দুই দফা সময় বৃদ্ধির মেয়াদকাল শেষ হওয়ার পরও ঈশ্বরগঞ্জ আঠারবাড়ি রাস্তার কাজ শেষ না হওয়ায় যানবাহন চলাচলসহ এলাকাবাসী পড়েছে চরম দুর্ভোগে। খানাখন্দে রাস্তাটির এখন বেহাল অবস্থা।
ঈশ্বরগঞ্জ সওজ সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালে জুন মাসে ঈশ্বরগঞ্জ হতে আঠারবাড়ি পর্যন্ত ১শ ১৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৫ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ কাজ পান তাহের ব্রাদার্স ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কাজ পাওয়ার পর থেকে করোনা সহ বিভিন্ন প্রতিকূলতার মধ্যদিয়ে ১৩ কিলোমিটার রাস্তার কাজ সম্পন্ন হলেও সোহাগী ইউনিয়নের বগাপুতা এলাকায় ৫শ মিটার ও ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তার কাজ নিয়ে চরম বিপাকে পড়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি।
ঈশ্বরগঞ্জ সওজের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আব্দুস সালাম সরকার গণমাধ্যমকে জানান,এই ২ কিলোমিটার রাস্তার দু’পাশে রয়েছে সরকারি স্থাপনা, পৌরবাসীর বাসাবাড়ি ও জায়গা জমি। এ সব জায়গা জমির অধিগ্রহণ ও মূল্য পরিশোধ না হওয়ায় রাস্তার দু’পাশে জমির মালিকরা রাস্তা নির্মাণ কাজ করতে দিচ্ছে না। ফলে এ দুই কিলোমিটার রাস্তা এখন খানা খন্দে বেহাল অবস্থায় পরিণত হয়েছে।
ঈশ্বরগঞ্জ পরিবহণ শ্রমিক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আলী জানান, সামান্য বৃষ্টি হলেই স্থানে স্থানে হাঁটু পানি জমে। বিশেষ করে ঈশ্বরগঞ্জ হাসপাতাল গেটের সামনে ও খাদ্যগুদাম এলাকার গর্ত গুলো এখন মিনি পুকুরের রূপ ধারণ করেছে। ফলে যানবাহন চলাচল দুষ্কর হয়ে পড়েছে।
ঈশ্বরগঞ্জ হাসপাতাল রোডের বাসিন্দা একেএম হারুন অর রশিদ জানান, সড়ক বিভাগ যতদিন জমি অধিগ্রহণ করে মূল্য পরিশোধ না করবে ততদিন এলাকাবাসী রাস্তা নির্মাণ কাজ করতে দিবে না। এ রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন অগণিত যানবাহন ও পথচারী সহ হাসপাতালে আগত রোগী চলাচল করে থাকে। খানা খন্দের কারণে অহরহ ঘটছে দুর্ঘটনা। গত ৩০জুন সকালে হাসপাতাল গামী এক অন্তঃসত্তা নারীসহ যাত্রী নিয়ে একটি অটো রিকশা উল্টে গিয়ে যাত্রীরা সবাই আহত হন। পরে স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। বিশেষ করে এ রাস্তা দিয়ে স্কুল কলেজ ও মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা সহ হাসপাতালে আগত রোগীরা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে।
ঈশ্বরগঞ্জ সওজ অফিস সূত্রে আরো জানা যায়, এই ২ কিলোমিটার রাস্তার অধিগ্রহণ কাজের সাত ধারার অনুমোদন দিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়। এ দিকে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দ্বিতীয় দফায় ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত নির্মাণ কাজের মেয়াদ বৃদ্ধি করেছিল। রাস্তার প্রাক্কলন তৈরি কাজের আনুষঙ্গিক কার্যক্রম সম্পন্ন করতে গিয়ে এই দুই দফা সময় বৃদ্ধির মেয়াদকাল অতিক্রান্ত হয়েছে।
সওজের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী বিজয় বসাক গণমাধ্যমকে জানান, অসম্পন্ন রাস্তার কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য ২৮জুলাই জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা মুনমুন নাহার আশা ভূমি অধিগ্রহণ কাজের শুনানি কার্যক্রম শুরু করেছেন। ইতোমধ্যে চরনিখলা গ্রামের শুনানি কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। পর্যায়ক্রমে দত্তপাড়া, ধামদী, সৈয়দ ভাকুরি ও বগা পুতা এলাকার শুনানি কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে। জেলা প্রশাসকের এলএ শাখায় চূড়ান্ত প্রাক্কলন তৈরির কাজ চলমান রয়েছে। শুনানি কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ার সাথে সাথেই রাস্তা নির্মাণের কাজ দ্রুত শুরু করা হবে।
এবিষয়ে ময়মনসিংহ-৮ ঈশ্বরগঞ্জ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য মাহমুদ হাসান সুমন এমপি জানান, জন দুর্ভোগ লাঘবের জন্য বিষয়টি জেলা প্রশাসক এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগকে অবহিত করা হয়েছে। আশা করছি রাস্তার কাজটি দ্রুত সম্পন্ন করা হবে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর