
সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রাজ্জাকের বদলির খবরে এলাকায় মিষ্টি বিতরণ করা হয়েছে। বুধবার দুপুরের দিকে ওসি রাজ্জাকের বদলির খবর ছড়িয়ে পড়লে থানা সদরে আনন্দ ও মিষ্টি মুখ করতে দেখা গেছে। সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল বিপিএম (বার), পিপিএম (বার) বদলির তথ্য নিশ্চিত করে জানান, এটা নিয়মিত বদলি। তার পরবর্তী কর্মস্থল টাঙ্গাইলের মহেরা পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার।
জানা যায়, তাঁত শিল্প সমৃদ্ধ এনায়েতপুর থানায় ওসি আব্দুর রাজ্জাক গত বছরের ডিসেম্বর মাসে যোগদান করেন। যোগদান করার পর থেকে একের পর এক বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে আলোচনায় আসেন তিনি। বিশেষ করে জুয়ারিদের সাথে সখ্যতা ও পৃষ্ঠপোষকতা, সেবা প্রত্যাশীদের জিম্মি করে অর্থ আদায় ও দুর্ব্যবহার, টাকার বিনিময়ে মিথ্যা মামলা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সেবা নিতে আসলে জিম্মি করে অর্থ হাতিয়ে নেয়া, অধীনদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণসহ গালমন্দ করা, থানায় নিজের পছন্দ মত একটি গ্রুপ তৈরি করে হয়রানি ও স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের মামলা দিয়ে দমিয়ে রাখা, খারাপ আচরণ সহ নানাবিধ অপকর্মে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ উঠেছে।
চলতি বছরের মার্চ মাসের প্রথমদিকে এনায়েতপুর থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি প্রবীণ রাজনৈতিক আলহাজ্ব আহম্মদ মোস্তফা খান বাচ্চুর বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ ওসি আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে। এসময় তার অপসারণ চেয়ে বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ ও মানববন্ধন করে থানা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
এদিকে গত ২৪ জুলাই এনায়েতপুরে চা দোকানি হতদরিদ্র আল আমিনকে ধরে এনে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলহাজতে প্রেরণের অভিযোগ তুলেছেন শ্বশুর বীরমুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর হোসেন। মোজাফফর জানান, আমরা আওয়ামী পরিবারের সদস্য হয়েও বিএনপির বিস্ফোরণ মামলায় দরিদ্র চা দোকানি আমার মেয়ে জামাই জেল খাটছে। তাই চাঁদাবাজ ওসি রাজ্জাকের বদলির খবরে আমরা আনন্দিত, এজন্য মিষ্টি মুখ করছি। এদিকে তিন সন্তান নিয়ে স্ত্রী তানজিলা খাতুন বিপাকে পড়ে দারে দারে ঘুরছেন।
বিশেষ করে ওসি আব্দুর রাজ্জাকের দ্বিতীয় স্ত্রীর (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) দায়েরকৃত নির্যাতন ও অর্থকেলেঙ্কারীর একটি অভিযোগ তদন্তনাধীন রয়েছে। সেও একজন পুলিশের এএসআই, কর্মরত আছেন নাটরে। অভিযোগ করে তিনি জানান, নারী লেভি ওসি রাজ্জাক সব সময় নিজেকে ক্ষমতাবান মনে করেন। আমাকে মারপিট সহ পুলিশ মিশন ফেরত আমার জমাকৃত ১১ লাখ টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করেছে ওসি রাজ্জাক। এছাড়া আমাকে রেখে আরও ৪-৫টি বিয়ে করেছেন। এসব বিষয়ে আইজিপি ও ডিআইজি স্যার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। সেটি বর্তমানে তদন্তনাধীন আছে। কুকর্মে সেরা ওসি রাজ্জাকের বিভাগীয় তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় শাস্তির দাবি করছি।
এ বিষয়ে বেলকুচি সার্কেলের এএসপি জন রানা জানান, স্বামী-স্ত্রী দুজনই পুলিশ সদস্য হওয়ায় অভিযোগের বিষয়টি সার্ভিসের অভ্যন্তরীন রাখতে চাই। এ নিয়ে কোন মন্তব্য দিতে চাচ্ছি না।
এ সকল বিষয়ে মন্তব্য জানতে এনায়েতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি আব্দুর রাজ্জাকের মুঠো ফোনে (৩১ জুলাই ৫.৫ মিনিটে) কল দিলে তা রিসিভ করেন নি। এ কারণে তার বক্তব্য জানা যায়নি।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর