
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের খবর পাবনায় ছড়িয়ে পড়লে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ রাস্তায় নেমে পড়ে উল্লাসে ফেটে পড়েন। শহরের জেবি মোড় থেকে জেলখানা পর্যন্ত মানুষের ঢল নামে।
আনন্দ উল্লাসের মাঝেই উচ্ছ্বসিত জনতা আওয়ামী লীগ অফিসসহ বিভিন্ন অফিস, বাসা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাস কাউন্টার ও গ্যারেজে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।
একই সাথে নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত সেনাবাহিনীর টহল টিমের গাড়িতে চড়ে শহর ঘুরে আনন্দ প্রকাশের পাশাপাশি সেনা সদস্যদের সাথে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ কর্মমদ্দন করেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, দুপুরের পর থেকেই শহরে নানা শ্রেণি পেশার মানুষ প্রবেশ করতে শুরু করে। বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের খবর পাওয়ার পরপরই বিজয় উল্লাস শুরু করে। এসময় খণ্ড খণ্ড বিজয় মিছিল শহরে প্রবেশ করে শহরের গুরুত্বপূর্ণ অলিগলি প্রদক্ষিণ করে। এরই মধ্যে বিক্ষুব্ধ হয়ে বিক্ষুব্ধরা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে প্রবেশ করে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। একইসাথে লক্ষ্মী মিষ্টান্ন ভাণ্ডার ও প্যারাডাইস সুইটসে গিয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে।
পরে মিষ্টি বের করে জনতার মধ্যে বিতরণ করে। প্যারাডাইস সুইটসের মালিক হলেন জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আবু ইসহাক শামীম ও লক্ষ্মীর মালিক নিমাই চন্দ্র ঘোষ।
এরপর বিক্ষুব্ধ জনতা আওয়ামী লীগ নেতা সেলিমের সি লাইন কোচের গ্যারেজ ও কাউন্টারে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। পরে তারা পাবনা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ এর বাসায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নি সংযোগ করে। এরপর জেলা যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক শিবলী সাদিকের বুলবুল কলেজের সামনের অফিসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে তার বাসাতেও হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।
বিক্ষুব্ধ জনতা বলেন, রোববার ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে আওয়ামী লীগ নেতা সাইদ ও যুবলীগ নেতা শিবলী হামলা চালিয়ে বৃষ্টির মতো গুলি করে আমাদের সন্তানদের মেরেছে। কমপক্ষে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। গুলিবিদ্ধসহ শতাধিক আহত হয়েছে। আওয়ামীলীগের সশস্ত্র গুন্ডা বাহিনী শহরেও সমাবেশে হামলা চালিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়েছে।
তারা বলেন, এই সন্ত্রাসীদের কবল থেকে পুরো দেশ তথা পাবনা নতুন করে মুক্ত হলো। আমরা শান্তি প্রিয়। আমরা শান্তি চাই। কোন সন্ত্রাসী গুন্ডাদের জায়গা এটা হতে পারেনা।
এদিকে পাবনা শহরসহ আশপাশ বিভিন্ন স্থানে ও নানা উপজেলাতে বিভিন্ন ধরনের যানবাহনে নানা স্লোগান দিয়ে মহড়া দেয় নানা ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
এদিন দুপুরে ছাত্র জনতার যৌথ বিক্ষোভ মিছিল বের করার কথা ছিল সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ গেট থেকে। এ খবরে সকাল থেকেই আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা কলেজ গেটে অবস্থান নিয়ে দখলে রাখলেও দুপুরের পরপরই তার সেখান থেকে সটকে পড়ে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর