• ঢাকা
  • ঢাকা, রবিবার, ০২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ৫ ঘন্টা পূর্বে
ফরিদুল ইসলাম রঞ্জু
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১১ আগস্ট, ২০২৪, ০৩:৩২ দুপুর
bd24live style=

পীরগঞ্জে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কর্মচারী নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার সাটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগে প্রধান শিক্ষকের ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেও অজ্ঞাত কারণে কোন প্রতিকার না পাওয়ায় অভিযোগকারী ও স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। 

জানা যায়, ঐ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুক ক্ষমতার অপব্যবহার করে গোপনে ল্যাব অ্যাসিস্টেন্ট, অফিস সহায়ক, আয়া ও পরিচ্ছন্ন কর্মী নিয়োগের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেন। নিয়োগের নীতিমালায় জাতীয় বহুল প্রচারিত পত্রিকা ও স্থানীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নীতিমালা থাকলেও তিনি জেলার সরকারি ডিএফপি তালিকাভুক্ত পত্রিকা থাকলেও তা উপেক্ষা করে শুধু ব্যক্তি স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে পার্শ্ববর্তী জেলার অপ্রচলিত সার্কুলেশন বিহীন পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে উক্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করিয়ে গোপন রেখেছেন। তার কাছে এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণসহ একাধিক ব্যক্তি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির বিষয়ে জানতে চাইলেও তিনি তা সেসময় অস্বীকার করেছেন। পরবর্তীতে দেখা যায় গত ২৫/১২/২০২৩ ইং তারিখে বাংলাদেশ সহ সারা বিশ্বের ছুটি থাকলেও (বড়দিন উপলক্ষ্যে) ওই দিন গোপনে প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুক নিয়োগ বোর্ডের সকলকে ম্যানেজ করে নিয়োগ পরীক্ষা সমাপ্ত করেন এবং মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগ দেন। 

প্রধান শিক্ষক এলাকার প্রচলিত পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিলে স্থানীয় যোগ্য প্রার্থীরা নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে পারতো, কিন্তু সার্কুলার সম্পর্কে জানতে না পারায় অনেক যোগ্য প্রার্থী আবেদন করতে পারেনি বলে জানায় স্থানীয়রা। এদিকে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে চারটি পদে জনবল নেওয়ার কথা উল্লেখ থাকলেও ল্যাব অ্যাসিস্টেন্ট পদে কোন জনবল নিতে পারেননি প্রধান শিক্ষক। পরবর্তীতে জানা যায়, ওই বিদ্যালয়ে ল্যাব’ই নেই-তাই এটা কার্যকর করা সম্ভব হয়নি। 

সম্প্রতি সরেজমিনে পীরগঞ্জ উপজেলার সাটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে গেলে চোখে পড়ে বিদ্যালয়ের জরাজীর্ণ অবস্থা। শিক্ষার পরিবেশ নেই বললেই চলে, শ্রেণিকক্ষের জানালা-দরজা ভাঙ্গা-চোরা। প্রয়োজনীয় অবকাঠামো না থাকায় দেখে মনে হবে যেন শিক্ষক আর কর্মচারী নিয়োগই ছিল যেন প্রতিষ্ঠানটির মূল উদ্দেশ্য। 

স্কুলের জমিদাতা পরিবারের সদস্য আব্দুল কুদ্দুস আক্ষেপ করে জানান, স্কুলের প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুক কৌশলে তার খালাতো ভাই জেলা পরিষদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমানকে সভাপতি করে একাই মোটা অঙ্কের বিনিময়ে স্কুলের নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা কেউই জানেন না কিভাবে রাতারাতি তিনজন নিয়োগ পেলো? ইতিপূর্বে প্রধান শিক্ষক জাল সার্টিফিকেটের মাধ্যমে তার স্ত্রী ময়রুমা খাতুনকে কম্পিউটার শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ায় তার বর্তমানে তার বেতন বন্ধ রয়েছে বলেও জানান তিনি।

তহিদুল ইসলাম নামে ওই বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক অভিযোগ করে জানান, প্রধান শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্য করতে এবং বিদ্যালয়ের সকল কাজে একক কর্তৃত্ব খাটাতে সুকৌশলে তার খালাতো ভাইকে সভাপতি, স্ত্রী, মামাতো ভাই, নিজের বোনসহ তার অনুসারী ব্যক্তিদেরকে সদস্য করে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটি গঠন করেন। সম্প্রতি তিনি অনিয়ম করে নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে তিনজন কর্মচারী নিয়োগ দিয়েছেন-যা নিয়োগ পাওয়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত আমরা স্থানীয়রা কেউ জানতাম না, হঠাৎ করে দেখি তিনজন ব্যক্তি বিদ্যালয়ে কাজ করছেন। আমরা এই অবৈধ নিয়োগ বাতিল করে যোগ্যতার ভিত্তিতে জনবল নিয়োগের দাবি জানাই।

সাটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের পিয়ন খায়রুল ইসলাম এ প্রতিনিধিকে জানান, শুনেছি বিদ্যালয়ে ৩জনকে নতুন নিয়োগ দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক, আবার শুনতেছি ৪জন। আসলে কতজন নিয়োগ পেয়েছে তা আমি জানিনা, শুধু দেখি নতুন করে তিনজন হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করছে। বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এফাজউদ্দিন জানান, বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আমি এই বিদ্যালয়ে আছি। ২০০২ সালেও প্রধান শিক্ষক গোপনে তার স্ত্রীসহ কয়েকজনকে নিয়োগ দিয়েছিলেন, এবারও স্কুলের কাউকে না জানিয়ে একা একাই গোপনে বিদ্যালয়ে ৩জন কর্মচারীকে নিয়োগ দেন-এসবের আমরা কিছুই জানিনা। বিদ্যালয়টি অনিয়ম আর দুর্নীতির আখাড়ায় পরিণত করেছেন তিনি। 

এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিস, উপজেলা নির্বাহী অফিস, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, দুর্নীতি দমন কমিশন সহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েও কোন লাভ হচ্ছে না। অদৃশ্য ইশারায় অভিযোগের বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়া হয়েছে-আমরা এর সুষ্ঠু সমাধানসহ অবৈধ নিয়োগ বাতিল ও প্রধান শিক্ষকের বিচারের দাবি জানাই। 

অবৈধ নিয়োগের বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: ওমর ফারুকের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। সকল নিয়মকানুন মেনে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়েছে। 

এ ব্যাপারে পীরগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ আরিফুল্লাহ জানান, নিয়োগ বিধি মেনেই নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে তিনজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তবে প্রধান শিক্ষক ল্যাব এ্যাসিস্টেন্টে পদেও নিয়োগ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলেন, কিন্তু ল্যাবরেটরী না থাকায় আমরা ওই পদে কোন জনবল নিয়োগ দেইনি। 

নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয়ে জানতে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও জেলা পরিষদ সদস্য মো: মোস্তাফিজুর রহমানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ওটা আসলে মাধ্যমিকের নিয়োগ বিধি মোতাবেক হয়েছে, অনিয়মের বিষয়ে তেমন কিছু জানা নেই। একদিন আসেন প্রধান শিক্ষক সহ একসাথে বসে আপনার সকল প্রশ্নের উত্তর দেওয়া যাবে। 

এদিকে অতি সত্বর এ নিয়োগ বাতিলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয় বাসিন্দা সহ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অভিভাবকরা।

মুনতাসির/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com