কেন্দ্রীয় শাটডাউন কর্মসূচির অংশ হিসেবে ৩য় দিনের মত ঠাকুরগাঁওয়ে অবস্থান কর্মসূচি ও শহর অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে কোটা বিরোধী সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা শহরের চৌরাস্তা সহ গুরুত্বপূর্ণ সড়কে শান্তিপূর্ণ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করলেও দুপুরের পর থেকে তা গড়ায় সহিংসতায়। সহিংসতায় পুলিশের ছোড়া রাবার বুলেট ও ছোড়া গুলিতে আহত হয় অন্তত ৩০ জন। এদের মধ্যে আশংকাজনক অবস্থায় ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি হয় সারোয়ার আলম নামের এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থী। সারোয়ার ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার হরিহরপুর সিনিয়র আলিম মাদ্রাসার এইচ.এস.সি ২য় বর্ষের ছাত্র এবং সে হরিহরপুর এলাকার আবদুল্লাহ আল মামুন আলমের ছেলে বলে তথ্য পাওয়া যায়।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে (বড় মাঠ) জড়ো হতে থাকে শহরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। সেখান থেকে তারা শহরের চৌরাস্তা সহ গুরুত্বপূর্ণ সড়ক গুলিতে অবস্থান নেয় এবং জাতীয় সংগীত পরিবেশন করে। শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচিতে ঘণ্টা তিনেকের জন্য অবরুদ্ধ হয়ে পরে পুরো পৌর শহর। এ সময় শিক্ষার্থীদের জাতীয় সংগীত পরিবেশনে অশ্রুসিক্তচোখে জাতীয় পতাকা হাতে অংশ নিয়ে কর্মসূচিতে একাত্মতা ঘোষণা করেন এক মা। তার সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেন অন্যান্য অবিভাবকরাও।
পরে শিক্ষার্থীরা কোটা সংস্কারের স্লোগান ও রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নিহত শিক্ষার্থী আবু সাইদ সহ যে-সব শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে তাদের হত্যাকারীদের বিচারের দাবি জানিয়ে নানা স্লোগান দিয়ে চৌরাস্তা ত্যাগ করে এবং শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থান নেয়। শিক্ষার্থীরা আবারো স্লোগান দিয়ে রূপসি বাংলা পেট্রোল পাম্প এর সামনে পৌঁছালে সেখানে পুলিশি বাঁধায় পড়ে তারা। এসময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছুড়লে পুলিশ টিয়ারশেল রাবার বুলেট ও ছোড়া গুলি ছুড়ে। এতে সারোয়ার নামের ওই মাদ্রাসা শিক্ষার্থী মাথায় চোখের বাম পাশে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয় এবং ছোড়া গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয় অন্তত আরো ৩০ জন। তাদের দ্রুত ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে শিক্ষার্থীরা আবারো রাস্তায় নামে এবং বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বাস স্ট্যান্ড এলাকার পুলিশ বক্স ভাঙচুর ও পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে এবং রাস্তার মাঝের ডিভাইডারের র্যালিং ভেঙ্গে ফেলে রাস্তায় অগ্নিসংযোগ করে। এতে ঠাকুরগাঁও ঢাকা মহাসড়ক সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। বিকেলের পর পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলে আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর