
ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের বিভিন্ন ফান্ডের টাকা শূন্য করে ৪০ থেকে ৫০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিশ্বনাথ রায়ের (পিআরএল ভোগরত) বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ করেছেন আব্দুর রহমান নামে এক অভিভাবক। দুদকে অভিযোগ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঠাকুরগাঁওয়ের উপ-পরিচালক তাহসিন মুনাবীল হক।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিশ্বনাথ রায় ওরফে ভয়ংকর বিশু জানুয়ারি ২০২৪ এর মাঝামাঝি হতে এপ্রিল ২০২৪ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। এই সময়ে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন ফান্ড হতে ৪০ হতে ৫০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি। এই টাকা রংপুরে নির্মাণাধীন বাড়ীতে খরচ করেছেন। বিদ্যালয়ের সবগুলো ফান্ড এখন প্রায় শূন্য।
বিদ্যালয়ের মাস্টাররোলের কর্মচারী ও মসজিদের ইমাম-মোয়াজ্জেনের বেতন দিতে পারছেন না বর্তমান প্রধান শিক্ষক। এছাড়াও সততা প্রেস,বুক সেন্টার,মানিক ডেকোরেটর সহ আরো অনেক দোকানদারের বিদ্যালয়ের নিকট পাওনা আছে। বিদ্যালয়টির চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী জুয়েল ইসলামের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের সব টাকা উত্তোলন করেন তিনি।
খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, পৌরশহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সততা প্রিন্টিং প্রেস,তাতীপাড়ায় বুক সেন্টার ও চৌরাস্তায় অবস্থিত ডেকোরেশনের দোকানে বিদ্যালয়ের নামে কয়েক লাখ টাকা বকেয়া রয়েছে।
বিদ্যালয়টির বর্তমান প্রধান শিক্ষক মতাহার উল আলম বলেন, তিনি ফান্ডের টাকা থেকে কাজ করার কথা বলেছেন। তবে আমাকে ভাউচার জমা দেননি। আমি যখন চার্জ বুঝে পায় তখন বিভিন্ন ফান্ডে প্রায় ৮ লাখ টাকা পেয়েছি। ফান্ডে টাকা কম থাকায় মাস্টার রোলে কর্মচারীদের বেতন দেয়া সম্ভব হচ্ছেনা। আর বিদ্যালয়ের কেনাকাটার অনেক বকেয়া রয়েছে বিভিন্ন দোকানে। আমি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি ফান্ডিং বাড়ানোর জন্য।
অভিযুক্ত সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিশ্বনাথ রায়ের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ অভিযোগটি সত্য না। আমি বিদ্যালয়ের অনেক গুলো কাজ করেছি। বিদ্যালয়ের সুজন মিয়া এসব বিষয়ে সবকিছু অবগত রয়েছেন। তাকে জিজ্ঞাসা করলে জানতে পারবেন।
দুদকের জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক তাহসিন মুনাবীল হক বলেন, আমরা অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগটি হেড অফিসে পাঠানো হয়েছে। দ্রæত সময়ের মধ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
বিদ্যালয়টির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মাহবুবর রহমান বলেন, আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে আমাদের কাছে প্রতিষ্ঠানের কোন ফাইল আসেনা। সে কারণে এ বিষয়ে জানার বা বলার কোনো সুযোগ নেই।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা রংপুর অ লের উপ-পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমাদের কেউ জানাননি বা অভিযোগ করেননি। শুনেছি তিনি অবসরে চলে গেছেন। তবে অভিযোগের সত্যতা পেলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর