
দিনভর শান্ত থাকলেও সন্ধ্যায় রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে কক্সবাজার শহর। এতে এক যুবক নিহত হয়েছেন। রোববার সন্ধ্যা ৭টায় শহরের শহিদ সরণি সড়কে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়।
এতে আন্দোলনকারী যুবক নিহত হয়। আন্দোলনকারীদের একটি দল শহরের দোকানপাট, পুলিশ বক্স ও বিভিন্ন স্থাপনায় ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ চালায়। এ সময় ১০ জন আহত হয়েছে। আহতদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) আশিকুর রহমান বলেন, গুলিবিদ্ধ অজ্ঞাতনামা ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালে আনার আগে তাঁর মৃত্যু হয়। মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যা ছয়টার দিকে আন্দোলনকারীরা শহরের প্রধান সড়কের ঘুমগাছতলার (বন বিভাগের কার্যালয়ের সামনে) পুলিশের একটি চৌকিতে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়ে অগ্নিসংযোগ করেন। এরপর কিশোর-তরুণেরা বিমানবন্দর সড়কে ঢুকে দুই পাশের দোকানপাট ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুর করেন। এ সময় কয়েকটি দোকানে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। এই সড়কে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রাশেদুল হকের বাসভবন। আন্দোলনকারীরা সড়কটির সরকারি মহিলা কলেজ গেট এলাকায় পৌঁছালে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীদের সামনে পড়েন। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। থেমে থেমে অন্তত ৩০ রাউন্ড গুলি ছোড়া হয়।
আন্দোলনকারীরা জানান, আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের ছোড়া গুলিতে ওই তরুণ গুলিবিদ্ধ হন। হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত যুবকের বাড়ি চকরিয়া উপজেলায় দাবি করা হলেও রাত ১০টা পর্যন্ত তাঁর পরিচয় শনাক্ত করতে পারেননি কেউ।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীদের নাম দিয়ে বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাসীরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে তিনিসহ আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করতে এসেছিল। এ নিয়ে গোলাগুলিতে কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। গোলাগুলির সঙ্গে দলের কেউ যুক্ত নন জানিয়ে মুজিবুর রহমান বলেন, সম্ভবত জামায়াত-শিবিরের গুলিতে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, রোববার সকাল থেকে কক্সবাজার শহর শান্ত থাকলেও সন্ধ্যা ছয়টার দিকে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে।
এর আগে বিকেলে শহরের প্রধান সড়কে পৃথক সমাবেশ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগ। শহরের টেকপাড়া কালুর দোকান এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে দুই কিলোমিটার দূরে শহরের লালদীঘির পাড়ে পাবলিক হল মাঠে শান্তি সমাবেশ করে জেলা আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ শেষ হলে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিলটি লালদীঘির পাড় এলাকায় আসে। এ সময় সড়কে পুলিশের কেউ ছিল না।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর