• ঢাকা
  • ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • শেষ আপডেট ১২ মিনিট পূর্বে
নিউজ ডেস্ক
বিডি২৪লাইভ, ঢাকা
প্রকাশিত : ৩০ জুলাই, ২০২৪, ০৯:৫৩ রাত
bd24live style=

ভারতে মধ্যরাতের ভূমিধসে ঘুম থেকে চিরঘুমে ১০৬ জন

ছবি: সংগৃহীত

ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কেরালায় কয়েক ঘণ্টার টানা ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট ভূমিধসে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১০৬ জনে পৌঁছেছে। রাজ্যের ওয়ানাড জেলায় পাহাড়ি এলাকার চা বাগানে দফায় দফায় ভূমিধসে প্রাণ হারানো লোকজনের বেশিরভাগই গভীর রাতে ঘুমিয়ে ছিলেন। সোমবার মধ্যরাতের এই ভূমিধসের ঘটনায় আরও শত শত মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন।

মঙ্গলবার ওয়ানাড জেলার কর্তৃপক্ষ বলেছে, প্রায় চার ঘণ্টার ভারী বৃষ্টিপাতের পর গভীর রাতে পাহাড় ধসে চা শ্রমিক ও গ্রামবাসীদের বাড়িঘরে আচমকা কাদা, পানি ও পাথরের স্তূপ আঘাত হানে। রাতে ভূমিধস হওয়ায় ঘুমন্ত অনেক মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। অনেকে টের পাওয়ার আগেই ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছেন।

ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য হিসেবে পরিচিত রাজ্য কেরালায় ভূমিধসে নিহতদের বেশিরভাগই চা বাগানের শ্রমিক এবং তাদের পরিবারের সদস্য। পাহাড়ের কোলঘেঁষা ছোট ছোট বাসা-বাড়িতে কিংবা অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে বসবাস করতেন তারা।

টেলিভিশনে প্রচারিত ভিডিওতে দেখা যায়, উদ্ধারকর্মীরা উপড়ে পড়া গাছ এবং মাটির নিচে চাপা পড়া টিনের ঘরের ওপর থেকে ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে ফেলতে ব্যাপক তৎপরতা চালাচ্ছেন। এ সময় ঘরবাড়ির স্থানে পাহাড় থেকে নেমে আসা বিশাল বিশাল পাথরের খণ্ড আর কর্দমাক্ত পানি প্রবাহিত হতে দেখা যায়। উদ্ধারকারীরা লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য পানির স্রোতের ওপর দিয়ে স্ট্রেচার এবং অন্যান্য সরঞ্জাম বহন করে নিয়ে যান।

রাজ্য কর্তৃপক্ষ বলেছে, একাধিক ভূমিধসের কারণে সেখানে অন্তত ১০৬ জন নিহত ও আরও ১২৮ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া এখনও নিখোঁজ রয়েছেন আরও শত শত মানুষ। স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেল এশিয়ানেট টিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভূমিধসে নিহত বেড়ে ১১৯ জনে দাঁড়িয়েছে।

কেরালার আবহাওয়া অফিস বলছে, উত্তর ও মধ্য কেরালায় ব্যাপক ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। আজ আরও বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবারের এই ভূমিধসের ঘটনা কেরালার ২০১৮ সালের এক বিপর্যয়ের কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। ওই বছর কেরালায় ভয়াবহ বন্যায় অন্তত ৪০০ জনের প্রাণহানি ঘটে।

কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয় সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘‘এখনও মাটির নিচে অনেক মানুষ আটকা রয়েছেন এবং অনেকে ভেসে গেছেন। সম্ভাব্য সব শক্তি ও উপায়ের ব্যবহার করে উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রাখা হবে।’’

তিনি বলেন, ভূমিধস কবলিত এলাকা থেকে ইতোমধ্যে ৩ হাজারের বেশি মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। জেলার ৪৫টি ত্রাণ শিবিরে এসব মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। জীবিতদের সন্ধানে সেনাবাহিনীর সৈন্যসহ শত শত কর্মী ড্রোন ও স্নাইফার ডগ ব্যবহার করছেন।

ভূমিধসে বেঁচে ফেরা বিজয় নামের এক ব্যক্তি বলেন, তিনি মাঝরাতে ঘুম থেকে উঠে মাটি কাঁপতে এবং বৈদ্যুতিক খুঁটি পড়ে যেতে দেখেন। এশিয়ানেটকে তিনি বলেন, পরে কয়েকজন প্রতিবেশি ও আমি কাছাকাছি একটি বাড়িতে ছুটে যাই। সেখানে আমরা সাহায্যের জন্য চিৎকার শুনেছিলাম এবং কয়েকজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাই।

তিনি বলেন, ‘‘আমার বাবা, মা, বোন ও ভাগ্নি বাড়িতে ছিলেন। আমি যখন তাদের দিকে যাচ্ছিলাম তখন প্রচণ্ড শব্দের সাথে সাথে ফের ভূমিধস আঘাত হানে। আমি একটি জানালার দণ্ড আঁকড়ে ধরে রক্ষা পেয়েছি। আমি আমার মা এবং বোনকে কাদার নিচে তলিয়ে যেতে দেখেছি। কিন্তু আমি তাদের জন্য কিছুই করতে পারিনি।’’

• আকস্মিক বৃষ্টি

এক বিবৃতিতে মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয় বলেছে, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার কাছের শহর চুরামালার সাথে সংযুক্তকারী একটি সেতু ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে। সেখানে একটি বিকল্প সেতু নির্মাণে সাহায্য করার জন্য সেনা প্রকৌশলীদের সহায়তা নেওয়া হয়েছে।

কেরালার মুখ্য সচিব ভি ভেনু সাংবাদিকদের বলেন, উদ্ধারকারীদের ছোট একটি দল নদীর ওপরের সেতু পেরিয়ে অন্য প্রান্তে পৌঁছেছে। কিন্তু সহায়তা দেওয়া কিংবা উদ্ধার অভিযান শুরু করার জন্য আমাদের আরও অনেক লোকজনকে সেখানে পাঠাতে হবে।

রাজ্যের সরকারি কর্মকর্তারা বলেছেন, একটি সামরিক হেলিকপ্টার মুন্ডাক্কাইতে অবতরণ করতে সক্ষম হয়েছে। ভূমিধসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলোর একটি এই মুন্ডাক্কাই। সেখানকার পাহাড়ের চূড়ার একটি রিসোর্টে প্রায় ২৫০ জন আটকা পড়েছেন। বৈরী আবহাওয়ার কারণে উদ্ধারকারীরা সেই রিসোর্টে আকাশপথে যেতে পারেননি। তবে সামরিক হেলিকপ্টার উদ্ধার প্রচেষ্টাকে ত্বরান্বিত করবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। স্থানীয় এক কর্মকর্তা বলেছেন, প্রথমে আহতদের সরিয়ে নেওয়া হবে।

এলাকাটি সুপরিচিত পর্যটন গন্তব্য হলেও বৃষ্টির কারণে সোমবার থেকে পর্যটকদের ভ্রমণ বন্ধ ছিল। যে কারণে ভূমিধসে স্থানীয় বাসিন্দারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী বিজয় বলেছেন, ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে ভূমিধস আঘাত হানার আগেই অনেক লোকজনকে ওই এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। এটা প্রাণহানির সংখ্যা কমাতে সহায়তা করেছে।

তিনি বলেন, এই অঞ্চলে ২০৪ মিলিমিটার (৮ ইঞ্চি) বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গত ৪৮ ঘণ্টায় সেখানে ৫৭২ মিলিমিটার (২২.৫ ইঞ্চি) বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। কেরালার এই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘জলবায়ু পরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে... বৃষ্টিপাত ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ কখনও কখনও অপ্রত্যাশিত হয়।’’

আগামী পাঁচ দিনের জন্য রাজ্যজুড়ে আরও ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে জানিয়ে জনগণকে সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

 

শাকিল/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com