
কক্সবাজারে কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ ও পুলিশের ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে থাকা ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও অফিস ভাঙচুর করে আন্দোলনকারীরা।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বিকেলে কক্সবাজার শহরের শহীদ সরণী সড়কে দিকে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। অন্যদিকে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল ছোড়া এবং ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে উভয়পক্ষ সরে গেলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
এই ঘটনায় কক্সবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রাজিবুল ইসলাম মুস্তাকসহ আন্দোলনকারী আহত হয়েছে। এতে কয়েকটি মোটরসাইকেলও ভাঙচুর করা হয়।
এর আগে সকাল ১০টা থেকে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের লিংকরোড এলাকায় ভিড় করতে থাকেন কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীরা। এক পর্যায়ে তারা বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে কক্সবাজার সরকারি কলেজের দিকে এগিয়ে গেলে সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বাধা দেন। এক পর্যায়ে কক্সবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রাজিবুল ইসলাম মোস্তাক তার পকেট থেকে ‘সিম্পল সেলফ ডিফেন্স ফোল্ডিং স্টিক’ বের করে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পেটাতে শুরু করেন। এ হামলায় আহত হন কয়েকজন আন্দোলনকারী। এরপর দুই পক্ষের ইট-পাটকেল নিক্ষেপের সময় এক পর্যায়ে ধাওয়া খেয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সরকারি কলেজের গেটের ভেতরে অবস্থান নেয়। পরে তারা গেটের তালা লাগিয়ে ভেতর থেকে ইট ছুঁড়তে থাকে। শিক্ষার্থীরাও এ সময় পালটা ইট ছুঁড়তে থাকে। পরে শিক্ষার্থীরা হল গেটে হামলা চালিয়ে লোহার গেটে ধাক্কা দিতে থাকে। গেটের সামনে থাকা মোটরসাইকেলগুলো এ সময় ভাঙচুর করা হয়। পরে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার বিকেলে আন্দোলনকারীরা লিংকরোড থেকে কক্সবাজার শহরে এসে অবস্থান নেন। পুলিশ তাদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেও তারা সরেননি। এসময় তারা শহরের লালদির্ঘীর পাড়ে অবস্থান নেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী। আন্দোলনকারীরা মিছিল নিয়ে আওয়ামী লীগ অফিসে ভং চুর করে।
আন্দোলনকারী কয়েকজন শিক্ষার্থী দাবি করেন, ঢাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে তারা সড়কে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে নেমেছিলেন। কিন্তু সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রাজিব হেলমেট পরে এসে তাদের মারধর করেন। পুলিশের সামনে তাদের মারধর করা হলেও পুলিশ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে।
কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মঈন উদ্দিন বলেন, আমরা পার্টি অফিসে অবস্থান করছিলাম। হঠাৎ অফিসে ঢুকে আমাদের ওপর হামলা করে এবং অফিস ভাঙচুর করে। এসময় ছাত্রলীগের ৩০ জন নেতাকর্মী আহত হয়।
অন্যদিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী শাকিল আহমদ জানান, ছাত্রলীগ তাদের ওপর প্রথম হামলা চালিয়েছে। তাদের অর্ধশতাধিক আন্দোলনকারী আহত হয়েছে।
তবে অভিযোগের বিষয়ে ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রাজিবুল ইসলাম মোস্তাক দাবি, সরকারি কলেজের নিরাপত্তায় আন্দোলনকারীদের বাধা দিয়েছেন। পরে আন্দোলনকারীরা তার উপর হামলা করে আ.লীগ অফিস ভাঙচুর করেছে।
তবে কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, “কয়েকজন সাধারণ ছাত্রকে সামনে রেখে শিবির ক্যাডাররা কক্সবাজার সরকারি কলেজে পরীক্ষা চলাকালে গাড়ি ভাঙচুর করে। পরে বিকেলে এসে আ.লীগ অফিস ভাঙচুর করে ছাত্রলীগ নেতাদের উপর হামলা করে। এতে সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রাজিবসহ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়। ”
কক্সবাজার সদর থানার ওসি রফিকুজ্জামান বলেন, জেলা জাসদের অফিসসহ আওয়ামী লীগের অফিসে ভাঙচুর করা হয়েছে। দুই দলকে সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর