিযোগ করেন আইনজীবি নেতারা।
অবিলম্বে ডেপুটি স্পিকারের সুপারিশকৃত ব্যক্তিদের নিয়োগ বাদ দিয়ে সবার সম্মতিতে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের আইন কর্মকর্তা নিয়োগের আবেদন জানান আইনজীবিরা। তা না হলে ডেপুটি স্পিকারের নিয়োগপ্রাপ্ত জিপি, পিপি সহ সকল কর্মকর্তাদের সাথে পাবনার কোন আইনজীবি কাজ করবেন না বলে হুশিয়ারীও দেন তারা। এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন আইনজীবি নেতৃবৃন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা অ্যাডভোকেট বার সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট দেওয়ান মজনুল হক, সাধারন সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল আহাদ বাবু, অ্যাডভোকেট হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, অ্যাডভোকেট আব্দুস সামাদ খান রতন, অ্যাডভোকেট তৌফিক ইমাম খান, অ্যাডভোকেট খন্দকার আব্দুর রকিবসহ কর্মরত সকল আইনজীবিরা উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে কথা বলতে ডেপুটি স্পিকার ও পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকুর মুঠোফোনে মঙ্গলবার বিকেলে একাধিকবার কল দেওয়া হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এছাড়া ডেপুটি স্পিকারের সুপারিশকৃত জিপি পদের অ্যাডভোকেট আক্তারুজ্জামান মুক্তার সাথে কথা বলার চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর