মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে টানা তিনদিন ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে বান্দরবানে। এতে করে পাহাড়ি ঢলে খালের পানি বৃদ্ধি পেয়ে ঢুকে পড়েছে নিচু এলাকায়। এর প্রভাবে থানচি উপজেলার ৪৮ কিলো এলাকায় পাহাড় ধসে জেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে। পাহাড়ি ঢলে লামা-আলীকদম সড়কের কয়েকটি স্থান ডুবে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
জানা গেছে, টানা বর্ষণে লামা, আলীকদম ও নাইক্ষ্যংছড়ি প্রধান সড়কেও কোমর সমান পানি জমেছে। পাহাড় ধস হয়েছে বিভিন্ন এলাকায়। তবে কোথাও কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। এদিকে পাহাড় ধসে প্রাণহানি ঠেকাতে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের সরে যেতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে।
ভারি বর্ষণ অব্যাহত থাকায় থানচি-বান্দরবান সড়কের ৪৮ কিলো এলাকায় রাস্তার ওপর পাহাড় ধসে পড়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) সকালে থানচি সড়কের জীবন নগর এলাকায় পাহাড়ের বিশাল একটি অংশ সড়কের ওপর ধসে পড়ে। এতে বান্দরবানের সাথে থানচির যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে রাস্তা থেকে ধসে পড়া মাটি অপসারণে কাজ করছে।
বান্দরবান ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক পূর্ণচন্দ্র মুৎসুদ্দি জানান, পাহাড় ধস হওয়ায় সেনাবাহিনীর সহায়তায় তারা কাজ করছেন। দ্রুত সময়ে মাটি অপসারণ করা হলে যোগাযোগ স্বাভাবিক হবে।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান তোফাইল আহমদ জানান, পাহাড়ি ঢল ও নাফ নদীর উপশাখার পানি বৃদ্ধি পেয়ে উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে করে ক্ষতির শিকার হয়েছে অন্তত দুই শতাধিক পরিবার।
এদিকে লামা উপজেলায় পাহাড়ি ঢলে লামা আলীকদম সড়কের কয়েকটি পয়েন্টে পানিতে ডুবে গেছে। এতে করে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এছাড়া লামা পৌরসভার নয়াপাড়া, বাজার পাড়া, হাইস্কুল এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ইতোমধ্যে কয়েকশত পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
গত মঙ্গলবার থেকে বৃষ্টিপাতে পশ্চিমকূল, ক্যাম্প পাড়া, ঘোনার পাড়া, হিন্দু পাড়া, বাজার পাড়া, কোনার পাড়া, মধ্যম পাড়ার মানুষ পানিবন্দি ছিল। এদিকে একই অবস্থা হয়েছে লামা-আলীকদম উপজেলায়। পাহাড়ি ঢল ও মাতামুহুরী নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় দুই উপজেলায় যোগাযোগ বিঘ্নিত হচ্ছে। নিচু এলাকায় ঢুকে পড়েছে পানি। এছাড়া জেলার সাত উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধস ও বড় বড় গাছ রাস্তায় এসে পড়েছে।
বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন জানান, এ ঘটনায় বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তবে থানচি সড়কে পাহাড় ধসে যোগাযোগ আপাতত বন্ধ রয়েছে। এছাড়া নিচু এলাকায় পানি উঠলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে জানান তিনি।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর