
অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রং চিনি, পুরাতন নষ্ট গুড়, কেমিক্যাল, সোডা দিয়ে বানানো হচ্ছে হাজার হাজার কেজি গুড়। এ গুড় পাংশা শহরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বাজারজাত করে আসছে একটি অসাধু চক্র। দীর্ঘদিন ধরে মানিকগঞ্জের আলমাস নামক এক ব্যক্তি পাংশার বিভিন্ন স্থানে ক্ষণে ক্ষণে স্থান পরিবর্তন করে চালিয়ে আসছে এ কারখানা সমূহ।
সম্প্রতি রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার হাবাসপুর ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী গ্রাম কাচারীপাড়ায় গিয়ে আস্তানা বানিয়েছে এই অসাধু চক্র। সেখানে গিয়ে দেখা মিললন এমন তিনটি কারখানার। অধিক লাভজনক হওয়ায় এ ব্যবসায়ীরা উঠে পড়ে লেগেছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ফ্রেশ গুড় হিসাবে বাজারজাত করে আসছে এ অসাধু চক্রটি।
সরে জমিনে গিয়ে দেখাযায় কাচারীপাড়া গ্রামের সুনামধন্য শিক্ষক রফিক মাস্টারের বাড়ির পাশে ছায়া শীতল বাঁশ বাগানের মধ্যে সে এক এলাহি কারবার, সেখানে মিন্টু নামের এক ব্যক্তি পাশেই কামরুল ইসলাম নামের অপর ব্যক্তি ও একটু দুরে শাহজাহান আলী নামের এক ব্যক্তি আলাদা আলাদা এ ভেজাল গুড়ের কারখানা করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে বহাল তবিয়তে। এ যেন ভেজাল কারখানার নিরাপদ আবাসস্থল।
এ নিয়ে কথা বলার এক পর্যায়ে মানিকগঞ্জের আলমাসের ছেলে ফারুখ হোসেন নিজেকে কারখানার ম্যানেজার পরিচয় দিয়ে বলেন এখানে আমরা সব ম্যানেজ করেই ব্যবসা করি, সব চেনা আছে আমাদের, সব জায়গায় আমরা ম্যানেজ করেছি, আপনারা কিছুই করতে পারবেন না, সাংবাদিকরা আগেও এসেছে কিছু টাকা নিয়ে চলে গেছে ! আমাদের ব্যবসার কোনো সমস্যা হয়নি।
কাচারীপাড়া গ্রামের লোকাল ঠিকাদার মিন্টু বলেন ভাই কিছু মনে না করলে আসেন বসে কথা বলি কিছু ----- লাগলে বলেন সমস্য নেই ব্যবস্থা হবে। আপনারা এখানে কিভাবে কারখানা চালাচ্ছেন পরিবেশের ছাড়পত্র, টেড লাইন্সে এসব কিছু আছে কি! এমন প্রশ্নে তিনি বলেন স্থানীয় ভাবে সব ম্যানেজ করেই চালাচ্ছি তবে কোন কাগজ পত্র দেখাতে পারেনি সে।
খোঁজ নিয়ে যানাগেছে আলমাস প্রথমে কুষ্টিয়া জেলার খোকসা ও কুমার খালী এলাকায় এ ভেজাল গুড়েড় কারখানা করে সেখানে প্রশাসনের ব্যাপক তৎপরতায় ২ বছর আগে পাংশা উপজেলার বাহাদুরপুর এলাকায় আস্তানা করে বাণিজ্য শুরু করে সেখানে টিকতে না পেরে পুনরায় নিরাপদ স্থান মনে করে স্থানীয় কিছু অসাধু লোকদের সহায়তায় হাবাসপুর ইউনিয়নের কাচারীপাড়া গ্রামে এ ভেজাল গুড়েড় ব্যবসা শুরু করে যা স্থানীয় কিছু চাটুকারী ও দালালদের সহায়তায় দিব্বি চালিয়ে যাচ্ছে ভেজাল গুড়ের কারখানা।
স্থানীয় একাধিক লোকের সাথে কথা হলে তারা বলেন আমরা এ এলাকার মানুষ এ গুড় খায় না, কিনিও না এটা সম্পূর্ণ ভেজাল পক্রিয়ায় বানানো হয়, ভারত থেকে এক জাতীয় দলা চিনি কমদামে আনা হয় সেটা পক্রিয়াজাতের মাধ্যমে রং মিশ্রিত বানানো হয় গুড়, পরে সাদা পাউডার দিয়ে কালার করে দেওয়া হয় দেখতে অবিকল গুড়েড় মত দেখালেও তা আসলে ভেজাল গুড়, এখানে দেখি মাঝে মধ্যে কারা যেন আসে আবার চলেও যায়, এখান থেকে ট্রাকের মাধ্যমে হাজার হাজার কেজি গুড় দেশের ভিন্ন স্থানে বাজারজাত করা হচ্ছে। যেন দেখবার কেউ নেই।
দীর্ঘদিন ধরে এমন ভেজাল কারখানা চললেও কখন বাধার সম্মুখীন হয়নি বলেও তারা দাবী করেন, তবে প্রশ্ন হচ্ছে নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক নামক পদে যিনি পাংশা হাসপাতালে কর্মরত তিনি কি কখনো এ বিষয়ে খবর নিয়েছেন নাকি......!
এ ব্যাপারে পাংশা হাসপাতালের চিকিৎসক ডা.মোহাম্মদ দেলোয়ার হুসাইন বলেন- ভেজাল গুড় বা ভেজাল খাদ্যের কারণে মানব দেহে নানা জটিল রোগের সংস্কার থাকে, এমনকি ভেজাল খাবারের কারণে ক্যান্সারের মত মরণ ব্যাধিও হতে পারে। আমাদের সকলের খাদ্য সর্ম্পকে সতর্ক থাকা দরকার।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর